শিরোনাম |
বাংলাদেশে শিক্ষার প্রথম ধাপ প্রাথমিক শিক্ষা। সেক্ষেত্রে প্রাথমিক শিক্ষার গুণগত মানোন্নয়ন খুবই জরুরি। আর এই মানোন্নয়নে আধুনিক শিক্ষকের ভূমিকা অনস্বীকার্য। আজকের শিশু আগামী দিনের আধুনিক বাংলাদেশের প্রতিচ্ছবি। উন্নত, সমৃদ্ধ ও আধুনিক বাংলাদেশ বিনির্মাণ করতে হলে উন্নত চিন্তাজগতের সাথে পরিচয় করিয়ে দিতে হবে।
প্রাথমিক শিক্ষা একটি শিশুর জীবনে ব্যক্তিত্বের বিকাশ ও জ্ঞান অর্জনের মূল ভিত্তি তৈরি করে। সে কারণে প্রগতিশীল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি নির্ভর আধুনিক সমাজ বিনির্মাণে সব শিশুর মানসম্মত প্রাথমিক শিক্ষা নিশ্চিত করা এখন সময়ের দাবি। আর এই কাজটি নিপুণভাবে সম্পাদিত হয় প্রাথমিক বিদ্যালয়ে। এজন্য প্রয়োজন একজন দক্ষ, অভিজ্ঞ ও দেশপ্রেমিক আধুনিক শিক্ষকের। পরিবর্তনশীল বিশে^র সাথে তালমিলিয়ে আমাদের পরবর্তী প্রজন্মকে আধুনিক বিজ্ঞান মনস্ক ও প্রযুক্তিতে পারদর্শী করে গড়ে তোলার লক্ষ্যে চালু করা হয়েছে ডিজিটাল হাজিরা, পাঠদানে মাল্টিমিডিয়ার ব্যবহার, ডিজিটাল ল্যাব স্থাপন ইত্যাদি আরও গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ। বাস্তবিক অর্থেই গুণগত ও মানসম্মত শিক্ষা এখন অপরিহার্য হয়ে উঠেছে।
জাতীয় উন্নয়ন, অর্থনৈতিক সম্মৃদ্ধি অর্জন ও গতিশীল জ্ঞানভিত্তিক সমাজ গঠনে গুণগত প্রাথমিক শিক্ষা আলোকবর্তিকা হিসেবে কাজ করতে পারে। বিদ্যালয়ের আনন্দঘন পরিবেশ, শিক্ষকের দক্ষতা ও শিখন শেখানো কার্যক্রমের ওপর। এক্ষেত্রে শিক্ষকের শুদ্ধাচার, আন্তরিকতা ও পেশাগত জ্ঞান আবশ্যক। শিশুদের মধ্যে শিক্ষকের অনুকরণ করার প্রবণতা লক্ষ্য করা যায়। অনেক সময় শিক্ষককে দেখলেই শিশুরা আনন্দে আত্মহারা হয়ে ওঠে। আবার কখনো ভীত সন্ত্রস্ত হয়ে পড়ে। একজন আদর্শ শিক্ষকের কাজ শিশুদের মনের সব ভীতি দূর করে মুক্ত চিন্তার বহিঃপ্রকাশ ঘটিয়ে সঠিক পথে পরিচালিত করা।
প্রাথমিক স্তরেই ভদ্রতা, নম্রতা, শিষ্টাচার, দেশপ্রেম, পরোপকারিতা ও ন্যায়পরায়নতা শেখানো শিক্ষকের একান্ত দায়িত্ব। আনন্দময় ও শিশুবান্ধব আনন্দঘন পরিবেশে পাঠদান নিশ্চিতকল্পে শিক্ষককে হতে হবে প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত ও দক্ষ। প্রাথমিক বিদ্যালয় থেকেই শিক্ষার্থীদের মধ্যে বিজ্ঞান চর্চা ও প্রযুক্তির ব্যবহারে আগ্রহী ও পারদর্শী করে তুলতে হবে।
শিক্ষককে প্রযুক্তি ব্যবহারে দক্ষ ও পারদর্শী হতে হবে। তাকে আধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহার করে যোগাযোগের দক্ষতা বৃদ্ধি করতে হবে।
শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদের মধ্যে চেতনার সেতুবন্ধন রচনা করবেন একজন শিক্ষক। দ্রুত পরিবর্তনশীল বিশে^র চ্যালেঞ্জ মোকাবেলা করতে সুশিক্ষিত, স্মার্ট জনশক্তি প্রয়োজন। আর এ স্মার্ট জনশক্তি তৈরিতে গুণগত প্রাথমিক শিক্ষা অর্জনের বিকল্প নেই। বিশ^ায়নের যুগে টিকে থাকতে বিশ^মানের নাগরিক হিসেবে আমাদের পরবর্তী প্রজন্মকে গড়ে তুলতে হলে প্রাথমিক বিদ্যালয় থেকেই শিশুদের জ্ঞান-বিজ্ঞান ও শিল্প সংস্কৃতির চর্চা অব্যাহত রাখতে হবে। আর শিশুদের মধ্যে এসব গুণাবলীর সমাবেশ ঘটাতে শিল্প-সংস্কৃতি, সাহিত্য জ্ঞানসম্পন্ন, বিজ্ঞান মনস্ক ও দক্ষ, আধুনিক প্রযুক্তির ব্যবহারে দক্ষ এবং পেশাগত জ্ঞানে প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত অভিজ্ঞ ও পারদর্শী একজন সব্যসাচী শিক্ষক।
# লেখক : সহকারী শিক্ষক, জিরাট সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়।