শিরোনাম |
❒ যশোর শেখ হাসিনা সফটওয়্যার টেকনোলজি পার্ক
দেশের প্রথম সফটওয়্যার টেকনোলজি পার্কে নানা ধরনের সমস্যা বিরাজমান। এরমধ্যে অযৌক্তিক বিদ্যুৎ বিল, ভাড়া, চুক্তিসহ আরও কিছু সমস্যায় সম্মুখিন হয়ে আসছিলেন পার্কের বিনিয়োগকারীরা। বার বার নানান উদ্যোগ নিলেও বাস্তবায়নের গতি ছিলো বেশ ধীর। যেহেতু সরকারি এ প্রতিষ্ঠানটিকে দেশের মডেল প্রতিষ্ঠান হিসেবে বিবেচনা করা হয়, সেহেতু দীর্ঘদিনের এ সমস্যা নিরসনের উদ্যোগ নিয়েছেন ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রণালয়সংক্রান্ত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি ও যশোর-৩ আসনের সংসদ সদস্য কাজী নাবিল আহমেদ।
সমস্যা নিরসনে গত ২১ এপ্রিল বাংলাদেশ হাই-টেক পার্ক কর্তৃপক্ষের সাথে ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক এবং একই মন্ত্রণালয় সংক্রান্ত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি কাজী নাবিল আহমেদের নির্দেশনায় শেখ হাসিনা সফটওয়্যার টেকনোলজি পার্কের একটি প্রতিনিধি দলের যৌথ সভা হয়। হাই-টেক পার্ক কর্তৃপক্ষের সভাকক্ষে অনুষ্ঠিত সভায় বেশ কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত হয়। সিদ্ধান্তগুলোর মধ্যে শেখ হাসিনা সফটওয়্যার টেকনোলজি পার্কের যেসব কোম্পানি বাংলাদেশ হাই-টেক পার্ক কর্তৃপক্ষের সাথে চুক্তিবদ্ধ ছিল (৫ বছরের চুক্তি ইতিমধ্যে শেষ হয়েছে) তারা আগামী ৭ মে ত্রিপক্ষীয় চুক্তিতে আবদ্ধ হবে। ত্রিপক্ষীয় বলতে বাংলাদেশ হাই-টেক পার্ক কর্তৃপক্ষ, টেকসিটি বাংলাদেশ লিমিটেড এবং সংশ্লিষ্ট কোম্পানি। বাংলাদেশ হাইটেক পার্ক-বিএইচটিপিএ-এর ব্যবস্থাপনা পরিচালকসহ ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের উপস্থিতিতে যশোরে এই চুক্তি সম্পাদন করা হবে।
ভাড়া বকেয়ার কারণে যে ১১টি কোম্পানির বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন করা হয়েছিল, টেকসিটি কর্তৃপক্ষ ওই দিন দুপুরেই এই সিদ্ধান্ত মোতাবেক বিদ্যুৎ সংযোগ দিয়ে দেয়। বিশেষ করে করোনাকালে বকেয়া পড়া কোম্পানিগুলোর বকেয়া পরিশোধে ২০ মাস সময় পাবে। অর্থাৎ কোম্পানিগুলো প্রতি মাসে বকেয়ার ৫ শতাংশ হারে পরিশোধ করবে। অযৌক্তিক বিদ্যুৎ বিল (বিশেষ করে করোনাকালে এবং পার্ক চালুর প্রথম দিকে যখন কোম্পানির সংখ্যা কম ছিল) খতিয়ে দেখে তার দায়ভার থেকে কোম্পানিগুলোকে মুক্ত করার ব্যবস্থা করা হবে। বিদ্যুতের অস্বাভাবিক বিল-সংক্রান্ত সমস্যা নিরসনে গঠিত টেকনিক্যাল কমিটির চলমান কার্যক্রম অব্যাহত থাকবে; যেসব কোম্পানি শর্তযুক্ত ১৯ মাসের ভাড়া মওকুফ সুবিধা পায়নি, তাদের বিষয়টি পুনর্বিবেচনা করতে নির্বাহী কমিটির পরবর্তী সভায় উপস্থাপন করা হবে; যশোরের বাস্তবতায় ভাড়া পুনঃনির্ধারণের উদ্যোগ নেওয়া হবে।
সভায় সভাপতিত্ব করেন বাংলাদেশ হাই-টেক পার্ক কর্তৃপক্ষের ব্যবস্থাপনা পরিচালক জিএসএম জাফরউল্লাহ। সভায় তিনি বলেন, যশোর দেশর প্রথম ডিজিটাল জেলা। সেই জেলার সফটওয়্যার পার্কটি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নামে নামকরণ। সেহেতু এ পার্কের সার্বিক কাজ স্বাভাবিক রাখতে বাংলাদেশ হাইটেক পার্ক বদ্ধ পরিকর। যে কোনো সমস্যা আলোচনার মাধ্যমে সমাধান করা হবে বলে মন্তব্য করেন তিনি।
সভায় আরও উপস্থিত ছিলেন পরিচালক (টেকনিক্যাল) ব্যারিস্টার গোলাম সরওয়ার, পরিচালক (অর্থ ও প্রশাসন) তবিবুর রহমান এবং শেখ হাসিনা পার্কের ফোকাল পয়েন্ট কর্মকর্তা ইঞ্জিনিয়ার ফিরোজ আহমেদ। অন্যদিকে, টেকসিটির পক্ষে নির্বাহী পরিচালক হারুনুর রশিদসহ আরও দুইজন অংশ নেন।
বিনিয়োগকারীদের প্রতিনিধি দলে ছিলেন শেখ হাসিনা সফটওয়্যার টেকনোলজি পার্ক ইনভেস্টর’স এসোসিয়েশনের সভাপতি আহসান কবীর, সাধারণ সম্পাদক ইঞ্জিনিয়ার মো. শাহজালাল, যুগ্ম সম্পাদক এএইচএম আরিফুল হাসনাত, অর্থ সম্পাদক নাহিদুল ইসলাম, সদস্য অজয় দত্ত এবং সায়েম আলী।
এদিকে, আনুষ্ঠানিক সভা শেষে বিনিয়োগকারী প্রতিনিধিদল হাইটেক পার্ক কর্তৃপক্ষের ব্যবস্থাপনা পরিচালকের সাথে সৌজন্য সাক্ষাৎও করেন। সাক্ষাৎকালে শেখ হাসিনা পার্কের স্থানীয় উদ্যোক্তাদের সক্ষমতা বাড়াতে প্রস্তাব তুলে ধরেন বিনিয়োগকারীরা। ব্যবস্থাপনা পরিচালক সাথে সাথে এই বিষয়ে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাকে প্রয়োজনীয় নির্দেশনা দেন।
এর আগে ২ মার্চ শেখ হাসিনা সফটওয়্যার টেকনোলজি পার্ক ইনভেস্টরস এসোসিয়েশন আয়োজিত ‘শেখ হাসিনা সফটওয়্যার টেকনোলজি পার্ক: চ্যালেঞ্জ ও সম্ভাবনা’ শীর্ষক মতবিনিময় সভায় প্রধান অতিথি থেকে বিনিয়োগকারীদের সার্বিক আলোচনা শোনেন। পরে ১৭ মার্চ টেকসই উন্নয়ন ও অগ্রগতি শীর্ষক মতবিনিময় সভারও আয়োজন করা হয়।