শিরোনাম |
পরিবেশের জন্য ক্ষতিকর বস্তুগুলোর মধ্যে প্লাস্টিক অন্যতম। শুধু পরিবেশ বিপর্যয় নয়, ক্যান্সারের মতো মারাত্মক রোগ সৃষ্টিতেও প্লাস্টিকের ভূমিকা আছে। সর্বোপরি মানুষের জন্য ক্ষতিকর এই প্লাস্টিক আমাদের চারপাশে খুঁজলে পাওয়া যায় অহরহ। পচনশীল না হওয়ায় এগুলো পরিবেশের জন্য হুমকি হয়ে দাঁড়িয়েছে।
অন্যদিকে গাছ আমাদের অক্সিজেন দেয়। দিন দিন গাছের সংখ্যা কমে যাচ্ছে। বাড়ছে প্লাস্টিকের ব্যবহার। এ বিষয়ে সচেতনতা তৈরিতে অভিনব এক আয়োজন করেছেন টিফিনের টাকায় পরিচালিত স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন ঐক্য-বন্ধন।
বুধবার সকাল এগোরোটাই যশোরের মণিরামপুর উপজেলার রোহিতা সরকারি প্রাইমারি স্কুলের শিক্ষার্থীদের সচেতন করতে ঐক্য-বন্ধনের আয়োজনটি ছিল অন্য রকম। সম্প্রতি ‘প্লাস্টিক দাও, গাছের চারা নাও’ এমন শিরোনামের এই আয়োজনে শিক্ষার্থীদের উপস্থিতি ছিল চোখে পড়ার মতো। আয়োজকদের সবাই কিশোর-তরুণ শিক্ষার্থী। আর প্লাস্টিক জমা দিয়ে গাছের চারা নিতে আসা শিক্ষার্থীরা ছিল শিশু। প্লাস্টিকের বিনিময়ে গাছ কর্মসূচিতে দুই’শ চারা গাছ বিতরণ করা হয়েছে। এর মধ্যে রয়েছে রাধাচূড়া, পেঁয়ারা, কাঞ্চন, জলপাই, বকুল, বেলি, কদবেল, বয়রা, হরিতকী, আমলকিসহ বিভিন্ন প্রজাতির চারা গাছ।
ঐক্য-বন্ধনের বন্ধুরা শিক্ষার্থীদের থেকে প্লাস্টিকগুলো বুঝে নেন, বিনিময়ে প্রত্যেককেই একটি করে গাছের চারা উপহার দেন। প্রতিটি শিক্ষার্থীকে তারা প্লাস্টিকের নানা অপকারিতার কথা বুঝিয়ে বলেন। পরিবেশের জন্য, আমাদের অক্সিজেনের জন্য গাছের উপকারিতার কথা জানান। শিশুরাও মনোযোগ দিয়ে তাদের কথা শোনে।
তৃতীয় শ্রেণি পড়ুয়া জাহিদ জানায়, প্লাস্টিকের জন্য আমাকে বেশি দূর যেতে হয়নি। স্কুলে আসার পথে আমি অনেক প্লাস্টিক পেয়েছি। সেগুলো সংগ্রহ করে আমি গাছ নিয়েছি। এমন ব্যতিক্রমধর্মী কর্মসূচির জন্য অভয়ারণ্যকে সাধুবাদ জানাই।
রোহিতা সরকারি প্রাইমারি স্কুলের প্রধান শিক্ষিকা রেবতি রায় জানান, প্লাস্টিকের বিনিময়ে গাছ দেয়া একটি মহৎ কাজ। প্লাস্টিক পরিবেশের জন্য ক্ষতিকর। তাই, পরিবেশ রক্ষায় আমাদের বেশি বেশি গাছ লাগাতে হবে এবং প্লাস্টিক পণ্যের বিপরীত পরিবেশ বান্ধব পণ্য সামগ্রী ব্যবহার করতে হবে। চারা গাছ রোপণের পর গাছের যতœ করতে হবে।
ঐক্য-বন্ধনের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি মাহমুদুল হাসান সোহাগ জানান, বর্তমান দেশের তাপমাত্রা বৃদ্ধি পাচ্ছে, জনজীবন ও জীববৈচিত্র্য হুমকির সম্মুখীন। এই তাপমাত্রা বাড়ার কারণ হলো দেশের বন ধ্বংস ও দেশের গাছপালা কেটে ফেলা হচ্ছে, বিভিন্ন শিল্প কারখানা গড়ে তোলা হচ্ছে কিন্তু সেই পরিমাণ বৃক্ষ রোপন করা হচ্ছে না। আর তাই পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষা ও সামাজিক বনায়ন বৃদ্ধির লক্ষ্যে এই উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়েছে।
এসময় উপস্থিত ছিলেন রোহিতা সরকারি প্রাইমারি স্কুলের সহকারী শিক্ষক রাণী কর্মকার, স্কুলের ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি ইউপি সদস্য মেহেদী হাসান, সদস্য সচিব আশিকুজ্জামান, মরিয়াম আক্তার স্মৃতি , সুরাইয়া আক্তার, রাজ রায়, রাহিব হাসান প্রমুখ।