শিরোনাম |
❒ আটক লিখনের স্বীকারোক্তি
চড়া সুদের টাকা দিতে না পারায় গালিগালাজ করেছিলেন হত্যার শিকার মহাসিন। সেই রাগে অফিসের মধ্যেই তাকে ইলেক্ট্রিক তার দিয়ে প্রথমে শ্বাসরোধে হত্যা করে প্রতিবেশী মেহেদী হাসান লিখন। এরপর মরদেহ ভরা হয় একটি বাক্সে। সেই বাক্সভর্তি মরদেহ নুরপুর থেকে প্রথমে ইজিবাইকে ও পরে ভ্যানে নিয়ে যাওয়া হয় ফতেপুরের মান্দিয়া গ্রামে। যাওয়ার পথে তেলপাম্প থেকে কেনা হয় ডিজেল। সেই ডিজেল ঢেলে পুড়িয়ে দেয়া হয় মহাসিনের মরদেহ।
ডিবির জালে আটকের পর এসব কথা জানিয়েছেন নুরপুরের মহাসিনের হত্যাকারী হিসেবে আটক একই এলাকার মৃত আকবর হোসেনের ছেলে মেহেদী হাসান লিখন। শনিবার রাতে তাকে আটকের পর উদ্ধার করা হয়েছে হত্যায় ব্যবহৃত বাক্স, মহাসিনের মোবাইল ফোন ও জুতা। এ ঘটনায় কোতোয়ালি থানায় মামলা করেছেন মহাসিনের ভাই কোরবান আলী।
ডিবির ওসি রুপন কুমার সরকার জানান, আটক লিখন ওই এলাকায় ঈগল হাই ফোর্স অ্যান্ড লজিস্টিক সার্ভিস লিমিটেড নামে একটি কোম্পানি পরিচালনা করেন। এ ব্যবসার কাজে সুদে মহাসিনের কাছ থেকে সাত লাখ টাকা নিয়েছিলেন। প্রতি সপ্তাহে তাকে দিতে হতো ৩০ হাজার টাকা লাভ।
লিখন আরও জানান, গত বৃহস্পতিবার রাতে লিখনের সুদের সেই টাকা দেয়ার কথা ছিলো মহাসিনকে। বিকেলে ওই টাকা নিতে অফিসে যান মহাসিন। কিন্তু টাকা দিতে না পারায় মহাসিন তাকে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করেন। এতে তিনি ক্ষিপ্ত হয়ে যান। এক পর্যায়ে অফিসে থাকা কম্পিউটারের ক্যাবল দিয়ে শ^াসরোধে মহাসিনকে হত্যা করেন। পরে মরদেহ নিয়ে যান ফতেপুরের আদর্শপাড়া মসজিদের পাশে। পরে সুযোগ বুঝে মহাসিনের শরীরে ডিজেল ঢেলে আগুন জ¦ালিয়ে চলে আসেন।
ডিবি আরও জানায়, বিভিন্ন স্থানের সিসি ক্যামেরার ফুটেজ তারা সংগ্রহ করেন। এরপর মহাসিনের মোবাইল ফোনের লোকেশন শনাক্ত করে ফোন উদ্ধার করে লিখনের কাছ থেকে। লিখনকে আটকের পর জিজ্ঞাসাবাদে ধীরে ধীরে তিনি সব স্বীকার করেন।
যেখানে মহাসিনকে হত্যা করা হয়েছিলো রোববার সকালে ডিবির এসআই শামীম হোসেন ও এসআই খান মাইদুল ইসলাম লিখনকে নিয়ে নুরপুরে তার সেই অফিসে যান। নিজ মুখে তার বর্ণনা দেন লিখন। এসময় এলাকাবাসী লিখনের ফাঁসির দাবিতে সেøাগান দিতে থাকেন। অন্যদিকে, মহাসিনের পরিবারের সদস্যরা কান্নায় ভেঙে পড়েন। পরে লিখনকে নিয়ে যাওয়া হয় ফতেপুরের মান্দিয়া গ্রামে। সেখানে যেয়ে তিনি বর্ণনা দেন কিভাবে মহাসিনকে পুড়িয়ে দিয়েছিলেন তাও। যে বাক্সে মরদেহ নিয়ে যাওয়া হয়েছিলো সে বাক্সটিও পালবাড়ি এলাকা থেকে উদ্ধার করে ডিবির এ টিম।
রোববার লিখনকে আদালতে সোপর্দ করা হলে তিনি হত্যার বিষয়টি স্বীকার করে জবানবন্দি দেন। আদালত জবানবন্দি গ্রহণ শেষে তাকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন।