gramerkagoj
বৃহস্পতিবার ● ১৬ মে ২০২৪ ২ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১
gramerkagoj

❒ ব্যাপক সমালোচনা, আজও বন্ধ যশোরসহ ২৭ জেলার হাইস্কুল-কলেজ

অবশেষে প্রাইমারি বন্ধ ঘোষণা
প্রকাশ : মঙ্গলবার, ৩০ এপ্রিল , ২০২৪, ১২:০২:০০ এ এম , আপডেট : বৃহস্পতিবার, ১৬ মে , ২০২৪, ০২:১৩:৫৮ পিএম
এম. আইউব:
GK_2024-04-29_662fbbc429a34.jpg

শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সিদ্ধান্তের সমালোচনা যেন থামছেই না। চলমান তীব্র তাপদাহের মধ্যে মন্ত্রণালয়ের একেক সময় একেক সিদ্ধান্তে ক্ষুব্ধ অভিভাবকরা। সেই সাথে অন্যান্যরাও। সর্বশেষ, প্রাথমিক বিদ্যালয় খোলা রেখে হাইস্কুল, মাদ্রাসা ও কলেজ বন্ধ রাখার সিদ্ধান্তে ব্যাপক প্রতিক্রিয়া হয়েছে মানুষের মধ্যে। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে মানুষ তাদের ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করছেন। বেশিরভাগ মানুষের বক্তব্য, ‘কোমলমতি শিশুদের স্কুল এই গরমে খোলা রেখে অপেক্ষাকৃত বড়দের স্কুল ও কলেজ বন্ধ করার ঘোষণা কতটুকু মানবিক।’ অনেকেই এটিকে ‘অমানবিক’ বলে আখ্যায়িত করেন। এই সমালোচনার মধ্যে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় আগামী ২ মে বৃহস্পতিবার পর্যন্ত বন্ধ রাখার ঘোষণা দিয়েছে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়। বন্ধ থাকবে শিশু কল্যাণ ট্রাস্টের বিদ্যালয় ও উপানুষ্ঠানিক শিক্ষা ব্যুরোর লার্নিং সেন্টারও।
একইসাথে অতি তীব্র তাপদাহের কারণে সোমবারের পাঁচ জেলার পরিবর্তে আজ মঙ্গলবার ২৭ জেলায় স্কুল, মাদ্রাসা ও কলেজ বন্ধ থাকবে বলে ঘোষণা দিয়েছে মন্ত্রণালয়। যদিও মাধ্যমিক পর্যায়ের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ও কলেজ বৃহস্পতিবার পর্যন্ত বন্ধ রাখার স্বপ্রণোদিত নির্দেশ দিয়েছে হাই কোর্ট। তবে, শিক্ষামন্ত্রী হাই কোর্টের এই আদেশের বিরুদ্ধে আপিল করার কথা বলেছেন।
এদিকে, সোমবার যশোরে দেশের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে। এদিন যশোরে তাপমাত্রা ছিল ৪২.৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস। যা অতীতের সকল রেকর্ড ভেঙেছে। খুলনা আবহাওয়া অফিসের ইনচার্জ আমিরুল আজাদ জানান, খুলনা আবহাওয়া অফিসে ২০০০ সাল থেকে তথ্য সংগৃহীত আছে। তিনি বলেন, আজ (সোমবার) যশোরে সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে ৪২.৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস। এছাড়া, কুষ্টিয়ার কুমারখালীতে ৪১.৫, সাতক্ষীরায় ৪১.৫, মোংলায় ৪১.১ ডিগ্রি এবং কয়রায় ৪১.২ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে।
এই অবস্থায় হাই কোর্ট বলেছে যেসব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শ্রেণিকক্ষে শীতাতপ নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থা রয়েছে সেগুলোতে যথারীতি পাঠদান ও পরীক্ষা কার্যক্রম চলবে। এছাড়া, যদি কোনো প্রতিষ্ঠানে পরীক্ষার দিন ধার্য করা থাকে সেক্ষেত্রে সিডিউল অনুযায়ী পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হবে।
অতি তীব্র তাপদাহের কারণে যে ২৭ জেলায় মাধ্যমিক পর্যায়ের স্কুল, মাদ্রাসা ও কলেজ আজ মঙ্গলবার বন্ধ থাকবে তার মধ্যে খুলনা ও রাজশাহী বিভাগের সব জেলা এবং ঢাকা বিভাগের ঢাকা, টাঙ্গাইল, নারায়ণগঞ্জ, মুন্সিগঞ্জ, গাজীপুর ও মানিকগঞ্জ, রংপুর বিভাগের কুড়িগ্রাম ও দিনাজপুর এবং বরিশাল বিভাগের পটুয়াখালী জেলার সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান রয়েছে।
শিক্ষা মন্ত্রণালয় এ সংক্রান্ত আদেশে উল্লেখ করেছে, দেশের চলমান তাপপ্রবাহের কারণে আবহাওয়া অধিদপ্তরের সঙ্গে পরামর্শক্রমে খুলনা ও রাজশাহী বিভাগের সব জেলা এবং ঢাকা বিভাগের ঢাকা, টাঙ্গাইল, নারায়ণগঞ্জ, মুন্সিগঞ্জ, গাজীপুর ও মানিকগঞ্জ, রংপুর বিভাগের কুড়িগ্রাম ও দিনাজপুর এবং বরিশাল বিভাগের পটুয়াখালী জেলার সব মাধ্যমিক স্কুল, কলেজ, মাদ্রাসা ও কারিগরি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান আজ ৩০ এপ্রিল বন্ধ থাকবে।
গত ৩১ মার্চ থেকে তাপদাহ শুরু হয়েছে। দিনদিন এই তাপদাহ বৃদ্ধি পাচ্ছে। এ কারণে ঈদের ছুটি শেষে গত ২১ এপ্রিল সারাদেশে সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলার কথা ছিল। কিন্তু তীব্র তাপদাহের কারণে এক সপ্তাহ ছুটি বাড়ানো হয়। এরপর গত ২৫ এপ্রিল শিক্ষা মন্ত্রণালয় থেকে জারি করা প্রজ্ঞাপনে নির্দেশনা দেওয়া হয় রোববার থেকে সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ক্লাস শুরু করার জন্য। সে নির্দেশ অনুযায়ী রোববার সারাদেশের সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলে। তবে,অনেক প্রতিষ্ঠানে অতিরিক্ত গরমে শিক্ষার্থীদের অসুস্থ হয়ে পড়ার খবর পাওয়া যায়।
এদিকে, অতি তীব্র তাপদাহের কারণে গতকাল সোমবার ঢাকা, চুয়াডাঙ্গা, যশোর, খুলনা ও রাজশাহী জেলার সব মাধ্যমিক বিদ্যালয়, কলেজ, মাদ্রাসা ও কারিগরি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ ছিল। একইভাবে আজ মঙ্গলবার এই সংখ্যা বাড়িয়ে ২৭ জেলার শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ রাখার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
সরকারি নির্দেশনা মানেনি তালবাড়িয়া স্কুল
অতি তীব্র তাপদাহ থেকে শিক্ষার্থীদের রক্ষা করতে সোমবার যশোরে মাধ্যমিক পর্যায়ের সব স্কুল বন্ধ রাখার নির্দেশ মানেননি সদর উপজেলার তালবাড়িয়া হাইস্কুলের প্রধান শিক্ষক ওসমান গনি। অভিভাবকরা অভিযোগ করেছেন, তার নির্দেশে শিক্ষকরা শিক্ষার্থীদের জোরপূর্বক স্কুলে আনেন। এদিন প্রচন্ড গরমের মধ্যে স্কুলে এসে একজন শিক্ষার্থী অসুস্থ হয়ে পড়ে বলে একাধিক সূত্র জানিয়েছে।
এদিকে, এলাকার একাধিক ব্যক্তি অভিযোগ করেছেন, প্রধান শিক্ষক ওসমান গনি বেপরোয়া প্রকৃতির লোক। তিনি কাউকে তোয়াক্কা করেন না। নিজেকে ব্যাপক ক্ষমতাধর হিসেবে জাহির করতে ইচ্ছেমতো করেন সবকিছু। তার কর্মকান্ডে অনেকেই বিরক্ত। এ বিষয়ে জানতে দফায় দফায় ফোন করলেও ওসমান গনির ফোন বন্ধ পাওয়া যায়।
তবে, কথা হয় সদর উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার রবিউল ইসলামের সাথে। তিনি বলেন, ‘সরকারি নির্দেশনা উপেক্ষা করা অন্যায়। বিষয়টির খোঁজ নিয়ে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।’

 

আরও খবর

🔝