শিরোনাম |
❒ সংবাদ সম্মেলনে মটর শ্রমিক ইউনিয়নের সদস্যরা
❒ ক্ষমতার দাপটে নিজের ছেলেকে বানিয়েছেন প্রচার সম্পাদক
খুলনার আলোচিত শ্রমিক নেতা বিপ্লব সোনাডাঙ্গা বাসস্ট্যান্ড এলাকার মাদকের সম্রাট হিসেবে পরিচিত। এ কাজে তিনি সন্ত্রাসীদের লালন করে শ্রমিকদের জিম্মি করে রেখেছেন। গত নির্বাচনের নির্ধারিত সময়ের ৬ মাস আগে নির্বাচন দিয়ে তিনি শ্রমিকদের মাঝে দেবতা সাজার চেষ্টা করেছিলেন।
অথচ নিজের পদ সাধারণ সম্পাদক, ক্যাশিয়ার, নিজের ছেলের প্রচার সম্পাদক পদে জোরপূর্বক কাউকে নমিনেশন কিনতে দেননি। বাকি সব পদে উন্মুক্তভাবে নির্বাচন হয়। নির্বাচনে দেখা যায়, সকলে নির্বাচিত হওয়ার আশায় বিপ্লবের ছবি পোস্টারে দিয়েছিল। কিন্তু বিপ্লবের পাতানো নির্বাচনে যারা হওয়ার তারাই নির্বাচিত হয়েছেন।
মঙ্গলবার দুপুর ১২ টায় খুলনা প্রেসক্লাবে খুলনা মটর শ্রমিক ইউনিয়নের সাধারণ সদস্যরা সিটি করপোরেশনের ১৯নং ওয়ার্ডের অপসারিত কাউন্সিলর ও শ্রমিক লীগ নেতা জাকির হোসেন বিপ্লবের বিরুদ্ধে সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য তুলে ধরেন। সংবাদ সম্মেলন লিখিত বক্তব্য পাঠ করনে মটর শ্রমিক ইউনিয়নের পক্ষ থেকে সাবেক শ্রমিক নেতা রেজাউল হক বাবলু।
সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়, বৈষম্য বিরোধী ছাত্রজনতা আন্দোলন করে দেশের সর্বস্তর স্বাধীন হয়েছে, অথচ খুলনা সোনাডাঙ্গা বাস টার্মিনালের মটর শ্রমিকরা স্বাধীনতা পায় নাই। স্বৈরাচারী বিপ্লব এখনও শ্রমিকদের মারধর করছে। গত ২২ সেপ্টেম্বর শ্রমিক একলাছ ড্রাইভারকে মারধর করে ৮০ হাজার ৭শ’ টাকা ছিনিয়ে নেয়। এ ঘটনায় তার বিরুদ্ধে চাঁদাবাজি মামলা হয়। গত ৪ আগস্ট বিপ্লব বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের ছাত্রদের তার বাহিনীকে নিয়ে সোনাডাঙ্গা ২য় আবাসিক এলাকায় ও খোকন কমিশনারের বাড়ির সামনে ছাত্রদের মারধর করে এবং মাওলানা দেলোয়ার সাঈদীর মৃতদেহ যেন খুলনার মাটিতে নামাতে না পারে তার জন্য মিছিল করিয়ে ছিল। তিনি সোনাডাঙ্গা বাসস্ট্যান্ড মাদক ব্যবসার সম্রাট এবং সন্ত্রাসীদের লালন পালন করে শ্রমিকদের জিম্মি করে রাখেন। শ্রমিকের ঘাম ঝরানো ইউনিয়নের কল্যাণ তহবিলের গচ্ছিত টাকা দিয়ে কেসিসি’র ১৯ নং ওয়ার্ডে কমিশনার পদে নির্বাচন করেছেন। ড্রাইভার জামালের গাড়ি দুর্ঘটনায় এক যাত্রী মারা যায়, যার কারণে ড্রাইভার জামাল তার সুপার ভাইজার ও হেলপারদের ফাঁসির রায় হয়। স্বৈরাচারি বিপ্লব তদবিরের জন্য জামালের স্ত্রীকে নিয়ে ঢাকায় হোটেলে রেখে শ্লীলতাহানীর চেষ্টা করেন। ব্যর্থ হয়ে জামালের মামলার আর কোন তদবির করে নাই। শেষ পর্যন্ত বাংলাদেশ মটর শ্রমিক ফেডারেশনের সভাপতি দুদু ভাই ফাঁসি রায় স্থগিত করিয়ে খুলনা জেলে নিয়ে আসেন বলে সংবাদ সম্মেলনে উল্লেখ করা হয়।
এ সংবাদ সম্মেলনে মটর শ্রমিক ইউনিয়নের কয়েকশ’ সদস্য উপস্থিত ছিলেন।
উল্লেখ্য, খুলনা সিটি করপোরেশনের (কেসিসি) ১৯নং ওয়ার্ডের অপসারিত কাউন্সিলর ও শ্রমিক লীগ নেতা জাকির হোসেন বিপ্লব বর্তমানে কারাগারে আছেন। গত ৩০ সেপ্টেম্বর সোনাডাঙ্গা থানার একটি ছিনতাই ও চাঁদাবাজি মামলায় জামিন নিতে গেলে খুলনা মহানগর হাকিম-২ আদালতের বিচারক জামিন বাতিল করে তাকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন। জাকির হোসেন বিপ্লব খুলনা মহানগর শ্রমিক লীগের যুগ্ম সম্পাদক এবং খুলনা বিভাগীয় মটর শ্রমিক ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক।
আদালত সূত্রে জানা গেছে, গত ২৪ সেপ্টেম্বর জাকির হোসেন বিপ্লব, তার ছেলে স্বেচ্ছাসেবক লীগ নেতা ফাহিম হোসেন ঐশ^র্য্যসহ ১০ জনের নাম উল্লেখ করে সোনাডাঙ্গা থানায় মামলা করেন শ্রমিক নেতা ইকলাছ শেখ। তিনি মটর শ্রমিক ইউনিয়নের বিগত কমিটির সহ-সভাপতি ছিলেন। মামলায় তিনি উল্লেখ করেন, নির্বাচন নিয়ে বিপ্লবের সঙ্গে তার বিরোধ ছিল। এ কারণে বিপ্লব বিভিন্ন সময় তার কাছে চাঁদা চাইতেন। গত ২২ সেপ্টেম্বর রাতে চাঁদার দাবিতে তাকে মারধর করে ৮০ হাজার টাকা ছিনিয়ে নেয়। এ ঘটনায় ২৪ সেপ্টেম্বর সোনাডাঙ্গা থানায় তিনি মামলা করেন।
প্রসঙ্গত, সম্প্রতি বিএনপি কার্যালয় ভাংচুরসহ বিভিন্ন অভিযোগে বিপ্লবের বিরুদ্ধে আরও ৩টি মামলা হয়েছে। মামলা হলেও তিনি প্রকাশ্যেই সকল কার্যক্রম পরিচালনা করতেন।