gramerkagoj
সোমবার ● ২৩ জুন ২০২৫ ৮ আষাঢ় ১৪৩২
gramerkagoj
যশোর সদর সাব রেজিস্ট্রি অফিসে চলছে লুকোচুরি খেলা!
প্রকাশ : সোমবার, ২৩ সেপ্টেম্বর , ২০২৪, ০৯:৫৮:০০ পিএম
কাগজ সংবাদ:
GK_2024-09-23_66f1907568dd6.jpeg

যশোর সদর সাব রেজিস্ট্রি অফিসে একটি দলিলের টেম্পারিংয়ের ঘটনাকে কেন্দ্র করে চলছে লুকোচুরি খেলা। নকলের জন্য আবেদন করলেও দেয়া হচ্ছে না দলিলের নকল। গত কয়েক মাস ধরে লুকোচুরি খেলতে খেলতে অবশেষে টেম্পারিং করা দলিলের ঠাই হয়েছে সাব রেজিস্ট্রি অফিসের ৩য় তলার মহাফেজ খানায়।
রেকর্ড কিপার ভৈরব চক্রবর্তী দলিলটি সেভ কাষ্টডিতে রেখেছেন বলে অফিস সূত্রে জানা গেছে।
অভিযোগ উঠেছে, দীর্ঘদিন বন্ধ থাকার পর সাব রেজিস্ট্রি অফিসে কর্মরত একটি চক্র ভূমি দস্যুদের সাথে যোগসাজস করে দলিলের টেম্পারিং কাজটি করেছেন। দলিলটির নং- ৬৮৬৫ তাং-৯-৫-২৩।
সূত্রগুলো জানায়, এ ঘটনা জেলা রেজিস্টার, সাব রেজিস্টারসহ অফিসের সকল কর্মকর্তা কর্মচারী অবগত হয়েছেন। গত ১৭ এপ্রিল বিষয়টি ধরা পড়লেও পাঁচমাসেও ক্লু আবিষ্কার করতে পারেননি কর্তৃপক্ষ। চিহ্নিত করা যায়নি অফিসের কোন কোন সদস্য বা শহরের কোন ভূমি দস্যু চক্র এই টেম্পারিং জালিয়াতির সাথে জড়িত।
অফিসের সাধারণ কর্মচারীদের একটি সূত্র গ্রামের কাগজকে জানিয়েছে, কর্মচারীদের একটি গ্রুপ ও শহরের ভূমি দস্যু চক্রগুলো আবারো সক্রিয় হয়ে উঠেছে। এটি তাদেরই কাজ। একাধিক সূত্রে খবর পাওয়ার পর বেশ কয়েকদিন গ্রামের কাগজের অনুসন্ধানে উঠে এসেছে অজানা অনেক তথ্য। জানা যায়, বর্তমানে সাব রেজিস্ট্রি অফিসে জনস্বার্থে দুটি রেকর্ড রুম করা হয়েছে। একটি হচ্ছে ৩য় তলায়, অপরটি (নতুন নিচতলা) সাব রেজিস্টারের এজলাসের পাশের কক্ষে। এই দুই স্থানে দলিলের কপিগুলো রাখা হয়। ২০২৩ সালের ৬৮৬৫ নম্বর দলিলটি নিচ তলায় থাকা অবস্থায় টেম্পারিং করা হয় এবং তা গোপনে লুকিয়ে রাখা হয় বলে সূত্রের দাবি।
অফিসের একাধিক সূত্র জানিয়েছে, ৩/৪ মাস পূর্বে অর্থ মন্ত্রণালয়ের একটি টিম যশোর সদর সাব রেজিস্ট্রি অফিসে আসেন অডিট করতে। এসময় ধরা পড়ার ভয়ে নিচতলায় কর্মচারীরা গোপনে আব্দুল্লাহ নামের অলিখিত এক কর্মচারীর মাধ্যমে গত ১৭ এপ্রিল ৩য় তলায় রেকর্ড কিপার ভৈরব চক্রবর্তীর কাছে পাঠানো হয় লুকিয়ে রাখতে। এসময় ভৈরব চক্রবর্তীর সন্দেহ হলে দলিল টেম্পারিং এর ঘটনাটি তার কাছে ধরা পড়ে বলে তিনি গ্রামের কাগজকে জানান। পরবর্তীতে তিনি বিষয়টি সাব রেজিস্টার আমেনা খাতুনকে অবহিত করেন।
এরপর গত ৩০ এপ্রিল সাব রেজিস্টার আমেনা খাতুন রেকর্ড কিপার ভৈরব চক্রবর্তীকে শোকজ করেন। যার স্মারক নং-২০০। পরবর্তীতে ভৈরব চক্রবর্তী গত ৬ আগস্ট শোকজের লিখিত জবাব দেন। জবাব দেয়ার পরপরই অফিসের সকল কর্মকর্তা কর্মচারীর মাঝে বিষয়টি ফাঁস হয়ে পড়ে। এতে শুরু হয় হৈচৈ। বিষয়টি ধামাচাপা দিতে মরিয়া হয়ে ওঠে জড়িত জালিয়াত চক্রগুলো। এরপর মুখ বন্ধ হয়ে যায় কর্মকর্তা কর্মচারীদের।
এ প্রতিবেদক যোগাযোগ করেন, রেকর্ড কিপার ভৈরব চক্রবর্তীর সাথে। তিনি ঘটনার সত্যতা স্বীকার করেন। তবে নকল দাবি করলে তিনি বলেন কর্মকর্তাদের নির্দেশ ছাড়া তিনি নকল দিতে পারবেন না। অপরদিকে সাব রেজিস্টারের সাথে যোগাযোগ করলে তিনি নকলের জন্য আবেদন করতে বলেন।
অথচ গত কয়েকদিন আগে নিচতলার দায়িত্বে থাকা মোহরার শহিদের কাছে এ প্রতিনিধি ৫শ’ টাকা জমা দিয়ে টেম্পারিং করা দলিলের নকল প্রস্তুত করার আবেদন জানালে তিনি গত শনিবার টাকা ফেরত দিয়ে বলেন, দলিলটি রেকর্ড রুমে খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না।
এ ব্যাপারে কথা হয় জেলা রেজিস্টার আবু তালেবের সাথে। তিনি গ্রামের কাগজকে বলেন, বিষয়টি তিনি অবগত হয়েছেন এবং সাব রেজিস্টারের কাছ থেকে সব জেনে জড়িতদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নিবেন।

আরও খবর

🔝