gramerkagoj
সোমবার ● ২০ মে ২০২৪ ৫ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১
gramerkagoj
স্বস্তির বৃষ্টি: ক্ষতি হয়নি ধানে প্রাণ ফিরেছে ফসলে
প্রকাশ : মঙ্গলবার, ৭ মে , ২০২৪, ১১:১৬:০০ পিএম , আপডেট : রবিবার, ১৯ মে , ২০২৪, ০৪:৩৩:৩৮ পিএম
এম. আইউব:
GK_2024-05-07_663a5315255d6.jpg

যশোরে একমাস পরে সোমবারের বৃষ্টিতে স্বস্তি ফিরেছে প্রাণিকূলে। ঠিক তেমনি প্রাণ ফিরেছে সবজি, পাট, তিলসহ অন্যান্য ফসল এবং ফলে। উঠতি বোরো ধানে কোনো ক্ষতি হয়নি। এমন তথ্য দিয়েছে জেলা কৃষি বিভাগ। মঙ্গলবার বিভিন্ন উপজেলা ঘুরে এ তথ্য দিয়েছেন কৃষি কর্মকর্তারা।
দীর্ঘ এক মাস পাঁচদিন অতি তীব্র তাপদাহে পোড়ার পর যশোরে সোমবার সন্ধ্যায় বৃষ্টি হয়। রাতেও কোনো কোনো অঞ্চলে বৃষ্টি হয়। অল্পসময় বৃষ্টি হলেও মানুষ স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলে; আগুনে পানি ঢালার মতো। স্বস্তি আসে প্রাণিকূলে। তবে, বোরো ধান নিয়ে অনেকের মধ্যে শঙ্কা তৈরি হয়। শঙ্কা তৈরি হয় নানা ধরনের ফল ঝরে পড়া নিয়ে। এসব শঙ্কা মাথায় নিয়ে মঙ্গলবার সকালে মাঠে নামে কৃষি বিভাগ।
জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক ডক্টর সুশান্ত কুমার তরফদার সকালে অভয়নগর, ঝিকরগাছা, শার্শাসহ বিভিন্ন উপজেলার মাঠ পরিদর্শন করেন। তিনি ঝিকরগাছার মাঠ থেকে জানান, যে পরিমাণ বৃষ্টি হয়েছে তাতে ধানের কোনো ক্ষতি হয়নি। কারণ কোথাও পানি জমেনি। যেটুকু পানি হয়েছে তার সবটুকু মাটিতে শোষণ করেছে। বরং সোমবার সন্ধ্যার বৃষ্টি অন্যান্য ফসলের জন্য ইতিবাচক হয়েছে। বিশেষ করে জমিতে থাকা সবজি, পাট ও তিলের জন্য আশীর্বাদ হয়েছে। একইভাবে বৃষ্টি এ সময়ের মৌসুমি ফলের জন্য খুবই কাজে লেগেছে বলে উপপরিচালক জানান। এক কথায় ফসলে প্রাণ ফিরিয়েছে সোমবারের বৃষ্টি।
কৃষি বিভাগ জানিয়েছে, টানা তাপদাহের কারণে যশোরের কৃষিতে ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। বিশেষ করে সবজি ও ফলে ক্ষতি হয়েছে মারাত্মকভাবে। বিভিন্ন সবজি শুকিয়ে গেছে। পচে গেছে কোনো কোনোটি। পানির অভাবে একইভাবে ক্ষতি হয়েছে ফলেও। আম, লিচুসহ অন্যান্য ফল ব্যাপকভাবে ঝরে পড়েছে। রসালোভাব কমেছে। বৃষ্টি হওয়ায় ফল ঝরেপড়া অনেকাংশে রোধ হবে বলে কৃষি কর্মকর্তারা জানিয়েছেন।
উপপরিচালক বলেন, ঝিকরগাছা ও শার্শায় অধিকাংশ ধান কাটা হয়ে গেছে। ঝিকরগাছায় ৯৫ ও শার্শায় ৯৭ শতাংশ ধান কেটে ফেলেছেন কৃষক। অন্যান্য চারটি উপজেলায় কর্তনের পরিমাণ এগিয়েছে। সবচেয়ে কম কাটা হয়েছে বাঘারপাড়ায়। তারপর সদর। যেহেতু মাঠে পানি জমেনি এ কারণে কোনো ক্ষতি হয়নি। তবে, বৃষ্টি যদি লাগাতার হয় সেক্ষেত্রে কিছুটা হলেও ক্ষতি হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে বলে উল্লেখ করেন তিনি।
যশোরে প্রতিকূল আবহাওয়া থেকে পাকা ধান রক্ষা করতে কৃষি কর্মকর্তারা প্রতিদিন মাঠে মাঠে যান। তারা কৃষককে যেকোনো মূল্যে ধান কেটে ঘরে তোলার পরামর্শ দেন। সচেতন করতে করেন মাইকিংও।
জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অফিস থেকে পাওয়া তথ্যানুযায়ী, এ মৌসুমে যশোরের আট উপজেলায় সর্বমোট এক লাখ ৬০ হাজার ৭৮৫ হেক্টর জমিতে বোরো ধান চাষ হয়েছে। যা, লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে বেশি। এরমধ্যে সদর উপজেলায় ২৬ হাজার ১৩৫, শার্শায় ২৩ হাজার ৮২৪, ঝিকরগাছায় ১৯ হাজার ৫৫০, চৌগাছায় ১৮ হাজার ৩৩৫, অভয়নগরে ১৪ হাজার ২৩০, বাঘারপাড়ায় ১৬ হাজার ৭৫১, মণিরামপুরে ২৮ হাজার ৮৯০ ও কেশবপুরে ১৩ হাজার ৭০ হেক্টর জমিতে বোরো ধান চাষ হয়। ফলনও ভালো। কৃষক ফলনে খুশি। শেষ পর্যন্ত মাড়াই করে ঘরে তুলতে পারলে চাষির পরিশ্রম সার্থক হবে বলে মনে করছেন কর্মকর্তা। একইসাথে দূর হবে খাদ্য সংকটও।

আরও খবর

🔝