gramerkagoj
বুধবার ● ১৯ মার্চ ২০২৫ ৫ চৈত্র ১৪৩১
gramerkagoj
শিশু আয়েশা হত্যা মামলায় সৎ মায়ের বিরুদ্ধে চার্জশিট
প্রকাশ : বৃহস্পতিবার, ১ আগস্ট , ২০২৪, ১০:০৩:০০ পিএম
কাগজ সংবাদ:
GK_2024-08-01_66abb218466d5.jpg

যশোর শহরের খড়কি ধোপাড়ার শিশু আয়েশা খাতুন হত্যা মামলায় সৎ মা পারভীন সুলতানাকে অভিযুক্ত করে চার্জশিট দিয়েছে পুলিশ। মামলার তদন্ত শেষে আদালতে এ চার্জশিট জমা দিয়েছেন তদন্তকারী কর্মকর্তা এসআই আব্দুর রাজ্জাক।
আটক পারভীন সুলতানা সাতক্ষীরা শ্যামনগরের নুরনগর এলাকার আব্দুল্লাহ আলম মামুনের মেয়ে ও শহরের খড়কি ধোপাপাড়ার লরেন্স রায়ের বাড়ির ভাড়াটিয়া ওয়াসকুরুনী ওরফে পিন্টুর দ্বিতীয় স্ত্রী।
মামলার অভিযোগে জানা গেছে, রাজমিস্ত্রি পিন্টু তার প্রথম স্ত্রী-সন্তান নিয়ে শহতরতলীর খোলাডাঙ্গায় বাস করতেন। দ্বিতীয় বিয়ে করে খড়কি ষোষপাড়ায় পারভীন সুলতানাকে নিয়ে বসবাস করেন। প্রথম স্ত্রী দ্বিতীয় বিয়ের বিষয়টি মীমাংসায় ব্যর্থ হয়ে ছেলে ও মেয়ে আয়েশাকে তার পিতার কাছে রেখে যান। পারভীন সুলতানা প্রথমে আগের পক্ষের ছেলে-মেয়ে লালনপালনে অপরাগতা প্রকাশ করলেও পরে তা মেনে নিতে বাধ্য হন। শিশু আয়েশা কিছুটা মানসিক ভারসাম্যহীন ছিল। এ কারণে নিজের কথা শুনাতে বাধ্য করতে তার উপর নির্যাতন করত তার সৎমা। বিষয়টি জানাজানির পর পিন্টুকে তার ছেলে ও মেয়েকে তাদের মায়ের কাছে দিয়ে আসতে চাপ দিত পারভীন সুলতানা। পিন্টু রাজী না হওয়ায় তাদের মধ্যে প্রায় ঝগড়া বিবাদ হতো। এ কারণে ক্ষুব্ধ পারভীন সুলতানা শিশু আয়েশাকে হত্যার পরিকল্পনা করেন।
চলতি বছরের ১৩ জানুয়ারি সকাল ৭টার দিকে পিন্টু কাজের সন্ধানে বাইরে যান। এই সুযোগে আয়েশাকে হত্যার উদ্দেশ্যে তার ভাইকে খেলা করার কথা বলে বাড়ির বাইরে পাঠিয়ে দেন পারভীন সুলতানা। এরপর দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে পূর্ব পরিকল্পিতভাবে আয়েশাকে কিলঘুষি ও খামচি দিয়ে জখমসহ ঝাড় দিয়ে মারধর করেন পারভীন সুলতানা। চুল ধরে ঘরের ওয়ালের সাথে তার মাথায় আঘাত করা হয়। মারধরের এক পর্যায়ে আশেয়া অজ্ঞান হয়ে পড়ে। তখন ঘটনাটি ভিন্নখাতে নিতে অসুস্থ হয়ে পড়েছে এই বলে আয়েশাকে হাসপাতালে নিয়ে যান পারভীন সুলতানা। হাসপাতালে নেওয়া হলে কর্তব্যরত চিকিৎসক আয়েশাকে মৃত ঘোষণা করেন।
পরবর্তীতে পুলিশ মরদেহের সুরতহাল রিপোর্ট তৈরি করতে গিয়ে তার শরীরের বিভিন্ন স্থানে আঘাতের চিহ্ন দেখতে পায়। খবর পেয়ে নিহতের পিতা পিন্টু হাসপাতালে যান। ময়নাতদন্ত শেষে দাফনের জন্য তিনি মেয়ের মরদেহ নিয়ে যান। দাফনের পর মামলা করার কথা ছিল পিন্টুর। কিন্তু তিনি মামলা করতে না আসায় ১৫ জানুয়ারি বিকেলে পুলিশ তার ভাড়া বাড়িতে যায়। পুলিশ এসময় শিশুর সৎমা পারভীন সুলতানাকে আটক ও মোবাইল ফোন জব্দ করে। পরে মোবাইল ফোনের গ্যালারিতে শিশু আয়েশার উপর নির্যাতনের কিছু ছবি পায় পুলিশ। এ ঘটনায় নিহত শিশুর পিতাকে না পেয়ে পুলিশ কর্মকর্তা এসআই জয়ন্ত সরকার বাদী হয়ে হত্যা মামলা করেন।
এ মামলার দীর্ঘ তদন্ত শেষে আটক আসামির দেয়া তথ্য ও সাক্ষীদের বক্তব্যে হত্যার সাথে জড়িত থাকায় পারভীন সুলতানাকে অভিযুক্ত করে আদালতে এ চার্জশিট জমা দিয়েছেন তদন্তকারী কর্মকর্তা। চার্জশেট অভিযুক্ত পারভীনকে আটক দেখানো হয়েছে।

আরও খবর

🔝