gramerkagoj
বৃহস্পতিবার ● ৩০ অক্টোবর ২০২৫ ১৫ কার্তিক ১৪৩২
gramerkagoj
শিরোনাম
শিরোনাম ড্যাবের কেন্দ্রীয় নেতৃত্বে যশোরের চার কৃতি সন্তান যশোরে জেলা প্রশাসক গোল্ডকাপ ফুটবল টুর্নামেন্টের প্রস্তুতিমূলক সভা অনুষ্ঠিত জাতীয় বাস্কেটবল প্রতিযোগিতার দ্বিতীয় দিনে দু’টি ম্যাচ সম্পন্ন ব্যাটিংয়ের শীর্ষে রোহিত ॥ বোলিংয়ে রশিদ বাংলাদেশের বিপক্ষে খেলতে ঢাকায় আসছে না আফগানিস্তান-মিয়ানমার মাদারীপুরে নিরাপদ অভিবাসন বিষয়ক সংবাদ সম্মেলন রাজশাহী সিটি কর্পোরেশনের শ্রমিকদের বিক্ষোভ ঝালকাঠিতে ১০ বছর পর মিথ্যা মামলা থেকে অব্যাহতি পেলেন ৪৭ আসামি জুলাই সনদ বাস্তবায়নের সুপারিশে প্রতারণা হয়েছে, দ্রুত সংস্কারের দাবি নদীভাঙা মানুষের কথা ভাবি না, ভাবি শুধু মেগা প্রকল্প
মতামত
জিলহজ্জ মাসের সর্বাধিক গুরুত্বপূর্ণ আমল
প্রকাশ : মঙ্গলবার, ১১ জুন , ২০২৪, ০৯:৩৫:০০ পিএম
এইচ এম জহিরুল ইসলাম মারুফ:
GK_2024-06-11_66686ef78ef65.jpg

হজ্ব ইসলামের একটি গুরুত্বপূর্ণ বিধান এবং মর্যাদাশীল ইবাদত। ইসলামের মৌলিক পাঁচ ভিত্তির একটি এবং শিআরে ইসলামের অন্যততম প্রধান শিআর। হজ্বের মূল কার্যক্রম পালিত হয় মূলত এ (জিলহজ্জ) মাসেই। আর তাই এদিকে সম্বন্ধিত করে এ মাসের নাম যুল হিজ্জাহ বা যিলহজ্ব মাস। নানাবিধ শিক্ষা, তত্ত্ব ও তাৎপর্য ধারণকারী একটি ইবাদতের নাম ‘হজ্ব’। আল্লাহ তাআলা তাঁর সামর্থ্যবান বান্দাদের জন্য এ বিধানকে ফরয করে দিয়েছেন । আল্লাহ তায়ালা ইরশাদ করেন-
মানুষের মধ্যে যার সেখানে যাওয়ার সামর্থ্য আছে, আল্লাহর উদ্দেশ্যে ঐ গৃহের হজ্ব করা তার জন্য অবশ্যকর্তব্য। আর যে (এই নির্দেশ পালন করতে) অস্বীকার করবে তার জেনে রাখা উচিত যে, আল্লাহ দুনিয়াবাসীদের প্রতি সামান্যও মুখাপেক্ষী নন। -[আল ইমরান : ৯৭]
অতএব হজ্ব ফরয হওয়ার পর তা পালনে যথাসাধ্য প্রচেষ্টা অব্যাহত রাখা চাই। হজ্বের মতো ইবাদত আদায়ে গড়িমসি করা অন্তত মুমিনের শান হতে পারে না। যেখানে আল্লাহ তাআলা বলছেন- ‘আর যে (এই নির্দেশ পালন করতে) অস্বীকার করবে তার জেনে রাখা উচিত যে, আল্লাহ দুনিয়াবাসীদের প্রতি সামান্যও মুখাপেক্ষী নন।’ এরকম কঠোর কথা শোনার পর একজন মুমিন এ ব্যাপারে উদাসীন হয় কী করে!
মুমিন মাত্রই আল্লাহর ঘরে হাজিরা দেবার জন্যে উদগ্রীব থাকে। সে শুধু প্রতীক্ষায় প্রহর গুনতে থাকে কখন তার রব তাকে ডেকে বসবেন আর সে লাব্বাইক বলে সেই ডাকে সাড়া দেবে! শুভ্র সফেদ ধবধবে দু টুকরো কাপড় গায়ে জড়িয়ে বলবে-
তালবিয়া এর অনুবাদ :- আমি হাজির, হে আল্লাহ! আমি হাজির। আমি হাজির, আপনার কোনো শরীক নেই, আমি হাজির। নিশ্চয়ই সকল প্রশংসা ও নিআমত আপনারই এবং সকল রাজত্ব। আপনার কোনো শরীক নেই।
তারপর সে যখন রাসুলুল্লাহ সাঃ এর জবানে এই ঘোষণা শুনতে পায় :-
যে ব্যক্তি একমাত্র অল্লাহর সন্তুষ্টির জন্য হজ্ব করে এবং কোনো অশ্লীল কাজ বা গুনাহে লিপ্ত হয় না, সে যেন সদ্যভূমিষ্ঠ শিশুর ন্যায় নিষ্পাপ হয়ে বাড়ী ফেরে। -[সহীহ বুখারী : ১৫২১]
এরপর আবারও যখন শুনতে পায়-
মাবরূর (মকবুল) হজ্বের প্রতিদান তো কেবল জান্নাতই। - [সহীহ বুখারী : ১৭৭৩, সহীহ মুসলিম : ১৩৪৯]
তখন ঈমানের ছিটেফোঁটা ধারণকারী একজন মুমিনের মনের মাঝে যে কী তোলপাড় সৃষ্টি হয় সেই কাবার পানে ছুটে যাওয়ার জন্য, কীভাবে যে সে নিজেকে সম্বরণ করে- তা সেই কাবার রবই ভালো জানেন! আল্লাহ তাআলা সকল মুমিন মুমিনাতকে হজ্জে মাবরূর নসীব করুন এবং বারবার নসীব করুন- আমীন।
আম্বিয়া কেরামের পুণ্য স্মৃতি বিজড়িত সেই হিজায ভূমি! সেই মিনা, আরাফা, মুযদালিফা, সেই নামায দুআ রোনাযারী, সেই মাতাফ তাওয়াফ-সাঈ, সেই কালো ঘর, কালো গেলাফ, কালো পাথর, বাইতুল্লাহ, হাতীম ও মাকামে ইবরাহীম; আহ্! যমযম, মুলতাযাম আর মীযাবে রহমত, তারপর চির স্বপ্নের সোনার মদীনায় হাজিরী, সেই রওযায়ে আতহার, বাবুস সালাম, রিয়াযুল জান্নাহ; সেই জান্নাতুল বাকী, জান্নাতুল মুআল্লা; উহুদ খন্দক হোদাইবিয়া... এ স্মৃতি চিহ্নগুলো একজন মুমিনের হৃদয়গভীরে কী আন্দোলন সৃষ্টি করে, কীভাবে যে বিষয়গুলো তার দেহমন ছুঁয়ে যায়, তার ঈমান-একীন আমল-আখলাককে যে কীভাবে শিহরিত করে...!
বস্তুত হজ্বের প্রতিটি আমলের সাথে যুক্ত রয়েছে ত্যাগ, কুরবানী ও সমর্পণের শিক্ষা। আল্লাহর হুকুমের সামনে নিজেকে বিলীন করার দীক্ষা। ইবরাহীমী মিল্লাতে উজ্জীবিত হওয়ার তারবিয়াত। সর্বপরি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের সুন্নত আঁকড়ে ধরা ও যিন্দা করার তালীম। মূলত হজ্ব এমন একটি মহিমান্বিত আমল, যা দুই চার কথায় বলে দেবার মতো নয়। যবানে নবুওতে এককথায় যা উচ্চারিত হয়েছে সংক্ষিপ্তভাবে; কেবল এতটুকুই মনে রাখতে পারি :-
মাবরূর (মকবুল) হজ্বের প্রতিদান তো কেবল জান্নাতই। - [সহীহ বুখারী : ১৭৭৩, সহীহ মুসলিম : ১৩৪৯]
আল্লাহ তাআলা আমাদেরকে সেই খোশ নসীব হিসেবে কবুল করুন। আমীন।

# লেখক: মুহাদ্দিস, জামিয়া ইসলামিয়া মারকাযুদ দ্বীন, তিতাস, কুমিল্লা।

আরও খবর

🔝