প্রকাশ : রবিবার, ৯ অক্টোবর , ২০২২, ০২:৪০:২১ পিএম
শনিবার স্থানীয় সময় সন্ধ্যা ছয়টায় সংবাদ বুলেটিন চলাকালীন ইরানের রাষ্ট্রীয় টেলিভিশন চ্যানেলের স্ক্রিনে একটি মুখোশ পরা মুখ ভেসে ওঠে। এরপরই দেখা যায় ইরানের সর্বোচ্চ ধর্মীয় নেতা আয়াতুল্লাহ খোমেনির মুখ, আর তার চারদিকে জ্বলছে আগুনের শিখা। এসময় টেলিভিশন স্ক্রিনে পুলিশ হেফাজতে নিহত মাহসা আমিনি এবং বিক্ষোভে নিহত আরও তিন নারীর চেহারাও ভেসে উঠে। গত ১৬ সেপ্টেম্বর পুলিশি হেফাজতে কুর্দি তরুণী মাশা আমিনির মৃত্যুর পর ইরানজুড়ে ছড়িয়ে পড়া বিক্ষোভে নিরাপত্তা বাহিনীর গুলিতে দেড় শতাধিক মানুষ নিহত হওয়ার পর এই ঘটনা ঘটলো।টেলিভিশনে দেখানো এসব ছবির ক্যাপশনে লেখা ছিল ‘আমাদের সাথে যোগ দাও ও জেগে ওঠো’ এবং ‘তোমাদের থাবা থেকে ঝরছে আমাদের তরুণদের রক্ত’। এর কয়েক সেকেন্ড পরই এসব ছবি অদৃশ্য হয়ে যায়।ইরানে সর্বময় ক্ষমতার অধিকারী আয়াতুল্লাহ খোমেনির বিরুদ্ধে এ ধরনের প্রকাশ্য বিদ্রোহ প্রদর্শন খুবই বিরল ঘটনা। তবে মাশা আমিনির মৃত্যুর পর সে চিত্র বদলাতে শুরু করেছে।পরে জানা যায় চলমান আন্দোলনের অংশ হিসেবে সম্প্রচার চলাকালীন হ্যাকিংয়ের শিকার হয়েছে দেশটির রাষ্ট্রীয় টেলিভিশন চ্যানেল। গতকাল শনিবার (৮ অক্টোবর) সন্ধ্যায় এ ঘটনা ঘটে। হ্যাকার দলটি নিজেদেরকে ‘আদালত আলি’ বলে পরিচয় দেয়। আজ রবিবার বিবিসির এক প্রতিবেদনে এই খবর দেওয়া হয়েছে। এদিকে, শনিবার প্রেসিডেন্ট ইব্রাহিম রাইসি তেহরানের একটি বিশ্ববিদ্যালয়ে গেলে তার বিরুদ্ধে স্লোগান দেন নারী শিক্ষার্থীরা। এর আগে সকালে সানান্দাজ শহরে গুলিবিদ্ধ হয়ে দুইজনের মৃত্যু হয় বলে জানা গেছে। গত ১৬ সেপ্টেম্বর মাহসা আমিনির মৃত্যুর পর ছড়িয়ে পড়া বিক্ষোভে ইরানে এখন পর্যন্ত ১৫০ জনের বেশি মানুষের মৃত্যু হয়েছে বলে দাবি করেছে বিভিন্ন মানবাধিকার সংস্থা। নারীর পোশাকের স্বাধীনতার দাবিতে চলমান এই আন্দোলন আজ ২৪ তম দিনে গড়িয়েছে। তীব্র দমন পীড়নের মুখেও আন্দোলন থামার কোনো লক্ষণ দেখা যাচ্ছে না। ইরানে হয়তো ইসলামি শাসনের অবসান ঘটতে পারে এবার।