gramerkagoj
বুধবার ● ১৯ মার্চ ২০২৫ ৫ চৈত্র ১৪৩১
gramerkagoj
শিল্পী আমিনুল ইসলামের মৃত্যুবার্ষিকী আজ
প্রকাশ : সোমবার, ৮ জুলাই , ২০২৪, ১০:৪৬:০০ এএম , আপডেট : বুধবার, ১৯ মার্চ , ২০২৫, ১০:৪২:৪৮ এএম
কাগজ ডেস্ক:
GK_2024-07-08_668b6a5575289.jpg

বাংলাদেশের আধুনিক চিত্রকলা আন্দোলনের অন্যতম পথিকৃৎ শিল্পী আমিনুল ইসলাম। চিত্রকলায় তাঁর সৃজনশীলতা আর অসাধারণ মেধার স্বাক্ষর মেলে বিশ শতকের পঞ্চাশের দশকে। কেবল আঁকিয়ে নয়, প্রগতিশীল বিভিন্ন সাংস্কৃতিক আন্দোলনের সাথে যুক্ত ছিলেন তিনি। আজ এই শিল্পীর মৃত্যুবার্ষিকী।
আমিনুল ইসলাম ৭ নভেম্বর, ১৯৩১ সালে জন্মগ্রহণ করেন। তার শিক্ষাজীবন শুরু হয় ঢাকার মাহুতটুলী প্রাথমিক বিদ্যালয়ে। প্রাথমিক শিক্ষা শেষ করার পর তিনি আরমানিটোলা উচ্চ বিদ্যালয়ে ভর্তি হন। এসময়ে তিনি জাপানি, চীনা, ও ভারতীয় চিত্রশিল্পীদের কাজ অনুসরণ করতেন। তিনি জ্ঞানেন্দ্রনাথ ঠাকুরের কাজ পছন্দ করতেন। ১৯৪৭ সালে তিনি মেট্রিকুলেশন পাস করেন এবং চিত্রকলা বিষয়ে পড়াশুনার জন্য কলকাতা আর্ট কলেজে ভর্তি হতে যান। সেখানে তার জয়নুল আবেদীন, কামরুল হাসান, শফিউদ্দিন আহমেদের সাথে সাক্ষাৎ হয়। তারা তাকে পরামর্শ দেন যে তার কলকাতায় ভর্তি হওয়ার প্রয়োজন নেই কারণ ঢাকায়ই একটি আর্ট কলেজ হতে যাচ্ছে। তিনি জয়নুল আবেদীনের সাথে ঢাকায় ফিরে আসেন। ১৯৪৮ সালে নব্যপ্রতিষ্ঠিত গভর্নমেন্ট ইনস্টিটিউট অব আর্ট (বর্তমান চারুকলা অনুষদ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়) এ ভর্তি হন। ফলে তিনি ছিলেন এই প্রতিষ্ঠানের প্রথম ব্যাচের ছাত্র। হামিদুর রহমান, ইমদাদ হোসেন, ইসমাইল, আবদুল কাদের তার সহপাঠী ছিলেন। ১৯৫৩ সালে তিনি প্রথম বিভাগে স্নাতক সম্মান লাভ করেন এবং একই বছর ইতালি সরকারের বৃত্তি নিয়ে তিন বছরের জন্য ফ্লোরেন্সের আকাদেমি দেল বেল্লে আর্তে-এ উচ্চ শিক্ষা গ্রহণ করতে যান।
তাঁর বিশ্বাস ছিল, সুস্থ সংস্কৃতিই পারে সমাজের-রাষ্ট্রের পরিবর্তন ঘটাতে। স্বদেশপ্রীতি, সামাজিক দায়বদ্ধতা আর অঙ্গীকারের চেতনা তাঁর শিল্পীসত্তা আর মানসযাত্রায় প্রভাব ফেলেছিল।
আমিনুল ১৯৫৬ সালে ইতালি থেকে দেশে এসে ঢাকা আর্ট কলেজের শিক্ষক হিসাবে যোগদান করেন। ১৯৭৮ সালে তিনি আর্ট কলেজের অধ্যক্ষ হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। ১৯৮৩ সালে নির্দিষ্ট সময়ের পূর্বেই তিনি শিক্ষকতা থেকে স্বেচ্ছায় অবসর নেন। তিনি প্রধানত তেল ও জলরং এবং মোজাইক, ম্যুরাল, কোলাজ ও অন্যান্য মাধ্যমে কাজ করেছেন।
তাঁর আঁকা বিভিন্ন ছবির মধ্যে উল্লেখযোগ্য ‘কিউ’, ‘বর্ষা’, ‘জেলের স্বপ্ন’, ‘দুটি মুখ’, ‘শিকার’, ‘ফ্লোরেন্স’, ‘নারী ও কবুতর’, ‘নবান্ন’, ‘দুর্গা ও শিব’, ‘ইন বন্ডেজ’, ‘পাখি নিয়ে মেয়ের খেলা’ ইত্যাদি। তিনি তাঁর শিল্পকর্ম চিত্রকলায় বিশেষ অবদানের জন্য শিল্পকলা একাডেমি পুরস্কার-১৯৭৬, একুশে পদক-১৯৮১, বাংলাদেশ চারুশিল্পী সংসদ সম্মাননা-১৯৮৫, স্বাধীনতা পুরস্কার-১৯৮৮ সহ অনেক পুরস্কার ও সম্মাননা লাভ করেন।
আমিনুল ইসলাম ২০১১ সালের ৮ জুলাই বার্ধক্যজনিত কারণে ঢাকার গুলশান-২ তার নিজ বাসভবনে মৃত্যুবরণ করেন। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় জামে মসজিদে জুমার নামাজের পর তার জানাজার পর তাকে বনানী কবরস্থানে দাফন করা হয়।

আরও খবর

🔝