শিরোনাম |
❒ পুলিশে যোগদান করেন যশোরে
ঢাকার আশুলিয়ায় ছাত্র-জনতার আন্দোলনে ৪৬ জনকে গুলি করে হত্যার পর লাশ গুনে গুনে ভ্যানে তোলা এবং আগুনে পুড়িয়ে দেওয়ার ঘটনার মাস্টারমাইন্ড আশুলিয়া থানার তৎকালীন ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এএফএম সায়েদকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। বুধবার (৩০ অক্টোবর) রাতে তাকে কক্সবাজার থেকে গ্রেপ্তার করে ঢাকায় পাঠিয়ে দেয়া হয়। তার বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা ছিলো। বর্তমানে সায়েদকে শাহবাগ থানায় রাখা হয়েছে। বৃহস্পতিবার (৩১ অক্টোবর) তাকে আন্তর্জাতিক ট্রাইব্যুনালে হাজির করা হবে।
গ্রেপ্তার আতঙ্কে এতদিন গা ঢাকা দিয়ে ছিলেন পুলিশের এই কর্মকর্তা। সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালের ঘনিষ্ঠজন হিসেবে পরিচিত ছিলেন তিনি। আশুলিয়ার গণহত্যার ঘটনায় নিজের দায় এড়াতে বিভিন্ন কৌশল ও ছলনার আশ্রয় নিলেও তার শেষ রক্ষা হয়নি।
খোদ পুলিশের একটি সূত্র জানায়, নিজেকে আড়াল করতে নানা কৌশল খাটিয়েও শেষ রক্ষা না হওয়ায় যে কোনো মুহূর্তে অবৈধ পথে দেশত্যাগের পরিকল্পনা করেন সায়েদ। বিষয়টি আঁচ করতে পেরে ইমিগ্রেশনসহ আইন প্রয়োগকারী সংস্থাগুলোকে তার বিষয়ে নজরদারি বাড়াতে বলা হয়। এরই জেরে বুধবার রাতে কক্সবাজার থেকে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়।
গত ৫ আগস্ট শেখ হাসিনার পদত্যাগ ও দেশত্যাগের মধ্য দিয়ে পতন ঘটে আওয়ামী লীগ সরকারের। সেদিন বিকেলে আশুলিয়ায় মৃতদেহের স্তূপে আরও লাশ তোলা এবং পরে পোড়ানোর একাধিক ভিডিও প্রকাশ্যে এলে সারাদেশে তোলপাড় সৃষ্টি হয়।
সূত্র জানায়, বীভৎস ও নারকীয় ওই ঘটনার নির্দেশদাতা হিসেবে প্রত্যক্ষভাবে অংশ নিয়েছিলেন তিনি। ডিউটি করেছেন সিভিল ড্রেসে। পরনে ছিলো নীল রঙের পোলো টি-শার্ট ও কালো রঙের ট্রাউজার। এক হাতে ব্যান্ডেজ। ট্রাউজারের পকেটে ছিলো ওয়্যারলেস সেট। প্রচণ্ড টেনশনে খেয়েছেন একের পর এক সিগারেট।
পুলিশ সদর দপ্তরের সূত্র জানায়, এএফএম সায়েদ ২০০৬ সালের ৫ মার্চ যশোর পুলিশ লাইনে এসআই পদে যোগ দেন। সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালের দাপটে তিনি ঢাকা জেলায় একটানা চাকরি করেছেন ১০ বছর ১০ মাস ৬ দিন। এ সময় তিনি ঘুরেফিরে আশুলিয়া থানার সেকেন্ড অফিসার, গোয়েন্দা পুলিশ ঢাকা উত্তরের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা, আশুলিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ও সাভার মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তার দায়িত্ব পালন করেছেন।