শিরোনাম |
❒ পাঁচটি দ্বিপক্ষীয় নথি স্বাক্ষরিত
বাংলাদেশে হাসপাতাল ও চিকিৎসা খাতে বিনিয়োগে থাইল্যান্ডের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি বাংলাদেশের বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চল ও হাইটেক পার্কে থাইল্যান্ডের বিনিয়োগ কামনা করেছেন। এছাড়া দুই দেশের প্রধানমন্ত্রীর উপস্থিতিতে পাঁচটি দ্বিপক্ষীয় নথি স্বাক্ষরিত হয়েছে।
শুক্রবার (২৬ এপ্রিল) থাইল্যান্ডের রাজধানী ব্যাংককে গভর্নমেন্ট হাউজে দেশটির প্রধানমন্ত্রী স্রেতা থাভিসিনের সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় বৈঠকের পর যৌথ সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান প্রধানমন্ত্রী।
শেখ হাসিনা বলেন, আমরা বাংলাদেশি চিকিৎসা কর্মীদের প্রশিক্ষণ ও সক্ষমতা বৃদ্ধিতে সহযোগিতার সম্ভাবনা নিয়ে আলোচনা করেছি। আমি তাকে বাংলাদেশের হাসপাতাল ও চিকিৎসা সুযোগ-সুবিধায় বিনিয়োগের সম্ভাবনা অন্বেষণেরও প্রস্তাব দিয়েছি। বৈঠক শেষে দুই প্রধানমন্ত্রীর উপস্থিতিতে একটি চুক্তি, তিনটি সমঝোতা স্মারক (এমওইউ) ও একটি লেটার অব ইনটেন্ট (এলওআই) স্বাক্ষরিত হয়।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, নিকটতম প্রতিবেশী হিসেবে থাইল্যান্ডের সঙ্গে সম্পর্ককে বাংলাদেশ অত্যন্ত গুরুত্ব দেয়। আমাদের বন্ধুত্ব আমাদের ঐতিহাসিক, ভাষাগত ও অভিন্ন সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যের গভীরে প্রোথিত। সহযোগিতার বহুমুখী ক্ষেত্রে আমাদের দু’দেশের মধ্যে উষ্ণ ও সৌহার্দ্যপূর্ণ সম্পর্ক ক্রমাগত বৃদ্ধি পাচ্ছে।
দুই নেতা পারস্পরিক স্বার্থ সংশ্লিষ্ট দ্বিপক্ষীয় ও আঞ্চলিক বিষয় নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করেন। শেখ হাসিনা বলেন, ‘দক্ষিণপূর্ব এশিয়ার গতিশীল অর্থনীতির সঙ্গে আমাদের সম্পৃক্ততার ক্ষেত্রে থাইল্যান্ডকে আমরা এক গুরুত্বপূর্ণ ও গতিশীল অংশীদার হিসেবে দেখি।
বাণিজ্য সহযোগিতার বিষয়ে উভয় নেতা দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্যের বর্তমান আয়তন বাড়ানোর জন্য দীর্ঘ পদক্ষেপ নিয়ে আলোচনা করেছেন এবং সুস্থ দ্বিমুখী প্রবৃদ্ধি অর্জনে একসঙ্গে কাজ করতে সম্মত হয়েছেন।
উভয় পক্ষ ২০২৪ সালের মধ্যে মুক্ত বাণিজ্য চুক্তি (এফটিএ) নিয়ে আলোচনা শুরু করতে সম্মত হয়েছে উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, দুই দেশের বাণিজ্যমন্ত্রী এ ইস্যুতে একটি লেটার অব ইনটেন্ট (এলওআই) সই করেছেন।
কূটনৈতিক পাসপোর্টধারীদের জন্য ইতোমধ্যে দুই দেশের একটি চুক্তি রয়েছে উল্লেখ করে শেখ হাসিনা বলেন, থাই ও বাংলাদেশি কর্মকর্তাদের মধ্যে মসৃণ যোগাযোগের সুবিধার্থে ঢাকা ও ব্যাংকক অফিসিয়াল পাসপোর্টধারীদের জন্য ভিসা ছাড় সংক্রান্ত চুক্তি সই করেছে।
প্রধানমন্ত্রী আরও বলেন, বাংলাদেশের জন্য থাইল্যান্ড জ্বালানি সহযোগিতায় সম্পৃক্ত হওয়ার সম্ভাবনাময় অংশীদার। জ্বালানি সহযোগিতার সম্ভাবনা অন্বেষণ করতে জ্বালানি সহযোগিতা সংক্রান্ত সমঝোতা স্মারকও (এমওইউ) সই হয়েছে।
শেখ হাসিনা বলেন, আমরা দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করি, বিমসটেক মোট ১৮০ কোটি জনসংখ্যার জন্য আঞ্চলিক অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির মূল চালিকাশক্তি। রোহিঙ্গা সংকটের টেকসই সমাধান পেতে বাংলাদেশ থাইল্যান্ডের সমর্থন চেয়েছে। তিনি দুই দেশের মধ্যে উচ্চপর্যায়ের সফরের গুরুত্ব পুনর্ব্যক্ত করেন।
শেখ হাসিনা প্রধানমন্ত্রী থাভিসিনকে বাংলাদেশ সফরের আমন্ত্রণ জানান। এর আগে শেখ হাসিনা গভর্নমেন্ট হাউসে পৌঁছালে থাভিসিন তাকে স্বাগত জানান এবং এরপর তাকে লাল গালিচা সংবর্ধনা ও গার্ড অব অনার দেওয়া হয়।
বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা থাইল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রীর আমন্ত্রণে ছয় দিনের সরকারি সফরে গত বুধবার দেশটিতে পৌঁছান।