শিরোনাম |
❒ ঘটনা পরিকল্পিত দাবি, লাশ নিয়ে এলাকায় মিছিল
যশোরে চোর সন্দেহে গণপিটুনী দিয়ে ফয়েজুল গাজী নামে এক যুবককে হত্যা করেছে স্থানীয় সংঘবদ্ধরা। তিনি যশোর সদর উপজেলার গোলদারপাড়া সুতীঘাটা গ্রামের জালাল উদ্দিন গাজীর ছেলে। ১১ ফেব্রুয়ারি সকাল ১০টার দিকে রাজারহাট রামনগরের সুতীঘাটা এলাকায় তাকে পিটিয়ে হত্যা করা হয়। পরে কোতোয়ালি থানা পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে ঘটনায় জড়িত ৫ জনকে আটক করেছে।
এদিকে ফয়জুল চোর নয় পরিকল্পিতভবে তকে হত্যা করা হয়েছে বলে দাবি তার বাবা জালাল উদ্দিনের। হত্যার প্রতিবাদে রামনগর এলাকার রাস্তায় ব্যারিকেড দিয়ে লাশ নিয়ে মিছিল করেছেন এলাকাবাসী। এছাড়া যে ওয়ার্কসপ থেকে চুরি হয়েছে বলে আখ্যা দেয়া হয়েছে, ওই ওয়ার্কসপে হামলা চালিয়েছে বিক্ষুব্ধ লোকজন।
থানা ও স্থানীয় সূত্র জানিয়েছে, ১১ ফ্রেব্রুয়ারি ভোরে চোর সন্দেহ করে কানাইতলার আব্দুল ওয়ার্কসপ এলাকায় সুতীঘাটা এলাকায় ফয়জুল গাজীকে বেদম মারপিট করে ওয়ার্কসপ মালিক ও তার লোকজন। ‘পিটিয়ে নিথর দেহ ফেলে রেখেছে’ স্থানীয়দের এমন খবরে কোতোয়ালি থানা পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে তাকে উদ্ধার করে যশোর ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে যায়। এসময় কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন। মারপিট করে ফয়জুলকে হত্যার ঘটনায় জড়িতদের শনাক্ত করতে পুলিশ সিসিটিভি ফুটেজ সংগ্রহ করে। এরপর আটক করে ৫ জনকে। এরা হচ্ছে এলাকার নুর ইসলাম শেখের ছেলে ওয়ার্কসপ মালিক আব্দুল্লাহ শেখ, তার ছেলে আমির হোসেন, শান্ত, একই এলাকার এনামুল ও অভয়নগরের বরনী গ্রামের জয়নাল আবেদীনের ছেলে সাব্বির হোসেন মোল্লা। তাদের বিরুদ্ধে মামলার প্রস্তুতি চলছে।
স্থানীয় অপর একটি সূত্র জানিয়েছে, ফয়জুল গাজী একটি ইটভাটায় কাজ করেন। ভাটা থেকে কাজ শেষ করে বাড়ি ফেরার পথে ওই ওয়ার্কসপ এলাকায় বসে প্রসাব করছিলেন। এসময় চোর সন্দেহ করে তাকে ধরে নিয়ে কারখানার মধ্যে দড়ি দিয়ে বেঁধে হাতুড়ি ও লোহার রড দিয়ে মারধর করে।
নিহত ফয়জুলের বাবা জামাল উদ্দিন জানিয়েছেন, তার ছেলে সুতীঘাটা ভৈরব ইট ভাটার কর্মচারী। ১০ ফেব্রুয়ারি রাতে সে বন্ধুদের সাথে ঘুরতে যাচ্ছে বলে বাড়ি থেকে বের হয়। পরে রাত ১০ টার দিকে তাদের কাছে খবর আসে সুতীঘাটা বাজারে আব্দুল্লাহ নামে এক ব্যক্তির ইঞ্জিনিয়ারিং ওয়ার্কসপে তার ছেলে চুরি করতে যেয়ে ধরা পড়েছে। পরে তিনি ঘটনাস্থলে যেয়ে দেখতে পান তার ছেলেকে বেধে আব্দুল্লাহ ও তার দু’ছেলে নির্যাতন করছে। এ সময় তারা তাকে অপমান করে ঘটনাস্থল থেকে তাড়িয়ে দেয়। আর ১১ ফেব্রুয়ারি সকাল সাড়ে ১০ স্থানীয়রা ফয়জুলকে উদ্ধার করে যশোর হাসপাতালে ভর্তি করে। সেখানে ভর্তির ১৫ মিনিট পর তার মৃত্যু হয়।
এ ব্যাপারে কোতোয়ালি থানার অফিসার ইনচার্জ আব্দুর রাজ্জাক জানিয়েছেন, গণপিটুনীতে এক ব্যক্তি নিহত হয়েছেন। চোর সন্দেহে তাকে স্থানীয় জনতা মারধর করেছে বলে প্রাথমিক তথ্য আসে। পরে ঘটনায় জড়িত তথ্যে ৫ জনকে পুলিশ হেফাজতে আনা হয়েছে। এ ব্যাপারে আইনি ব্যবস্থা নেয়ার প্রস্তুতি চলছে।