gramerkagoj
শনিবার ● ১২ জুলাই ২০২৫ ২৮ আষাঢ় ১৪৩২
gramerkagoj
শিক্ষা বোর্ড কর্তৃপক্ষকে আরো সতর্ক হতে হবে
প্রকাশ : বুধবার, ১৯ জুন , ২০২৪, ১২:৩১:০০ পিএম , আপডেট : শনিবার, ৫ জুলাই , ২০২৫, ১০:২৮:১৩ এএম
শ্রাবণী সুর:
GK_2024-06-19_66727b662aee0.jpg

লেখাটা আরো আগে লিখব ভেবেছিলাম কিন্তু সময়ের অভাবে একটু দেরী হল। ঘটনাটা জিলা স্কুলের একটি মেধাবী শিক্ষার্থীকে কেন্দ্র করে। সৌভিক দাস স্বচ্ছ ২০২৪-এ এসএসসি পরীক্ষা দিয়েছিল। সে যশোর জিলা স্কুলের ভালো ছাত্রদের শিরমনি। তার নম্বর ফর্দ আমি দেখেছি। নম্বর ফর্দে দেখা যাচ্ছে পদার্থ বিজ্ঞানে সে ফেল করেছে। ১২ই মে সৌভিকের পাশ করে আনন্দ উৎসবে মেতে ওঠার কথা ছিল তা তো হয়নি বরং বিভিন্ন মহল থেকে তার বিরুদ্ধে কুৎসা রটনা করেছে তারই অনেক গুরুজন ও প্রিয়জনেরা। কেউ কেউ বলেছেন গান-বাজনা করে কবিতা আবৃত্তি করে তাই পাশ করেনি। অন্যরা যেন না করে তার জন্য সৌভিককে উদাহরণ বানানো হয়েছে। অনেকে আরো অনেক রকম কটু কথা বলেছে। সৌভিক মাথা নিচু করে কেঁদেছে। তার বাবা যশোরের জেলা শিশু বিষয়ক কর্মকর্তা সাধন দাস জানেন ও মনেপ্রাণে মানেন তার ছেলে ফেল করতে পারে না। তাই বিধিমত রি-কল করলেন খাতা।
সৌভিকের একই কথা "পদার্থবিদ্যায় আমি ৯৮ পাব ফেল করলাম কি করে?"
বাবার ছুঁড়ে দেওয়ার চ্যালেঞ্জ সৌভিকের চ্যালেঞ্জ। মাধ্যমিক উচ্চমাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ড থেকে কয়েকদিন আগে রি কলের রেজাল্ট বেরুলো। সৌভিকের কথাই সঠিক সৌভিক physics 98 পেয়েছে। তাহলে??? একটা মাস সৌভিক আনন্দ করতে পারল না, সব আনন্দ থেকে বঞ্চিত হল কবিতা করার অপরাধে ফেল করার দায় নিতে হলো, মিথ্যা অপবাদ মাথায় নিতে হলো। ভালো কলেজে ভর্তি হবার সুযোগ হাতছাড়া হলো। সৌভিকের এসএসসি পাশের পরে যে প্ল্যান গুলো ছিল বাস্তবায়ন হলো না সৌভিকের গোটা পরিবার একটি মাস মাথা নিচু করেই অপমানিত লজ্জিত হয়ে লোকচক্ষুর অন্ধকারে কাটাতে হলো কেন? তরুণ সমাজের উজ্জ্বল নক্ষত্র প্রতিনিধি সৌভিক কোন অঘটন ঘটাই নি সেটাই আমাদের সৌভাগ্য। যদি ঘটিয়ে ফেলতো কোন অঘটন তার দায় তাহলে কে নিত? কার কাজের ভুলে সৌভিক এক মাস পরিবারসহ যে পরিমাণ লাঞ্ছিত হল এই অপমান গুলোর ক্ষত সারাবে কে? যে ছেলে প্রতিটি সাবজেক্টে ৯০ এর উপরে নম্বর পায় , তার যখন একটি ঘর ফাঁকা থাকে বা দেখা যায়" F" হলো তখন উচিত ছিল ফলাফল প্রকাশের আগে ওইরকম সব রেজাল্টের ঘর গুলো ভালো করে চেক করা। সৌভিক সহ গোটা পরিবার একমাস কষ্ট পেল তাই মাধ্যমিক উচ্চমাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ড কর্তৃপক্ষের কাছে, আমার সবিনয়ে নিবেদন ডাটা এন্ট্রির পর যে সমস্ত শিক্ষার্থী প্রত্যেক সাবজেক্টে আশির উপরে নাম্বার পেয়ে কোন কারনে একটিতে ডাটা এন্ট্রি মিসিং হতেই পারে তারজন্য রি চেক করবার "নতুন করে দক্ষ ডাটা ইনপুট দিতে পারা কম্পিউটার শিক্ষকদের নিয়ে ট্যাবুলেশন কমিটি গঠন করা দরকার। তাহলে ভুল তুলনামূলক কম হবে এবং যারা জিপিএ পাঁচ পেয়ে ফেল করছে কম্পিউটার দেখাচ্ছে তাদের রিকলের খাতা দ্রুত রিচেক করে ফলাফল ঘোষনা করা। রিকলের সময়সীমা শেষ হলে তিন থেকে পাঁচ দিনের মধ্যে ফলাফল জানানো । কারণ কলেজে ভর্তির বিষয়টি মাথায় রাখতে হবে ।এরকম ভুলে মাগুরায় একটি মেয়ে আত্মহত্যা করেছে।পরে জানা গেছে মেয়েটি জিপিএ পাঁচ পেয়ে পাস করেছে। সৌভিক কোন অঘটন ঘটায়নি আত্মনিয়ন্ত্রণ করতে পেরেছে সেটা আমাদের সৌভাগ্য। ভবিষ্যতে এরকম ঘটনা আর যাতে না ঘটে শিক্ষা বোর্ড কর্তৃপক্ষকে আরো সতর্ক হতে হবে। আবারও বলব সৌভিকের মত ঘটনা কারো জীবনে না ঘটে সৌভিককে বলবো তুমি আপন গতিতে নিজের পথে চলো। তুমি প্রমাণ করেছো তোমার বিরুদ্ধে অপপ্রচার করেছে খারাপ লোক তারা দুষ্টু লোক তারা নিজেরাই অসৎ সংস্কৃতি বিরোধী দুষ্টক্ষত।কেউ তোমাকে টলাতে পারেনি ফেলাতে পারেনি ঠেলতে পারেনি।জ্যোতির্ময় সূর্যের মতো তুমি তোমার জয় দেখিয়ে দিয়েছো। জীবনে চলার পথে দুঃখ কষ্ট বাতাস আসতেই পারে তাই বলে হাল ছেড়ে বসে থাকলে তো চলবে না। এগিয়ে চলো জয় হোক জয় হোক তোমার।
লেখক: শ্রাবণী সুর
প্রধান শিক্ষক, যশোর বালিকা মাধ্যমিক বিদ্যালয়

আরও খবর

🔝