যশোরের অভয়নগরে মুরাদ হোসেন (২৭) নামের একজন যুবলীগ নেতাকে কুপিয়ে হত্যা করেছে দুর্বৃত্তরা। রোববার রাত ১০টার দিকে উপজেলার নওয়াপাড়া গ্রামের মধ্য তরফদারপাড়ায় স্বপ্ন ভিলার সামনে এ ঘটনা ঘটে। নিহত মুরাদ হোসেন ওই এলাকার সাহাবুল ইসলামের ছেলে ও নওয়াপাড়া পৌরসভার চার নম্বর ওয়ার্ড যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক ছিলেন।
এ ঘটনাকে কেন্দ্র করে রোববার মধ্যরাতে নওয়াপাড়া পৌরসভার চার নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর শেখ আব্দুস সালামের অস্থায়ী কার্যালয় ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটেছে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে এলাকায় অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। সোমবার মুরাদ হোসেনের মরদেহ নিয়ে যুবলীগ নেতাকর্মীরা নওয়াপাড়ায় বিক্ষোভ মিছিল করে খুনিদের আটক ও শাস্তি দাবি করেছেন।
নিহতের বাবা সাহাবুল ইসলাম বলেন, মুরাদ নওয়াপাড়া বাজার থেকে রাত ১০টার দিকে বাড়ি ফিরছিলেন। বাড়ির কাছাকাছি স্বপ্ন ভিলার সামনে পৌঁছালে পূর্ব থেকে ওৎ পেতে থাকা একদল সন্ত্রাসী তাকে এলোপাতাড়ি কুপিয়ে পালিয়ে যায়। পরে এলাকাবাসীর সহযোগিতায় গুরুতর আহত মুরাদকে প্রথমে অভয়নগর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেয়া হয়। পরে তার শারীরিক অবস্থার অবনতি হলে কর্তব্যরত চিকিৎসক উন্নত চিকিৎসার জন্য খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে স্থানান্তর করেন। হাসপাতালে পৌঁছালে চিকিৎসকরা তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
তিনি আরও বলেন, ‘পূর্ব শত্রুতার জের ধরে আমার ছেলেকে হত্যা করা হয়েছে। খুনিদের আইনের আওতায় এনে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দিতে হবে।’ তিনি প্রশ্ন করেন, ‘কী অপরাধ করেছিল আমার ছেলে, যে তাকে নির্মমভাবে কুপিয়ে হত্যা করা হয়েছে।’
অভয়নগর উপজেলা যুবলীগের আহ্বায়ক তালিম হোসেন জানান, মুরাদ নওয়াপাড়া পৌরসভার চার নম্বর ওয়ার্ড যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক ছিলেন। অপরদিকে যুবলীগ নেতা হত্যাকান্ডে সোমবার বিকেলে নওয়াপাড়া পৌর যুবলীগের আয়োজনে নওয়াপাড়ায় বিক্ষোভ মিছিল ও প্রতিবাদ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়েছে। এসময় খুনিদের ধরে আইনের আওতায় আনতে ২৪ ঘণ্টার আল্টিমেটাম দেয়া হয়েছে। বিক্ষোভ সমাবেশ চলাকালে মরদেহবাহী অ্যাম্বুলেন্স অভয়নগর উপজেলা আওয়ামী লীগের কার্যালয়ের সামনে এসে পৌঁছালে বিক্ষুব্ধ নেতাকর্মীরা মরদেহ নিয়ে মিছিল করে নওয়াপাড়া বাজার প্রদক্ষিণ করে নুরবাগ এলাকায় যায়। এসময় পৌর যুবলীগের যুগ্ম আহ্বায়ক বিল্লাল আহম্মেদ বাবুর সভাপতিত্বে ও যুগ্ম আহ্বায়ক জাকির হোসেনের সঞ্চালনায় বক্তৃতা করেন উপজেলা যুবলীগের যুগ্ম আহ্বায়ক প্রসেনজিৎ দাস সনজিত, উপজেলা ছাত্রলীগের যুগ্ম আহ্বায়ক অ্যাডভোকেট রওশন কবির টুটুল, আহাদুর রহমান মামুন, যুবলীগ নেতা শেখ ওলিয়ার রহমান, শেখ সম্রাট, ছাত্রলীগ নেতা শেখ আব্দুল্লাহ, তরুণলীগের সভাপতি বিল্লাল হোসেন বকুল এবং আব্দুল্লাহ বিশ্বাস।
নওয়াপাড়া পৌরসভার চার নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর শেখ আব্দুস সালামের অস্থায়ী কার্যালয় ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগের বিষয় জানতে তার সঙ্গে বারবার যোগাযোগ করা হলে তার ফোন বন্ধ পাওয়া যায়।
সোমবার দুপুরে অভয়নগর থানার ওসি এসএম আকিকুল ইসলাম বলেন, ওয়ার্ড যুবলীগ নেতা মুরাদ হোসেন হত্যার সঙ্গে জড়িত কয়েকজনের নাম পরিচয় পাওয়া গেছে। তাদের আটক করতে পুলিশি অভিযান অব্যাহত রয়েছে। নিহতের পরিবার থেকে এখনো কোনো মামলা করা হয়নি। তবে পুলিশের একাধিক টিম কাজ শুরু করেছে। দ্রুত সময়ের মধ্যে হত্যাকান্ডের রহস্য উদঘাটন করা হবে।