শিরোনাম |
আজ বিকেলের দিকে তাইওয়ানের পূর্ব উপকূলে আঘাত হানতে পারে সুপার টাইফুন কং-রে। দ্বীপটির বেশ কিছু অংশে ভারী বৃষ্টি ও বাতাসের সতর্কতা জারি করেছে দেশটির আবহাওয়া বিভাগ। এরই মধ্যে স্বায়ত্তশাসিত দ্বীপটিতে জরুরি অবস্থা জারি করা হয়েছে। ঝড়ের প্রভাবে উত্তাল হয়ে উঠেছে সাগর। তাইওয়ানের পূর্ব উপকূলে ১০ মিটার উচু ঢেউ আছড়ে পড়ছে।
অঞ্চলটিতে প্রচণ্ড ঝড়ের আশঙ্কা করা হচ্ছে। তাই এরই মধ্যে হাজার হাজার মানুষকে নিরাপদ আশ্রয়ে সরিয়ে নেওয়া হয়েছে। বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে স্কুল ও অফিস।
যুক্তরাষ্ট্রের জয়েন্ট টাইফুন ওয়ার্নিং সেন্টারের তথ্য অনুযায়ী, টাইফুন কং-রে ঘণ্টায় প্রায় ২৫০ কিলোমিটার বেগে আঘাত হানতে পারে। তাইওয়ানের কেন্দ্রীয় আবহাওয়া দপ্তরের কর্মকর্তা চু মেই-লিন বলেন, এই ঝড়ের প্রভাবে গোটা তাইওয়ান কঠিন পরিস্থিতির মুখে পড়তে পারে।
তাইপে শহরে ঝড়ের প্রভাবে ভারী বৃষ্টি ও শক্তিশালী বাতাস বইতে শুরু করেছে এবং রাস্তাঘাট প্রায় জনশূন্য।
বিরূপ আবহাওয়ায় তাইওয়ানে এখন পর্যন্ত অন্তত ২৭ জন আহত হয়েছেন বলে জানিয়েছে স্থানীয় দমকল বিভাগ। ঝড়ের কারণে বহু গাছপালা উপড়ে পড়েছে এবং অন্তত চারটি ভূমিধসের ঘটনা ঘটেছে।
এছাড়া, হুয়ালিয়েনের তারোকো গর্জে ভ্রমণরত দুজন চেক পর্যটকের সঙ্গে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে গেছে। উদ্ধারকর্মীরা তাদের খোঁজে তল্লাশি চালাচ্ছেন।
ঝড়ের প্রভাবে তাইওয়ানে অন্তত ৪০০টি অভ্যন্তরীণ ও আন্তর্জাতিক ফ্লাইট বাতিল করা হয়েছে। ফেরি সেবাও বন্ধ রাখা হয়েছে। এছাড়া, ১৮ হাজার বাড়ি বিদ্যুৎহীন হয়ে পড়েছিল, যদিও অধিকাংশ বাড়িতে বিদ্যুৎ সংযোগ পুনঃস্থাপন করা হয়েছে।
কং-রে প্রায় ৩২০ কিলোমিটার ব্যাসের একটি বিস্তৃত এলাকা জুড়ে ঝড়ের তাণ্ডব ছড়াচ্ছে, যা গত ৩০ বছরের মধ্যে তাইওয়ানে আঘাত হানা সবচেয়ে বড় টাইফুনগুলোর একটি হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে। দ্বীপটির পূর্বাঞ্চলে এক মিটার বৃষ্টিপাতের পূর্বাভাস থাকায় প্রবল ভূমিধসেরও আশঙ্কা রয়েছে।
গত বুধবার থেকে ঝুঁকিপূর্ণ অঞ্চলগুলো থেকে লোকজনকে সরিয়ে নেওয়া শুরু হয়। বৃহস্পতিবার পর্যন্ত প্রায় ৮ হাজার ৬০০ জনকে নিরাপদ স্থানে সরানো হয়েছে। পরিস্থিতি মোকাবিলায় ৩৫ হাজার সেনা সদস্য প্রস্তুত রাখা হয়েছে।
জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে বিশ্বজুড়ে ঝড়ের সংখ্যা ও তীব্রতা ক্রমেই বাড়ছে বলে সতর্ক করেছেন বিশেষজ্ঞরা। কং-রে এ বছরের জুলাইয়ের পর থেকে তাইওয়ানে আঘাত হানা তৃতীয় টাইফুন। এর আগে টাইফুন গায়েমি ও ক্রাথন দ্বীপটিতে বহু প্রাণহানি ও ক্ষয়ক্ষতির কারণ হয়েছিল।