gramerkagoj
শুক্রবার ● ১৮ জুলাই ২০২৫ ৩ শ্রাবণ ১৪৩২
gramerkagoj
শিরোনাম
শিরোনাম পাশাপাশি দাফন করা হলো হামলায় নিহত পিতা-পুত্রকে আবারও গণতন্ত্র রুদ্ধ করার অপচেষ্টা চলছে: অমিত অতিবৃষ্টিতে বীজতলা নষ্ট, আমন চারা সংকটের শংকায় কৃষক কেশবপুরে জলাবদ্ধতায় বাধ্য হয়েই কাটা হচ্ছে অপরিপক্ক পাট জামায়াতের মহাসমাবেশ সফল করতে মোরেলগঞ্জে লঞ্চযোগে কর্মীদের ঢল সড়ক পরিবহন শ্রমিক ইউনিয়ন নির্বাচনে বাবু সভাপতি ও রাজ্জাক সম্পাদক নির্বাচিত ঢাকায় জামায়াতের সমাবেশে অংশ নিতে রাজশাহীতে বিশেষ ট্রেন গাইবান্ধায় ইপিজেড স্থাপনের দাবিতে মানববন্ধন: সাঁকোয়া ব্রিজ এলাকায় বাস্তবায়নের আহ্বান আনোয়ারায় র‌্যাবের অভিযানে ৩ কোটি টাকার ইয়াবাসহ নারী আটক রাজাপুরে ছাত্রদল নেতার আপত্তিকর ভিডিও ভাইরাল, সমালোচনার ঝড়
যে দুই কথায় নাবিকদের কিছুই করেনি জলদস্যুরা
প্রকাশ : বুধবার, ১৫ মে , ২০২৪, ১২:১৭:০০ পিএম , আপডেট : বুধবার, ১৬ জুলাই , ২০২৫, ০৩:০১:৩৪ পিএম
দিদারুল আলম, চট্টগ্রাম প্রতিনিধি:
GK_2024-05-15_664451199e9b2.jpg

ছিনতাই হওয়া ‘এমভি আব্দুল্লাহ’ জাহাজে ছিল প্রায় ৫৫ হাজার টন কয়লা। আর এই কয়লার দাম ৬৬ লাখ ডলার, যা বাংলাদেশি টাকায় ৮০ কোটি টাকা যা জিম্মিদশা থেকে মুক্ত হওয়া ছিল প্রায় অনিশ্চিত। জাহাজটি আফ্রিকার দেশ মোজাম্বিকের মাপুতো বন্দর থেকে কয়লা নিয়ে সংযুক্ত আরব আমিরাতের আল হামরিয়া বন্দরের দিকে যাচ্ছিল। এ সময় জলদস্যুরা জাহাজের দখল নেয়। অনিশ্চিত এক অবস্থা কাটিয়ে অবশেষে ২৩ নাবিকসহ দেশে ফিরেছে বাংলাদেশি পতাকাবাহী জাহাজ এমভি আবদুল্লাহ।
দীর্ঘ প্রতীক্ষার পর ২৩ নাবিকদের বহন করা লাইটার জাহাজ যখন বন্দরে পৌঁছায় তখন ছিল এক অভাবনীয় দৃশ্য। খুশিতে চোখের নোনা জল মুছছিলেন নাবিকদের মা-বাবা, স্ত্রী-সন্তানরা।
মঙ্গলবার (১৪ মে) বিকেলে চট্টগ্রাম বন্দর জেটিতে পৌঁছে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন এমভি আবদুল্লাহ জাহাজের ক্যাপ্টেন আব্দুর রশিদ। বলেন, ‘জলদস্যুরা যখন আমাদের জিম্মি করেছিল তখন আমি হাত তুলে সারেন্ডার করে বলেছিলাম, আমরা বাংলাদেশি মুসলিম, আমরা রোজা আছি। এসব কথা বলায় তারা আর কিছু করেনি।’
আব্দুর রশিদ বলেন, ‘প্রথম দিন যখন আমরা দস্যু দ্বারা আক্রান্ত হলাম, তখন সেকেন্ড অফিসার ব্রিজে ছিলেন। আমি নিচে নেমে অ্যালার্ট দিচ্ছিলাম। সবকিছু অতি দ্রুত ঘটছে। দস্যুরা স্পিডবোটে এসে জাহাজে ওঠে ব্রিজে চলে আসে। আমি আর সেকেন্ড অফিসার আমাদের হিডেন রুমে যেতে পারিনি। সেকেন্ড অফিসার আটক হওয়ার পর আমি গিয়ে দেখি একে-৪৭ তাক করে আছে তার দিকে। আমি যেতেই আমার দিকেও একে-৪৭ তাক করে।’
তিনি বলেন, ‘আমাদের নাবিকদের কেউ কেউ কান্নাকাটি করেছিল। আমিও জীবনে প্রথম এমন পরিস্থিতিতে পড়েছিলাম। মনে ভয় ছিল, কিন্তু বডি ল্যাঙ্গুয়েজ স্বাভাবিক রেখেছি। সবাইকে হ্যান্ডেল করে, যেন আমাদের কোনো ক্রুর কোনো ক্ষতি না হয় সেদিকে নজর রেখেছি। সেফটি অব লাইফটাকে প্রাধান্য দিয়েছি।’
এমভি আবদুল্লাহ জাহাজের ডেক ক্যাডেট সাব্বির। নিজের অভিজ্ঞতা জানাতে গিয়ে বলেন, ‘প্রতিটি মুহূর্ত কেটেছে মৃত্যু আতঙ্কে। কখন কী হয়, পরিবারের সদস্যদের আর দেখতে পাব কি না তা নিয়েই ভাবতাম জিম্মি থাকাকালীন প্রতিটি সময়। যখন মুক্তির খবর পাই, তখন মনে শান্তি আসে। সোমবার সন্ধ্যায় আমাদের নিয়ে এমভি আবদুল্লাহ জাহাজটি চট্টগ্রাম বন্দরের বহির্নোঙর কুতুবদিয়ার সমুদ্র উপকূলে নোঙর করে। মঙ্গলবার বিকেলে আমরা বন্দর জেটিতে পৌঁছেছি। সবার পরিবারের লোকজনই এসেছেন। কতটা যে ভালো লাগছে বলে বোঝানো সম্ভব নয়।’
কেএসআরএম গ্রুপ জানায়, এমভি আবদুল্লাহ জাহাজে ৫৬ হাজার টন পণ্য চুনাপাথর রয়েছে। এতে প্রায় ১৯০ মিটার লম্বা জাহাজটির ড্রাফট (জাহাজের পানির নিচের অংশের গভীরতার পরিমাপ) বেড়ে হয়েছে সাড়ে ১২ মিটার। জাহাজটির ড্রাফট বেশি থাকায় কুতুবদিয়ায় প্রথমে কিছু পরিমাণ পণ্য খালাস করে। এরপর পতেঙ্গার কাছাকাছি বঙ্গোপসাগরে বন্দর জলসীমায় আনা হয়। সেখানে বাকি পণ্য খালাস করা হবে। এ জন্য দেশে পৌঁছার পরও নাবিকদের ঘরে ফিরতে একটু সময় লেগেছে।
উল্লেখ্য, গত ১২ মার্চ ২৩ নাবিকসহ জাহাজটি জিম্মি করে সোমালিয়ার জলদস্যুরা। ৩৩ দিনের মাথায় ১৩ এপ্রিল দিবাগত রাতে জাহাজটি মুক্ত হয়। এরপর জাহাজটি প্রথমে আমিরাতের আল-হামরিয়া বন্দরে পৌঁছায়। সেখানে পণ্য খালাস শেষে আরেকটি বন্দর থেকে চুনাপাথর বোঝাই করে চট্টগ্রামের পথে রওনা হয়েছিল জাহাজটি। এ হিসেবে আমিরাত থেকে ১৩ দিনের মাথায় জাহাজটি বাংলাদেশের জলসীমায় এসে পৌঁছায়।

আরও খবর

🔝