gramerkagoj
রবিবার ● ৫ মে ২০২৪ ২১ বৈশাখ ১৪৩১
gramerkagoj

❒ তীব্র তাপপ্রবাহে খামারিদের ক্ষতি ২০০ কোটি টাকা

প্রতিদিন মারা যাচ্ছে ১ লাখ মুরগি
প্রকাশ : বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল , ২০২৪, ০৯:৩৬:০০ পিএম , আপডেট : শনিবার, ৪ মে , ২০২৪, ০৭:৩৮:৩৪ পিএম
ঢাকা অফিস:
GK_2024-04-25_662a7963eb165.jpg

দেশ জুড়ে তীব্র দাবদাহে প্রতিদিন মরছে প্রায় একলাখ মুরগি। এতে গত ১০ দিনে প্রান্তিক খামারিদের ২০০ কোটি টাকার ক্ষতি হয়েছে বলে দাবি করেছে বাংলাদেশ পোলট্রি অ্যাসোসিয়েশন (বিপিএ)। সংগঠনের সদস্যদের দাবি, খামারে মুরগির মৃত্যুতে প্রতিদিন আনুমানিক ক্ষতি ২০ কোটি টাকা। বৃহস্পতিবার (২৫ এপ্রিল) গণমাধ্যমে পাঠানো এক বিজ্ঞপ্তিতে এ দাবি করেছে সংগঠনটি।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, একদিকে মুরগির বাচ্চার সংকট, অন্যদিকে ২৮ থেকে ৩০ টাকা উৎপাদন খরচের মুরগির বাচ্চা খামারিরা ৮০ থেকে ৯০ টাকায় কিনছেন। ঈদের পর থেকে শুরু হওয়া চলমান তাপপ্রবাহের ফলে হিটস্ট্রোকের কারণে সারা দেশে প্রতিদিন প্রায় এক লাখ মুরগি মারা যাচ্ছে, যার আনুমানিক ক্ষতি দিনে ২০ কোটি টাকা। এই ভয়ানক পরিস্থিতিতে ডিম ও মুরগি উৎপাদন কমেছে ৪ থেকে ১০ শতাংশ। এ অবস্থা অব্যাহত থাকলে আগামী দিনে ব্রয়লার মুরগি ও ডিম সরবরাহে সংকট দেখা দিতে পারে। ঈদের পর গত ১০/১২ দিনে সারাদেশে ১০ লাখের বেশি ব্রয়লার, লেয়ার ও সোনালি মুরগি মারা গেছে। এর মধ্যে ৮০ শতাংশ ব্রয়লার মুরগি এবং ১০ থেকে ১৫ শতাংশ লেয়ার মুরগি। এছাড়া সোনালিসহ অন্যান্য মুরগির ৫ শতাংশ মারা গেছে। এতে মোট ক্ষতির পরিমাণ ২০০ কোটি টাকা। এ অবস্থা আরও কয়েকদিন চলতে থাকলে খামারগুলো বন্ধ হয়ে যাবে, ডিম ও মুরগির উৎপাদন কমে যাবে উল্লেখ করে সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, এ সুযোগ কাজে লাগিয়ে করপোরেট ডিম-মুরগি সরবরাহকারী ও তেজগাঁও ডিম সিন্ডিকেট সংকট তৈরি করবে। জুন থেকে তারা দাম বাড়াতে শুরু করবে। আগস্ট থেকে অক্টোবর পর্যন্ত ডিম ও মুরগির দাম মারাত্মকভাবে বাড়বে। এ অবস্থা থেকে উত্তরণে সরকারের উচিত পোলট্রি খামারিদের রক্ষা করা। যেমন সরকারের পক্ষ থেকে খামারিদের মুরগির বাচ্চা ও পোলট্রি ফিডে ভর্তুকি দিয়ে উৎপাদনে ধরে রাখতে হবে এবং সাপ্লাই চেইন ঠিক রাখতে হবে, যাতে করে বাজারে যাতে সংকট সৃষ্টি না হয়।
বর্তমানে দেশে ৬০ থেকে ৬৫ হাজার প্রান্তিক মুরগির খামার রয়েছে উল্লেখ করে সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয়, ২০ হাজার খামারি করপোরেট গ্রুপের সঙ্গে চুক্তিবদ্ধ। এ অবস্থা আরও কয়েকদিন চলতে থাকলে নতুন করে আবারও বন্ধ হয়ে যাবে ১৫ থেকে ২০ হাজার খামার। প্রান্তিক পোলট্রি খামারিরা কখনোই ডিম মজুত করতে পারেন না। তবে করপোরেট গ্রুপগুলো ও ঢাকা তেজগাঁও, কাপ্তান বাজারসহ দেশের অধিকাংশ ডিম ব্যবসায়ী কোল্ড স্টোরেজের মাধ্যমে ডিম মজুত করা শুরু করেছেন। পরিস্থিতির সুযোগ নিয়ে তারা বেশি দামে ডিম-মুরগি বিক্রি করবেন। প্রতিদিন ব্রয়লার মুরগির চাহিদা ৩ হাজার ৫০০ টন, সোনালি লেয়ার মুরগির চাহিদা এক হাজার ২০০ টন। স্বাভাবিক সময়ে ব্রয়লার ও লেয়ার মুরগির মাংস উৎপাদন হতো ৫ হাজার ২০০ টন, যা চাহিদার তুলনায় বেশি। তবে অপমাত্রা বৃদ্ধির কারণে অনেক খামার বন্ধ হয়ে যাবে, ফলে মাংসের মুরগি উৎপাদন নেমে আসতে পারে ৪ হাজার টনে।
এতে আরও বলা হয়, প্রতিদিন ডিমের চাহিদা ৪ কোটি পিস। স্বাভাবিক সময়ে দিনে সাড়ে ৪ কোটি পিস ডিম উৎপাদিত হয়, যা চাহিদার তুলনায় বেশি। তবে তাপমাত্রা বৃদ্ধির কারণে এখন দৈনিক মাত্র ৩ কোটি ৮০ লাখ থেকে ৯০ লাখ পিস ডিম উৎপাদন হচ্ছে। ফলে দৈনিক ২০ লাখ ডিমের ঘাটতি রয়েছে।
এ অবস্থায় বিপিএর পক্ষ থেকে পোলট্রি খামারিদের তাপপ্রবাহ মোকাবিলায় বেশকিছু ব্যবস্থা নেওয়ার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। সেগুলোর মধ্যে রয়েছে- শেডে সঠিক বায়ু চলাচল নিশ্চিত করা, ধারণক্ষমতার মধ্যে কম মুরগি রাখা, পানিতে ভিটামিন জাতীয় ওষুধ ব্যবহার না করা, লেবু এবং আখের গুড় দিয়ে দুপুরে শরবতের ব্যবস্থা করা, মুরগির শরীরে পানি স্প্রে করা, শেডের ছাদে ভেজা পাটের ব্যাগ রাখা এবং নিয়মিত পানি ঢালা, দুপুরে মুরগিকে খাবার না দেওয়া।

আরও খবর

🔝