gramerkagoj
শনিবার ● ২৭ এপ্রিল ২০২৪ ১৪ বৈশাখ ১৪৩১
gramerkagoj
রুহুল কুদ্দুস কাজলের মুক্তির দাবীতে মানববন্ধন
প্রকাশ : সোমবার, ১৮ মার্চ , ২০২৪, ০২:৪১:০০ পিএম , আপডেট : শনিবার, ২৭ এপ্রিল , ২০২৪, ১১:০৫:২৪ এ এম
কাগজ ডেস্ক:
GK_2024-03-18_65f7efaebf882.jpg

সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির নির্বাচনে ভোট গণনাকে কেন্দ্র করে মারামারির ঘটনায় করা মামলায় গ্রেফতার হয়ে কারাগারে থাকা ব্যারিস্টার রুহুল কুদ্দুস কাজলসহ অন্য আইনজীবীদের মুক্তি দাবীতে মানববন্ধন হয়েছে।
সোমবার (১৮ মার্চ) সকালে সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির ভবনের সামনের চত্বরে তার সমর্থনে আইনজীবীদের এই মানববন্ধন হয়। যেখানে সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবীরা সমিতির সাবেক সম্পাদক ব্যারিস্টার রুহুল কুদ্দুস কাজল সহ এই মামলায় গ্রেফতার অন্য আইনজীবীদের মুক্তি চান।
সাধারণ আইনজীবীদের ব্যানারে কালো মাস্ক পরে অংশ নিয়ে কাজলসহ অন্যান্যদের মামলা প্রত্যাহারের দাবিতে মানববন্ধন করেছে। বক্তারা অবিলম্বে ব্যারিস্টার কাজলের মুক্তি দাবি ও তার বিরুদ্ধে দায়ের করা মামলা প্রত্যাহারের দাবি জানান।
সমিতির নির্বাচনকালীন ঘটনায় দায়েরকৃত মামলায় সাবেক সম্পাদক, বার কাউন্সিলের নির্বাচিত সদস্য, সিনিয়র আইনজীবী ব্যারিস্টার রুহুল কুদ্দুস কাজলকে গ্রেফতার ও হাতকড়া পরানোর প্রতিবাদে এবং তিনিসহ গ্রেফতারকৃত আইনজীবীদের নিঃশর্ত মুক্তির দাবিতে এ কর্মসূচি।
অ্যাডভোকেট মো. আসাদ উদ্দিনের সঞ্চালনায় মানববন্ধনে বক্তব্য রাখেন সিনিয়র আইনজীবী মহসিন রশিদ, অ্যাডভোকেট মো. ইউনুস আলী আকন্দ, সাবেক সহ- সম্পাদক অ্যাডভোকেট শামীমা দীপ্তি, ব্যারিস্টার তৌফিক ইমাম, অ্যাডভোকেট মামুন চৌধুরী, সাবেক সহ:সম্পাদক অ্যাডভোকেট মাহবুবুর রহমান খান, সাবেক নির্বাচিত সদস্য অ্যাডভোকেট কাজী আখতার হোসেন ও ব্যারিস্টার মাহদীন চৌধুরী, অ্যাডভোকেট শফিকুল ইসলাম, অ্যাডভোকেট মেহবুব হোসেন ও ব্যারিস্টার আশরাফ রহমান প্রমুখ।
এছাড়া মানববন্ধনে উপস্থিত ছিলেন অ্যডভোকেট ফয়সাল সিদ্দিকী, অ্যাডভোকেট আব্দুল্লাহ আল হাদী, অ্যাডভোকেট রবিউল আহমেদ, অ্যাডভোকেট জাকির খান কাকন, অ্যাডভোকেট আল রেজা মোঃ আমির, অ্যাডভোকেট আসিফ ইমরান জিসান, অ্যাডভোকেট মোস্তাফিজুর রহমান শাকিল, অ্যাডভোকেট শিমন ওয়াহেদ, অ্যাডভোকেট কামরুল হাসান রিগ্যানসহ শতাধিক আইনজীবী।
বক্তারা বলেন, যে ঘটনায় ব্যারিস্টার রুহুল কুদ্দুস কাজলকে গ্রেফতার করা হয়েছে সে ঘটনার ভিডিও ফুটেজ থেকে এটা প্রমাণিত যে, ঘটনার সাথে তার ন্যূনতম সম্পর্কও ছিল না। বিনা অপরাধে শুধু গ্রেফতার করেই ক্ষান্ত হয়নি বরং ৪ দিনের রিমান্ডেও নেওয়া হয়েছে। দুর্ভাগ্যজনকভাবে তাকে হাতকড়াও পরানো হয়েছে। যা আইন ও সংবিধান পরিপন্থি। আইনজীবী হিসাবে এটি আমাদের জন্য অত্যন্ত লজ্জার।
সিনিয়র আইনজীবী মহসিন রশিদ বলেন, আমি জানি কাজল সাহেব সেখানে ছিলেন না। রুল হচ্ছে বেইল। রুল জেইল না, রুল রিমান্ড না। তখনই বেইল রিফিউজ করা যায় যখন আসামি পালিয়ে যাওয়ার আশংকা থাকে। আজকে জজ কোর্টে জামিন শুনানি হচ্ছে। যদি আইনজীবীদেরকে জামিন না দেওয়া হয়, তাহলে আমরা ধরে নেব যে, দেশে আইনের শাসন নেই, ইনসাফ নেই। মানববন্ধনে কাগজে প্রিন্টকৃত হাতকড়া ছিঁড়ে রুহুল কুদ্দুস কাজলকে হাতকড়া পরানোর প্রতীকি প্রতিবাদ জানানো হয়।
গত ৬ ও ৭ মার্চ সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির দুই দিনব্যাপী নির্বাচনে সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণ ভোট গ্রহণের পর ফলাফল ঘোষণা নিয়ে অনাকাঙ্ক্ষিত দৃশ্যপট তৈরি হয়। ৭ মার্চ রাতেই ভোট গণনার পক্ষে সোচ্চার হন সম্পাদক প্রার্থী নাহিদ সুলতানা যুথী। তবে আওয়ামী লীগ সমর্থিত সম্পাদক প্রার্থী শাহ মনজুরুল হক ৮ মার্চ বেলা ৩ টায় ‘দিনের আলোতে’ ভোট গণনা চাচ্ছিলেন। এ বিষয় নিয়েই একপর্যায়ে দুপক্ষের সমর্থকদের মাঝে হট্টগোল থেকে মারামারির ঘটনা ঘটে। সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির অডিটোরিয়ামে সহকারী অ্যাটর্নি জেনারেল সাইফুর রহমান চৌধুরী সাইফের ওপর আক্রমণে অনেকেই বহিরাগত ছিলেন বলে অভিযোগ করা হয়।
একপর্যায়ে ঢাকা মেডিকেলে ভর্তি সহকারী অ্যাটর্নি জেনারেল সাইফুর রহমান চৌধুরী সাইফ তাকে হত্যাচেষ্টার অভিযোগে শাহবাগ থানায় মামলা করেন। সে মামলায় এবারের নির্বাচনের স্বতন্ত্র সম্পাদক প্রার্থী অ্যাডভোকেট নাহিদ সুলতানা যুথি ও বিএনপির প্যানেলের সম্পাদক প্রার্থী ব্যারিস্টার রুহুল কুদ্দুস কাজলসহ ২০ জনকে আসামি করা হয়।
পরবর্তীতে এই মামলার দুই নম্বর আসামি সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির সাবেক সম্পাদক ব্যারিস্টার রুহুল কুদ্দুস কাজল, সহকারী অ্যাটর্নি জেনারেল কাজী বশির আহমেদ, ব্যারিস্টার ওসমান চৌধুরী, হাসানুজ্জামান, তরিকুল ইসলাম ও এনামুল হককে গ্রেফতার করা হয়। পরবর্তীতে রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদের পর আসামিদের কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন ঢাকার চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট (সিএমএম) আদালত। এদিকে এই মামলার এক নম্বর আসামি অ্যাডভোকেট নাহিদ সুলতানা যুথির বাসায় অভিযান চালিয়ে তাকে পাওয়া যায়নি বলে জানায় পুলিশ।
অন্যদিকে, এই নির্বাচনের ভোট গণনা নিয়ে হামলা-মামলার প্রেক্ষাপটে ৩ জন সহকারী অ্যাটর্নি জেনারেলের নিয়োগ বাতিল করে তাদের পদ হতে অব্যাহতি দেয়া হয়েছে। ওই তিন সহকারী অ্যাটর্নি জেনারেল হলেন মো. জাকির হোসেন, কাজী বশির আহমেদ ও শ্যামা আক্তার। এদের মধ্যে মো. জাকির হোসেন ও কাজী বশির আহমেদ সহকারী অ্যাটর্নি জেনারেল সাইফুর রহমান চৌধুরী সাইফের করা মামলার আসামি।

আরও খবর

🔝