gramerkagoj
শুক্রবার ● ২৯ মার্চ ২০২৪ ১৫ চৈত্র ১৪৩০
gramerkagoj
সহযোগী ১২ কারবারীকে খোঁজা হচ্ছে কাদের দখলে রমজানের অস্ত্র-মাদক?
প্রকাশ : বুধবার, ১৩ মার্চ , ২০২৪, ১১:৩০:০০ পিএম , আপডেট : শুক্রবার, ২৯ মার্চ , ২০২৪, ০৩:১৯:৩৬ পিএম
কাগজ সংবাদ:
default.png

আলোচিত মাদক কারবারী রেলগেটের রমজান শেখ (৩০) খুনের ঘটনায় আটক পিচ্চি রাজা ও তার সহযোগীদের কাছ থেকে দেশি বিদেশি অস্ত্র ও গুলি উদ্ধারের পর এলাকায় জোরেসোরে আলোচনা হচ্ছে, ৩২ মামলার আসামি নিহত রমজানের দখলে থাকা অস্ত্রগুলো কোথায়। এছাড়া তার অবিক্রিত মাদকের চালানগুলোই বা এখন কাদের দখলে। এনিয়েও নানামুখি বক্তব্য আসছে।
স্থানীয়রা বলছেন রমজানকে সেল্টার দিয়ে চলা তার এক মামার দখলে রমজানের কয়েকটি অস্ত্র ও তার সাগরেদদের কাছে মাদকের বড় ৩টি চালান রয়েছে। এসব বিষয় সামনে এনে পুলিশি অভিযান দাবি করেছেন স্থানীয় লোকজন।
গত ৮ মার্চ রাত সাড়ে ৯টায় এলাকার বাবুর দোকানের সামনে ১০/১২ জনের একটি দুর্বৃত্ত দল কুপিয়ে হত্যা করে রমজানকে। ঘটনার রাত থেকেই হত্যার ঘটনায় কে বা কারা জড়িত খোঁজখবর নেয়া শুরু করে পুলিশ। আর নিহত রমজানের পরিবারের লোকজনের দাবি, এলাকার পিচ্চি রাজা ও তার সহযোগীরা এ হত্যাকান্ড ঘটিয়েছে। তারা দ্রুত পিচ্চি রাজাসহ খুনীদের আটক ও কঠোর শাস্তি দাবি করেন। হত্যাকান্ডের ঘটনায় ৯ মার্চ সন্ধ্যায় এলাকার চিহ্নিত ১৩ জনকে অভিযুক্ত করে মামলা দেন নিহত রমজানের মা রেখা বেগম।
আসামি করা হয় রেলগেট কলাবাগান পাড়ার রাজা ওরফে পিচ্চি রাজা (২৫), তুহিন (২৮), চোরমারা দীঘিরপাড় এলাকার কুদরত (৩০), সাগর (২৬), শাওন ওরফে পটকে শাওন (২২), খড়কী এলাকার ইবাদুল (২৫), রেলগেট পশ্চিমপাড়ার দেলোয়ার হোসেন (২৪), শুকুর আলী (২৮), রায়পাড়া তুলাতলা এলাকার বাবু (৩৫), রেলগেট পশ্চিমপাড়ার ইয়াছিন (২৬), চাঁচড়া ডালমিল এলাকার পায়েল (২২), বেজপাড়া টিবি ক্লিনিক এলাকার সুমন ওরফে ট্যাটু সুমন (২৮) ও আশ্রম রোড মহিলা মাদ্রাসার পাশের মেহেদী (৩০)।
মামলার পর ছায়া তদন্তে নেমে র‌্যাব ৬ যশোরের কয়েকটি চৌকস টিম ১১ মার্চ যশোরের শংকরপুর, বাঘারপাড়া ও শার্শা এলাকা থেকে রমজান হত্যাকান্ডের প্রধান আসামি দুর্র্ধর্ষ সন্ত্রাসী পিচ্চি রাজাসহ ৫ জনকে আটক করে। তাদের কাছ থেকে দেশি বিদেশি ৯টি অস্ত্র উদ্ধার করে র‌্যাব।
পিচ্চি রাজা ৯টি অস্ত্রসহ আটক হওয়ার পর থেকে রেলগেট এলাকায় জোরেসোরে আলোচনা হচ্ছে, নিহত হওয়ার আগের দিন পর্যন্ত গত এক বছর রেলগেট এলাকার মাদক কারবারে একচ্ছত্র আধিপত্য তৈরি করে রমজান শেখ। প্রতিদিনই তার বড় বড় মাদকের চালান চট্টগ্রাম থেকে ইয়াবা ও ছুটিপুরের চৌগাছা থেকে ফেনসিডিলসহ কয়েকটি সীমান্ত দিয়ে আসতো অন্যান্য মাদক। প্রতিদিন কয়েক লাখ টাকার মাদক হাত বদল হত তার। আর এই ব্যবসা করার জন্য ১২/১৩ জনের একটি দুর্বৃত্ত চক্র ও ১২ জনের মাদক ব্যবসায়ী সরব ছিল তার নেতৃত্বে। আর এর জন্য কিছু আগ্নেয়াস্ত্রও ছিল রমজানের। রমজানের চাচা পরিচয়ে রাজনৈতিক বলয়ে চলা শিকদার তাকে সেল্টার দিয়ে আসছিল। শিকদারের বিরুদ্ধেও সাবেক ওয়ার্ড কাউন্সিলর আনিসুর রহমান মুকুলের গাড়ি চালক কামাল হত্যা, আওয়ামী লীগ নেতা তপু হত্যা চেষ্টা মামলাসহ অন্তত দেড়ডজন মামলা রয়েছে। নিহত হওয়ার পর এলাকায় প্রচার হচ্ছে রমজানের দখলে থাকা অস্ত্রগুলো ওই চাচার দখলে চলে গেছে এখন। ওই চাচাসহ রমজানের কয়েক সহযোগীকে আইনের আওতায় আনা হলে ওই বিশাল অস্ত্র ভান্ডারের খোঁজ মিলবে।
এদিকে নিহত হওয়ার ঘটনায় রমজানের মাদকের একটি ইয়াবার বড় চালান ও একটি ফেনসিডিলের চালান রেলগেট এলাকায় আসে। তার তিনটি চালান অবিক্রিত ছিল। ওই চালান তিনটি এখন কাদের দখলে এ নিয়েও নানা তথ্য আসছে। স্থানীয় সূত্রের দাবি, তার সাথে ব্যবসা করা কয়েকজনের কাছেই আছে ওই মাদকগুলো।
সূত্রের দাবি, বছর দেড়েক আগে এলাকার তুহিন, তরিকুল, সাইদুলসহ কয়েক ব্যবসায়ীকে পুলিশ লাগিয়ে রেলগেটের মাদক ব্যবসা একাই নিয়ন্ত্রণ করছিল রমজান। তার সাথে সহযোগিতায় ছিল রেলস্টেশন পাড়ার কুরবান, জোসনার ছেলে রকি, রমজানের ছোট ভাই সবুজ, একই এলাকার জুয়েল, রুবেল, মুন্না পিচ্চি বাবুসহ ১২ জন। এক সময় অন্য এলাকা থেকে মাল এনে ব্যবসা করলেও সম্প্রতি রজমানের মাল কিনে ব্যবসা করতে বাধ্য হয় এলাকার ব্যবসায়ী মনোয়ারা খাতুন খালা, হাসিনা বেগম, জোসনা বেগমসহ অনেকে। হত্যাকান্ডের আগে এদের কয়েকজনকে রমজান থ্রেটও করে। রমজানের মাদক ব্যবসায়ী সহযোগীদের কাছেই এই ৩টি মাদকের চালান আছে বলেও তথ্য মিলেছে। স্থানীয়রা পিচ্চি রাজার পলাতক সহযোগী ও নিহত রমজানের সহযোগীদের ডেরায় অভিযান দাবি করেছেন।
এ ব্যাপারে যশোর কোতোয়ালি থানার অফিসার ইনচার্জ আব্দুর রাজ্জাক জানিয়েছেন, মাদকের বিরুদ্ধে জিরো টলারেন্স ভূমিকায় রয়েছে পুলিশ। হত্যাকন্ডে জড়িত খুনী চক্রকেও যেমন আটকে অভিযান চলছে, তেমনি অস্ত্র ও মাদক কারবারীদের আটকের আওতায় আনা হচ্ছে। রেলগেট এলাকায় মাদক বিরোধী অভিযান জোরদার করা হয়েছে।

 

আরও খবর

🔝