gramerkagoj
শনিবার ● ২৭ জুলাই ২০২৪ ১২ শ্রাবণ ১৪৩১
gramerkagoj
অপু হত্যা: আপিল বিভাগে ২ জনের মৃত্যুদণ্ড বহাল
প্রকাশ : মঙ্গলবার, ৪ জুন , ২০২৪, ১১:৪৪:০০ এএম , আপডেট : শনিবার, ২৭ জুলাই , ২০২৪, ১২:০৩:২৩ পিএম
ঢাকা অফিস:
GK_2024-06-04_665ea7c8677bb.jpg

ঢাকার সূত্রাপুরের আলোচিত আশিকুর রহমান খান অপু হত্যা মামলায় দুই আসামি মঞ্জুরুল আবেদীন রাসেল ও নওশাদ হোসেন মোল্লা রবিনের মৃত্যুদণ্ড বহাল রেখেছেন সুপ্রিম কোর্টের আপিল আপিল বিভাগ।
একই সঙ্গে হাইকোর্টে খালাস পাওয়া আসামি ইফতেখার বেগ ঝলককে আমৃত্যু কারাদণ্ড ও খালাস পাওয়া অপর আসামি মোহাম্মদ আলী মুন্নাকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছেন সর্বোচ্চ আদালত। আসামি মোহাম্মদ আলী মুন্না জামিনে থাকায় তাকে ৩০ দিনের মধ্যে আত্মসমর্পণ করতে বলা হয়েছে।
মঙ্গলবার (৪ জুন) প্রধান বিচারপতি ওবায়দুল হাসানের নেতৃত্বাধীন আপিল বিভাগের চার সদস্যের বিচারপতির বেঞ্চ এ রায় দেন। বেঞ্চের অপর তিনজন হলেন, বিচারপতি এম. ইনায়েতুর রহিম, বিচারপতি মো. আবু জাফর সিদ্দিকী ও বিচারপতি জাহাঙ্গীর হোসেন।
এর আগে, রাজধানীর সূত্রাপুরের আশিকুর রহমান খান অপু হত্যা মামলায় হাইকোর্টের রায়ের বিরুদ্ধে আসামি ও রাষ্ট্রপক্ষের দায়ের করা আপিল আবেদনের ওপর শুনানি শেষ হয়। এ বিষয়ে রায় ঘোষণার জন্য ৪ জুন ঠিক করেন সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগ।
উভয়পক্ষের শুনানি নিয়ে মঙ্গলবার (২১ মে) প্রধান বিচারপতি ওবায়দুল হাসানের নেতৃত্বাধীন আপিল বিভাগের চার সদস্যের বিচারপতির বেঞ্চ রায়ের জন্য এ দিন ঠিক করেন।
আদালতে আসামি পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী সারোয়ার আহমেদ। আর রাষ্ট্রপক্ষে শুনানি করেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল সারওয়ার হোসেন বাপ্পী। তারই ধারাবাহিকতায় আজ রায় ঘোষণা করা হলো।
রাজধানীর সূত্রাপুরের আশিকুর রহমান খান অপু হত্যা মামলায় বিচারিক আদালতের দেওয়া দুই আসামির ফাঁসির দণ্ড বহাল রাখেন হাইকোর্ট। তবে দণ্ডপ্রাপ্ত চারজনের মধ্যে দুইজনকে খালাস দেন উচ্চ আদালত। বাকি দুইজন পলাতক থাকায় তাদের বিষয়ে কোনো মন্তব্য করেননি আদালত।
এ মামলার ডেথ রেফারেন্স এবং আসামিদের জেল আপিল ও আপিলের চূড়ান্ত শুনানি নিয়ে ২০১৮ সালে হাইকোর্টের বিচারপতি রুহুল কুদ্দুস ও বিচারপতি ভীষ্মদেব চক্রবর্তীর সমন্বয়ে গঠিত বেঞ্চ এ রায় দেন। আদালতে ওই সময় রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল মনিরুজ্জামান রুবেল। তিনি বলেন, দুইজনের ফাঁসির দণ্ড বহাল রেখেছেন তথা ডেথ রেফারেন্স গ্রহণ করেন। যাবজ্জীবনপ্রাপ্ত চারজনের মধ্যে দুইজনকে খালাস দেন। দুইজন পলাতক থাকায় তাদের বিষয়ে মন্তব্য করেননি আদালত।
ওইদিন আদালতে আসামিদের পক্ষে ছিলেন মরহুম খন্দকার মাহবুব হোসেন, মনসুরুল হক চৌধুরী ও ফজলুল হক খান ফরিদ।
২০১২ সালের ১৩ মার্চ ঢাকার এক নম্বর দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালের বিচারক শাহেদ নূর উদ্দিন আশিকুর রহমান খান অপু হত্যা মামলায় দুই আসামিকে ফাঁসি ও চারজনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের আদেশ দেন। ওই রায়ে আতিক আহমেদ শিপলু নামে একজনকে বেকসুর খালাস দেওয়া হয়।
ফাঁসির দণ্ডপ্রাপ্ত আসামিরা হলেন, মঞ্জুরুল আবেদীন রাসেল ও নওশাদ হোসেন মোল্লা রবিন। হাইকোর্ট এই দুইজনের দণ্ড বহাল রেখেছেন। বিচারিক আদালতে যাবজ্জীবন কারাদণ্ডপ্রাপ্ত আসামিরা হলেন, মাহবুব আলম, মোহাম্মদ আলী মুন্না, ইফতেখার বেগ ঝলক ও বিপ্লব চন্দ্র দাস। তাদের মধ্যে হাইকোর্ট মুন্না ও ঝলককে খালাস দেন।
রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী জানান, এ খালাসের রায়ের বিরুদ্ধে তারা আপিল করবেন। বাকি দুই আসামি মাহবুব আলম ও বিপ্লব পলাতক। তাই তাদের বিষয়ে আদালত কোনো মন্তব্য করেননি। তবে রাষ্ট্রপক্ষ বলছে, আসামিরা যেহেতু আদালতের সামনে আসেনি তাই তাদের দণ্ডের বিষয়ে আদালত মন্তব্য করেননি। কিন্তু আপাতদৃষ্টিতে তাদের যাবজ্জীবন দণ্ডই বহাল রয়েছে।
রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী খালাসপ্রাপ্ত দুইজনের বিরুদ্ধে আপিল করার কথা জানান মনিরুজ্জামান রুবেল। তারই ধারাবাহিকতায় মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত ২ আসামি আপিল আবেদন করেন এবং খালাস প্রাপ্ত ২ আসামির দণ্ড চেয়ে রাষ্ট্রপক্ষ আপিল করেন। ওই আপিলের শুনানি নিয়ে আজ রায় ঘোষণার দিন ঠিক করেন সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগ।
মামলার নথি সূত্রে জানা যায়, ২০০৮ সালের ২৩ মে সন্ধ্যায় সূত্রাপুর থানার ৪/১ ওয়ারী হেয়ার স্ট্রিটের বাসা থেকে সন্ত্রাসীরা অ্যাডভোকেট রইস উদ্দিনের ছেলে নিহত অপুর ভাই আরিফুর রহমান খান সেতুকে মাথায় পিস্তল ঠেকিয়ে মারতে মারতে স্থানীয় সিলভারডেল স্কুলের মাঠে নিয়ে যায়। খবর পেয়ে সেতুর ভাই আশিকুর রহমান খান অপু ও আতিকুর রহমান খান বাপ্পী সেখানে গেলে সন্ত্রাসীরা তাদের এলোপাতাড়ি গুলি করে। এরপর তিন ভাইয়ের মৃত্যু নিশ্চিত মনে করে গুলি করতে করতে চলে যায় সন্ত্রাসীরা।
পরে স্থানীয় লোকজন আহত অবস্থায় তিন ভাইকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিলে চিকিৎসক অপুকে মৃত ঘোষণা করেন। অপর দুই ভাই প্রাণে বেঁচে গেলেও চিরতরে পঙ্গু হয়ে যান। এ ঘটনায় নিহতের বোন আতিয়া খান কেয়া বাদী হয়ে সূত্রাপুর থানায় একটি হত্যা মামলা করেন।
ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের পরিদর্শক মাকসুদুর রহমান ২০০৮ সালের ৩১ আগস্ট ওই সাত আসামির বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র দাখিল করেন। অভিযোগপত্র থেকে জানা যায়, আসামিরা ১২ লাখ টাকা চাঁদার দাবিতে এ হত্যাকাণ্ড ঘটিয়েছে। ২০০৯ সালের ১২ এপ্রিল আদালত আসামিদের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করেন।

আরও খবর

🔝