gramerkagoj
শনিবার ● ২৭ জুলাই ২০২৪ ১২ শ্রাবণ ১৪৩১
gramerkagoj
যশোর জেলা আওয়ামী লীগ সভাপতির হাতে পিপি মুকুল লাঞ্চিত
প্রকাশ : সোমবার, ১০ জুন , ২০২৪, ০৮:৫৯:০০ পিএম , আপডেট : শনিবার, ২৭ জুলাই , ২০২৪, ১০:৩৩:৫৯ এএম
কাগজ সংবাদ:
GK_2024-06-10_6667189a554d5.jpg

যশোর জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি শহিদুল ইসলাম মিলনের হাতে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল-২ এর পিপি জেলা আওয়ামী লীগের অন্যতম নেতা অ্যাডভোকেট মোস্তাফিজুর রহমান মুকুল প্রকাশ্যে শারীরিকভাবে লাঞ্চিত হয়েছেন বলে অভিযোগ উঠেছে। তিনি যশোর জেনারেল হাসপাতাল থেকে প্রাথমিক চিকিৎসা নিয়েছেন এবং বিচার চেয়ে জেলা আইনজীবী সমিতির কাছে লিখিত আবেদন করেছেন।
পুরাতন কসবা ফাঁড়িতে এস আই হেলাল, ইন্সপেক্টর রেজাউল ইসলাম ও মুজিব সড়কের বেশ কয়েকজন ছিন্নমূল হকারের সামনে রোববার রাত সোয়া দশটার দিকে এডভোকেট মুকুল এ হামলার শিকার হন বলে ওই লিখিত অভিযোগে জানিয়েছেন।
প্রত্যক্ষদর্শী হকারদের বক্তব্য এবং ভুক্তভোগী অ্যাডভোকেট মুকুল জানিয়েছেন, অনেক মহলের আপত্তির মুখেও গত রোজার ঈদের আগে ছিন্নমূল হকারদের অনুরোধে তিনি এসপি প্রলয় কুমার জোয়ার্দারের কাছে হকারদের রুটি-রুজির প্রসংগ তুলে ধরে আইনজীবী সমিতির সামনে মুজিব সড়কে কয়েকজন দরিদ্র হকারকে বসার বন্দোবস্ত করে দেন। সে সময় তিনি পুলিশকে কথা দেন, সেখানে কোনো চাঁদাবাজ সন্ত্রাসী এসে চাঁদা তুলবে না, বা কোনো ধরনের উৎপাত করবে না। সেই থেকে মুজিব সড়কের ফুটপাতে ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীরা তাদের জীবিকা নির্বাহ করে আসছেন। কিন্তু হুট করে রোববার সন্ধ্যায় শাহীন নামে একজন যুবক এসে হকারদের জানায়, তাকে জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি শহিদুল ইসলাম মিলন পাঠিয়েছেন। তাকে ৫ টা দোকান দেয়ার জায়গা দিতে হবে। এই বলে সে বাবু নামে একজন হকারের বিভিন্ন জামাকাপড় সাজানো টেবিল উল্টে রাস্তায় ফেলে দিয়ে নিজের দুটো টেবিল রেখে জায়গা দখল করে চলে যায়। যাওয়ার সময় বলে যায়, ‘হয় আমাদের দোকান দিতে হবে, নইলে মাসে মাসে চাঁদা দিতে হবে।’ এরপর বাবুসহ অন্যান্য হকাররা তাদের দোকান না খুলে পুরাতন কসবা ফাঁড়িতে যান।
রাতে এস আই হেলাল ফাঁড়িতে বসে উক্ত শাহীনকে ডেকে পাঠান এবং তাকে সন্ত্রাসী কাজ না করার আহবান জানান। এসময় পরিস্থিতি জানাতে অ্যাডভোকেট মুকুলকেও আসার অনুরোধ জানান এস আই হেলাল। তিনি ফাঁড়ির ভেতরে এস আই হেলাল ও ইন্সপেক্টর রেজাউল ইসলামের সামনে ঘটনা শোনার ও বোঝার চেষ্টা করেন।
অ্যাডভোকেট মুকুলের অভিযোগ অনুযায়ী, এসময় বেশ কয়েকজনকে নিয়ে আওয়ামী লীগ সভাপতি শহিদুল ইসলাম মিলন ফাঁড়িতে ঢুকেই অকথ্য ভাষায় মুকুলকে গালিগালাজ করতে এবং কিল চড় ঘুষি ও থাপ্পড় মারতে থাকেন। এসময় উপস্থিত দুজন পুলিশ কর্মকর্তা এবং অ্যাডভোকেট মুকুল হতভম্ব হয়ে যান। পরে এস আই হেলাল ও ইন্সপেক্টর রেজাউল ইসলাম জেলা আওয়ামী লীগ সভাপতি শহিদুল ইসলাম মিলনকে নিবৃত করেন। পরে তিনি দ্রুত লোকজন নিয়ে ঘটনাস্থল ত্যাগ করেন। এ ঘটনায় প্রচন্ড লজ্জায় কাউকে কোন কিছু না বলে বেজপাড়ায় নিজ বাড়িতে চলে যান অ্যাডভোকেট মুকুল।
সোমবার দুপুরে মুকুলের আহত চেহারা এবং হাসপাতালে যাওয়া দেখে কয়েকজন কথা বললে তিনি কান্নায় ভেঙে পড়েন এবং ঘটনা জানাজানি হয়ে যায়। এ নিয়ে আইনজীবীদের মধ্যে ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া দেখা যায়। তাদের অনুরোধেই তিনি জেলা আইনজীবী সমিতিতে লিখিত অভিযোগ করেছেন বলে জানান।
এ বিষয়ে জেলা আইনজীবী সমিতির একটি সূত্র আবেদনপত্রটি গ্রহণ করার কথা স্বীকার করেছে। ক্ষুব্ধ আইনজীবীদের কয়েকজন জানিয়েছেন, এ ঘটনার প্রতিবাদে মঙ্গলবার সকালে বিক্ষোভ কর্মসূচি পালন করবে।
এদিকে, আওয়ামী লীগ সভাপতি শহিদুল ইসলাম মিলন বলেছেন, তিনি ফাঁড়িতেই যাননি। ফলে এঘটনার সাথে তার কোনো সম্পর্ক নেই। তিনি চ্যলেঞ্জ ছুড়ে বলেছেন তাকে ঘটনাস্থলে দেখেছে এমন কোনো প্রমাণ কেউ দিতে পারবেনা। তবে উকিল বারের সামনে মুকুল দোকান বসাতে দিয়ে টাকা আদায় করেন বলে তিনি উল্টো অভিযোগ তুলেছেন। পুরাতন কসবা ফাড়ির ইনচার্জ রেজাউল করিম জানিয়েছেন, তার অফিসের বাইরে ঘটনা ঘটেছে বলে তিনি শুনেছেন, তবে বিস্তারিত কিছু জানেন না।

আরও খবর

🔝