শিরোনাম |
ইসলামের একটি শিয়ার বা মহান নিদর্শন হলো কোরবানি। আল্লাহর সন্তুষ্টি লাভের আশায় পশু কোরবানি করা হয়। কোরবানি ইসলামের অতি গুরুত্বপূর্ণ ও তাৎপর্যপূর্ণ ইবাদত। যারা সামর্থ্যবান তাদের জন্য কোরবানি ওয়াজিব। আল্লাহর রাসুল (সা.) প্রত্যেক সামর্থ্যবান মুসলমানকে কোরবানি করতে উৎসাহ দিয়েছেন। তিনি মাদানী জীবনে নিয়মিত কোরবানি পালন করতেন। তিনি কোরবানির জন্য উত্তম পশু নির্বাচন করতেন সবসময়। তার নির্বাচিত কোরবানির পশু কেমন হতো এ বিষয়ে বিভিন্ন হাদিসে বর্ণনা পাওয়া যায়।
এক হাদিসে হজরত আবু সাঈদ খুদরি রাদিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম শিং বিশিষ্ট, হৃষ্টপুষ্ট একটি মেষ কোরবানি করেন, যার মুখমণ্ডল, চোখ ও পা কালো বর্ণের ছিল। (ইবনে মাজা, ৩১২৮)
অপর হাদিসে ইউনুস ইবনু মাইসারা ইবনু হালবীস রহ. থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, আমি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম–এর সাহাবী আবু সাঈদ রাদিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুর সাথে কোরবানির পশু ক্রয় করতে গেলাম। তিনি একটি সামান্য কালো বর্ণের মেষের দিকে ইশারা করেন, যার আকৃতি খুব উঁচুও ছিল না, বেটেও ছিল না। তিনি আমাকে বলেন, এই মেষটি আমার জন্য ক্রয় কর, কারণ রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম–এর মেষের সাথে এর একটা সাদৃশ্য আছে। (ইবনে মাজা, ৩১২৯)
আরেক হাদিসে আবু উমামা বাহিলী রাদিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু থেকে বর্ণিত। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, উত্তম কাফন এক জোড়া কাপড় (লুঙ্গি ও চাদর) এবং উত্তম কোরবানি হল শিং বিশিষ্ট মেষ। (ইবনে মাজা, ৩১৩০)
কোরবানির গুরুত্ব সম্পর্কে উম্মুল মুমিনীন আয়েশা রা. থেকে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেছেন, কোরবানির দিনের আমলসমূহের মধ্য থেকে পশু কোরবানি করার চেয়ে কোনো আমল আল্লাহ তায়ালার নিকট অধিক প্রিয় নয়। কিয়ামতের দিন এই কোরবানিকে তার শিং, পশম ও ক্ষুরসহ উপস্থিত করা হবে। আর কোরবানির রক্ত জমিনে পড়ার আগেই আল্লাহ তায়ালার নিকট কবুল হয়ে যায়। সুতরাং তোমরা সন্তুষ্টচিত্তে কোরবানি কর। (জামে তিরমিজি, হাদীস : ১৪৯৩)
সামর্থ্য থাকা সত্ত্বেও যে ব্যক্তি এই ইবাদত পালন করে না তার ব্যাপারে হাদিস শরিফে কঠোর হুঁশিয়ারি এসেছে, হজরত আবু হুরায়রা রা. থেকে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেছেন, ‘যার কোরবানির সামর্থ্য আছে তবুও সে কোরবানি করল না সে যেন আমাদের ঈদগাহে না আসে।’ (মুসনাদে আহমদ ২/৩২১; মুস্তাদরাকে হাকেম, হাদীস : ৭৬৩৯; আত্তারগীব ওয়াত্তারহীব ২/১৫৫)