gramerkagoj
বুধবার ● ১৬ অক্টোবর ২০২৪ ১ কার্তিক ১৪৩১
gramerkagoj
Ad for sale 100 x 870 Position (1)
Position (1)

❒ পুলিশের লুণ্ঠিত অস্ত্র উদ্ধারে জোর দেয়া হচ্ছে

অস্ত্র উদ্ধার ও সন্ত্রাসী আটকে যৌথ অভিযান চলমান গা ঢাকা দিয়েছে যশোরের দাগী অপরাধীরা

❒ অস্ত্র গোলাবারুদ মাদক পেলেই সংশ্লিষ্ট ব্যক্তি আটক

প্রকাশ : বুধবার, ৪ সেপ্টেম্বর , ২০২৪, ১১:৫৭:০০ পিএম
দেওয়ান মোর্শেদ আলম:
GK_2024-09-04_66d8836985cc7.png

৩ সেপ্টেম্বর রাত ১২ টা পর্যন্ত লাইসেন্স স্থগিতকৃত বৈধ অস্ত্র জমা দেয়ার বেধে দেয়া সময় পার হওয়ার পরপরই যশোরে শুরু হয়েছে যৌথ অভিযান। সেনাবাহিনী, পুলিশ ও বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি) সমন্বয়ে এই অভিযান চলছে। অস্ত্র উদ্ধার ও সন্ত্রাসী আটকে চলমান যৌথ অভিযানে অস্ত্র-গোলাবারুদ-মাদক পেলেই আটক করা হচ্ছে। পুলিশের লুণ্ঠিত অস্ত্র উদ্ধারে জোর দেয়া হচ্ছে।
এছাড়া জমা না দেয়া লাইসেন্স স্থগিতকৃত অস্ত্রের মালিকদের জেরালোভাবে খোঁজা হচ্ছে। ৩ সেপ্টেম্বর দিবাগত মধ্যরাত থেকে ৪ সেপ্টেম্বর দিনভর ও রাতে যশোরের বিভিন্ন এলাকায় অভিযান চালিয়েছে যৌথবাহিনী। সেনা টহলসহ বিভিন্ন বাহিনীর গাড়ি লক্ষ্য করা গেছে অনেক স্পটে। এই চলমান যৌথ অভিযানের খবরে যশোরের দাগী অপরাধীরা গা ঢাকা দিয়েছে নিজ নিজ এলাকা থেকে।
হত্যাকান্ড, অস্ত্রের মহড়া দিয়ে হত্যাচেষ্টা, ছিনতাই, চাঁদাবাজিসহ নানা সন্ত্রাসী অপতৎপরতায় জড়িতদের আটক করা হতে পারে আঁচ করে সটকে পড়েছে অনেকে। যশোর শহর ও শহরতলী ও জেলার বিভিন্ন এলাকার শতাধিক দাগী অপরাধী আত্মগোপনে গেছেন। রাজধানীসহ দেশের বিভিন্ন জেলা শহরে আত্মীয় স্বজন এবং বন্ধুবান্ধবের বাড়িতে অবস্থান করছেন তারা।
গতকাল সন্ধ্যায় যশোর কেতোয়ালি থানার অফিসার ইনচার্জ ও সদরে দায়িত্বপ্রাপ্ত সেনাবাহিনীর ওয়ারেন্ট অফিসারের সাথে অভিযানের ব্যাপারে কথা বললে তারা জানান, অভিযান চলমান। অস্ত্র উদ্ধার ও সন্ত্রাসী আটক সংক্রান্ত তথ্য এখনই দেয়া যাচ্ছে না। তবে অভিযান চলমান রয়েছে।
স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের নির্দেশনা অনুযায়ী বেধে দেয়া ৯ দিন সময় শেষ হয় ৩ সেপ্টেম্বর রাত ১২ টায়। প্রজ্ঞাপন অনুযায়ী জমা প্রদানের জন্য যশোর জেলায় চাহিত অস্ত্রের সংখ্যা ৩শ’৫০টির মধ্যে জেলার ৮ থানায় জমা পড়ে দুশোটি। চাহিত অস্ত্রের মধ্যে শতাধিক অস্ত্র জমা না পড়ায় ওই শতাধিক অস্ত্রের মালিক অবৈধ অস্ত্রধারী হিসেবে গন্য হয়েছে। আর সারা দেশেই একই অবস্থা। সব অস্ত্র জমা না পড়ায় দেশজুড়ে শুরু করা হয়েছে যৌথ অভিযান। ঘড়ির কাঁটায় ঠিক রাত ১২ টা ১ মিনিট থেকে শুরু হয় এ অভিযান। জমা না পড়া অস্ত্র উদ্ধার, পুলিশের লুণ্ঠিত অস্ত্র উদ্ধার ও জড়িতদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে মাঠে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। পাশাপাশি দাগী সন্ত্রাসী মাদক নিয়ন্ত্রণে চোরাচালানে স¤পৃক্ত গডফাদারদেরও ধরার চেষ্টা করা হচ্ছে এ অভিযান থেকে।
তথ্য মিলেছে, মূলত বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের একেবারে শেষে এসে থানা, ফাঁড়িসহ পুলিশের বেশ কিছু স্থাপনায় হামলা, ভাংচুর ও অগ্নিসংযোগ করা হয়। লুট করা হয় পুলিশের কয়েক হাজার অস্ত্র ও কয়েক লাখ গোলাবারুদ। এসব অস্ত্র আইনশৃঙ্খলা বাহিনীসহ সবার জন্য হুমকিস্বরূপ। এজন্য অবৈধ অস্ত্র উদ্ধারে ৪ সেপ্টেম্বর থেকে জোরেসোরে মাঠে নেমেছে যৌথ বাহিনী। পুলিশের লুণ্ঠিত অস্ত্র উদ্ধার, স্থগিত করা কিন্তু জমা হয়নি এমন অস্ত্র জব্দ এবং অবৈধ অস্ত্র উদ্ধারসহ এর কারবারী ও ব্যবহারকারীদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে এ অভিযান থেকে। এছাড়া গণআন্দোলনে রূপ নেয়া বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে যাদের কাছে অস্ত্র দেখা গেছে, অবৈধ অস্ত্র প্রদর্শন ও নির্বিচারে গুলিবর্ষণ করেছেন এবং অস্ত্র মামলার আসামিদের ছাড় না দেয়ার লক্ষ্য নিয়েও এ অভিযান চলছে।
আরো তথ্য মিলেছে, আওয়ামী লীগ সরকারের গত ১৫ বছরের শাসনামলে বিভিন্ন সময়েই বৈধ অস্ত্রের অবৈধ ব্যবহার দেখা গেছে। বিরোধীপক্ষকে শায়েস্তা করতে আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের অনেককে অস্ত্রের প্রদর্শন করতেও দেখা গেছে। এসব ক্ষেত্রে অবৈধ অস্ত্রের পাশাপাশি বৈধ অস্ত্র ব্যবহারের অভিযোগও রয়েছে। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের বিভিন্ন পর্যায়ে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর পাশাপাশি আওয়ামী লীগের বিভিন্ন পর্যায়ের নেতাকর্মীরা অস্ত্র নিয়ে আন্দোলনকারীদের ওপর চড়াও হন। এ সংক্রান্ত বিভিন্ন ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে সে সময় ছড়িয়ে পড়ে। এসব দিক সামনে এনেও অস্ত্র উদ্ধার ও সন্ত্রাসী বিরোধী অভিযান জোরদারভাবে চলছে।
এদিকে যশোরে চলমান যৌথ অভিযানের খবরে যশোর শহর ও শহরতলী ও জেলার বিভিন্ন এলাকা থেকে গা ঢাকা দিয়েছেন দাগীরা। দলমত নির্বিশেষে এ সময় যারা আইনপ্রয়োগকারী সংস্থার চোখ ফাঁকি দিয়ে যশোরের বিভিন্ন এলাকায় চাঁদাবাজি, অস্ত্রের মহড়া ও হামলা চালিয়ে আতংকিত পরিবেশ সৃষ্টি করে তারা আত্মগোপনে গেছে। যশোর শহর ও শহরতলীর বিভিন্ন রাজনৈতিক সভা, মিছিলে ও শহরের অনেক স্পটে উপস্থিতি জানান দিয়ে উত্তপ্ত পরিস্থিতি তৈরি করা দাগীরা এলাকাতে নেই বলেও জানিয়েছেন স্থনীয়রা।
থানা সূত্রের দাবি, যশোরের বিভিন্ন ক্রাইম পয়েন্ট খ্যাত অনেক স্থানে অভিযান চললেও কাঙ্খিত দাগী অপরাধীদের পাওয়া যায়নি। অনেকের বাড়িতে ও ডেরায় অভিযান পরিচালনা করা হয়েছে।
থানা সূত্রের দাবি, অভিযানে অস্ত্র উদ্ধার ছাড়াও মাদক ব্যবসায়ী, মোস্ট ওয়ান্টেড অস্ত্রধারী সন্ত্রাসী, চাঁদাবাজ আটকের টার্গেট রয়েছে। আর তালিকায় জনপ্রতিনিধি, রাজনীতিক ও মিটিং মিছিলে যোগ দেয়া অনেক ক্যাডারও রয়েছেন।
এদিকে, অভিযানের ব্যাপারে যশোর কাতোয়ালি থানার অফিসার ইনচার্জ আব্দুর রাজ্জাক জানিয়েছেন, প্রজ্ঞাপন অনুযায়ী চাওয়া লাইসেন্স স্থগিত হওয়া অস্ত্রের সব জমা হয়নি। যারা জমা দেননি তাদের অবৈধ অস্ত্রধারী বলে গন্য করা হচ্ছে। অস্ত্র উদ্ধারে জোরালো যৌথ অভিযান চলছে। সন্ত্রাসী ও অপরাধী চক্রের মূলোৎপাটনে মাঠে নেমেছে যৌথ বাহিনী। অস্ত্র উদ্ধার ছাড়াও দাগী অপরাধীদের আটকে কৌশলী অভিযান শুরু হয়েছে। দ্রুততম সময়ের অস্ত্র উদ্ধারসহ সস্ত্রাসী আটক করে যশোরের আইনশৃংখলা আরো সুসংহত করার দৃঢ় প্রত্যয় ব্যক্ত করেছেন তিনি। তকে এক দিনের যৌথ অভিযানে অস্ত্র উদ্ধার ও আটক সংক্রান্তে কোনো তথ্য দেননি তিনি। জানিয়েছেন গতকাল সন্ধ্যা পর্যন্ত উল্লেখযোগ্য কোনো অ্যাচিপমেন্ট নেই।
এদিকে যশোর সদর উপজেলায় দায়িত্বপ্রাপ্ত সেনাবহিনীর ওয়ারেন্ট অফিসার আব্দুল ওয়াহাব জানিয়েছেন, অভিযান চলমান রয়েছে। অস্ত্র উদ্ধার ও সন্ত্রাসী আটক সংক্রান্ত তথ্য এখনই দেয়া যাবে না। যশোর সদরে উদ্ধার হওয়া অস্ত্র কোতোয়ালি থানায় জমা দেয়া হবে। আজ কালের মধ্যে যশোর শহরে সেনা ক্যাম্প করা হতে পারে বলেও তিনি জানিয়েছেন।

আরও খবর

Ad for sale 225 x 270 Position (2)
Position (2)
Ad for sale 225 x 270 Position (3)
Position (3)
🔝