gramerkagoj
শুক্রবার ● ২৯ মার্চ ২০২৪ ১৫ চৈত্র ১৪৩০
gramerkagoj

❒ ৩২ মামলার আসামি রমজান হত্যাকান্ড

মোস্টওয়ান্টেড পিচ্চি রাজাসহ হত্যা মিশনের ৫ জন আটক
প্রকাশ : সোমবার, ১১ মার্চ , ২০২৪, ১০:০৫:০০ পিএম , আপডেট : শুক্রবার, ২৯ মার্চ , ২০২৪, ০৩:১৯:৩৬ পিএম
বিশেষ প্রতিনিধি:
GK_2024-03-11_65ef2c61e0f65.jpg

যশোরের রেলগেটের আলোচিত মাদক কারবারী ৩২ মামলার আসামি রমজান শেখ (৩০) হত্যাকান্ডের ঘটনায় মোস্টওয়ান্টেড পিচ্চি রাজাসহ হত্যা মিশনের ৫ জনকে আটক করেছেন র‌্যাব ৬ যশোরের সদস্যরা। ১১ মার্চ দিনের বিভিন্ন সময় ৩টি অভিযানে একে একে ওই ৫ দুর্বৃত্তকে আটক করা হয়েছে। তাদের কাছ থেকে ৩টি চাইনিজ কুড়াল, দুটি আগ্নেয়াস্ত্র, দা, চাকু গুলি উদ্ধার হয়েছে। অন্য আসামিদের আটকে অভিযান চলমান রয়েছে।
গত ৮ মার্চ রাত সাড়ে ৯টায় এলাকার বাবুর দোকানের সামনে ১০/১২ জনের একটি দুবৃত্ত দল কুপিয়ে হত্যা করে রমজানকে। ঘটনার রাত থেকেই হত্যা ঘটনায় কে বা কারা জড়িত খোঁজখবর নেয়া শুরু করে পুলিশ। আর নিহত রমজানের পরিবারের লোকজনের দাবি করে, এলাকার পিচ্চি রাজা ও তার সহযোগিরা এ হত্যাকান্ড ঘটিয়েছে। তারা দ্রুত পিচ্চি রাজাসহ খুনীদের আটক ও কঠোর শাস্তি দাবি করেন। এদিকে হত্যাকান্ডের ঘটনায় ৯ মার্চ সন্ধ্যায় এলাকার চিহ্নিত ১৩ জনকে অভিযুক্ত করে মামলা দেন নিহত রমজানের মা রেখা বেগম।
আসামি করা হয় রেলগেট কলাবাগান পাড়ার রাজা ওরফে পিচ্চি রাজা (২৫), তুহিন (২৮), চোরমারা দীঘিরপাড় এলাকার কুদরত (৩০), সাগর (২৬), শাওন ওরফে পটকে শাওন (২২), খড়কী এলাকার ইবাদুল (২৫), রেলগেট পশ্চিমপাড়ার দেলোয়ার হোসেন (২৪), শুকুর আলী (২৮), রায়পাড়া তুলাতলা এলাকার বাবু ওরফে পলিথিন বাবু (৩৫), রেলগেট পশ্চিমপাড়ার ইয়াছিন (২৬), চাঁচড়া ডালমিল এলাকার পায়েল (২২), বেজপাড়া টিবি ক্লিনিক এলাকার সুমন ওরফে ট্যাটু সুমন (২৮) ও আশ্রম রোড মহিলা মাদ্রাসার পাশের মেহেদী (৩০)।
মামলার পর ছায়া তদন্তে মাঠে নামে র‌্যাব ৬ যশোরের কয়েকটি চৌকস টিম। ১১ মার্চ যশোরের শংকরপুর, বাঘারপাড়া ও শার্শা এলাকা থেকে রমজান হত্যাকান্ডের প্রধান আসামি দুর্র্ধর্ষ সন্ত্রাসী পিচ্চি রাজাসহ ৫ জনকে আটক করা হয়েছে দেশি বিদেশি অস্ত্রসহ। আটককৃত অন্যরা হচ্ছে শাওন ওরফে পটকা শাওন (২২) ইবাদুল (২৫), সুমন ওরফে ট্যাটু সুমন ও তুহিন (২৮)।
অভিযানের ব্যাপারে র‌্যাব জানিয়েছে, ১১ মার্চ ভোর রাতে চাঞ্চল্যকর রমজান আলী হত্যা মামলার আসামি শাওন ওরফে পটকে শাওন (২২) ও ইবাদুলকে (২৫) শংকরপুর ইসমাইল কলোনী এলাকা থেকে আটক করা হয়। তাদের তথ্যে একইদিন ভোর রাতে শংকরপুর এলাকায় অভিযান পরিচালনা করে ট্যাটু সুমনকে আটক করা হয়েছে।
তার তথ্যে ভোর ৫ টায় বাঘারপাড়ার চাড়াভিটা এলাকায় অভিযান পরিচালনা করে রমজান হত্যা মামলার অন্যতম আসামি তুহিনকে আটক করা হয়।
আটককৃত ওই ৪ জনের তথ্যে ১১ মার্চ বিকেল ৩ টায় শার্শার দাদখালী এলাকায় অভিযান পরিচালনা করে প্রধান আসামি ও দুর্র্ধর্ষ সন্ত্রাসী রাজা ওরফে পিচ্চি রাজাকে আটক করা হয়েছে। আসামিদের জিজ্ঞাসাবাদে তাদের স্বীকারোক্তি ও দেখানো স্থান থেকে রেলগেট চোরমারা দীঘির পাড় এলাকায় অভিযান পরিচালনা করে ম্যাগাজিনসহ ১ টি বিদেশি পিস্তল, ১ টি ওয়ান শুটারগান, ৪ রাউন্ড গুলি, ১ টি টিপ চাকু, ৩ টি চাইনিজ কুড়াল, ১ টি চাকু ও ১ টি দা উদ্ধার করা হয়েছে।
যে কারণে রমজান খুন
র‌্যাবের জিজ্ঞাসাবাদে রমজান হত্যাকান্ড কি কারণে সে তথ্য মিলেছে। আটককৃত ৫ জন ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে জানায়, মামলার প্রধান এজাহারনামীয় আসামি পিচ্চি রাজা যশোর শহরের বিভিন্ন এলাকায় বিভিন্ন অপকর্ম করে আসছিল এবং তাকে সেল্টার দিত নিহত রমজান আলী। রমজান আলী ও পিচ্চি রাজা একসাথে মাদক ব্যবসা পরিচালনা করত। কিন্তু তাদের মধ্যে এলাকায় মাদক ব্যবসা, চাঁদাবাজিসহ এলাকায় আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে সম্প্রতি বিরোধ তৈরি হয়। কয়েক মাস আগে মাদক কেনাবেচা নিয়ে তাদের মধ্যে ঝামেলা হয়। তারা একসাথে চলাফেরা করলেও রমজানের প্রতি পিচ্চি রাজার ক্ষোভ ছিল। ঝামেলা হওয়ার কিছুদিন পর আইনশৃংখলা বাহিনীর হাতে পিচ্চি রাজার স্ত্রী ইয়াবাসহ আটক হয়। এই আটকে রমজানের হাত আছে বলে আসামি পিচ্চি রাজা সন্দেহ করে। এছাড়াও বেশ কয়েকদিন থেকে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী পিচ্চি রাজাকে আটকের জন্য চেষ্টা চালাচ্ছিল। পিচ্চি রাজাকে আটকে রমজান আাইশৃংখলা বাহিনীকে সহায়তা করতে পারে ভেবে পিচ্চি রাজা রমজানের উপর প্রতিশোধ নিতে সুযোগের অপেক্ষায় ছিল।

আরও খবর

🔝