gramerkagoj
শুক্রবার ● ১৩ ডিসেম্বর ২০২৪ ২৮ অগ্রহায়ণ ১৪৩১
gramerkagoj
Ad for sale 100 x 870 Position (1)
Position (1)

❒ ২৫ চিকিৎসক ৭৬ কর্মচারির পদশূণ্য

কলাপাড়ায় হাসপাতালের চিকিৎসা সেবার বেহাল দশা

❒ রোগির খাবার মান নিম্নমানের

প্রকাশ : মঙ্গলবার, ১২ নভেম্বর , ২০২৪, ০২:২৫:০০ পিএম
এইচ এম হুমায়ুন কবির, কলাপাড়া (পটুয়াখালী):
GK_2024-11-12_67330e87bd9e0.jpg

চিকিৎসকসহ জনবল সংকটে কলাপাড়ার ৫০ শয্যার হাসপাতালের চিকিৎসা সেবা মারাত্মকভাবে ব্যাহত হচ্ছে। হাসপাতালে আসা রোগিরা বঞ্চিত হচ্ছেন যথাযথ চিকিৎসা সেবা থেকে। একই দশা উপজেলার কুয়াকাটা ২০ শয্যার হাসপাতাল ও মহিপুর উপস্বাস্থ্য কেন্দ্রের।
সরেজমিনে দেখা গেছে, কলাপাড়া হাসপাতালের বহির্বিভাগে প্রতিদিন গড়ে ৩০০-৩৫০ জন রোগি চিকিৎসা সেবা নিতে আসেন। মাত্র ৩-৪ জন চিকিৎসক তাদের অফিস চলাকালীন সময়ের মধ্যে এ পরিমাণ রোগির চিকিৎসা সেবা দিতে পারেন না। বাধ্য হয়ে ভিজিট দিয়ে রোগিদের অফিস সময়ের পরে বাইরে চেম্বারে চিকিৎসা সেবা নিতে হয়। ফলে দরিদ্র রোগিদের ভোগান্তি শেষ নেই। একইভাবে ভর্তি হওয়া রোগির চাপও থাকছে অনেক বেশি।
৫০ শয্যার উপজেলা সদরের এ হাসপাতালটিতে গিয়ে দেখা যায়, শয্যার চেয়ে ভর্তি হওয়া রোগির সংখ্যা বেশি। কলাপাড়া উপজেলাসদরসহ কুয়াকাটা এবং মহিপুর নিয়ে মাত্র ১১ জন চিকিৎসক কর্মরত রয়েছেন। উপজেলা স্বাস্থ্য প্রশাসককে অধিকাংশ সময় প্রশাসনিক নানা কাজে ব্যস্ত থাকতে হয়। এর মধ্যে একজন চিকিৎসক প্রেষণে পটুয়াখালী রয়েছেন। অথচ চিকিৎসকের পদ রয়েছে ৩৬ জনের। কলাপাড়া উপজেলা সদরে মাত্র চারজন চিকিৎসক বহির্বিভাগে দৈনিক তিন-সাড়ে তিন শ’ রোগির চিকিৎসা সেব সামাল দিচ্ছেন। যাতে একেজন রোগিকে সর্বোচ্চ ৫ মিনিট সময় দেওয়া সম্ভব নয়। চিকিৎসক সংকটে জরুরি বিভাগ সামাল দিতে হিমশিম খেতে হয়। একইভাবে কর্মচারীর ৭৬টি পদ খালি রয়েছে। সমস্যার যেন শেষ নেই। পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতার কাজ করাতে হয় আউটসোর্সিংয়ের জনবল দিয়ে। একই দশা কুয়াকাটা হাসপাতালের।
হাসপাতালে সরকারিভাবে টাইফয়েড, হেপাটাইটিস বি-সি, প্রেগনেন্সী, কিডনি, জন্ডিস, সিকলিস, এইডস ভাইরাস, এক্সরে, ডায়াবেটিকসহ অসংখ্য পরীক্ষা-নিরীক্ষা স্পমুল্যে করার সুযোগ রয়েছে। কিন্তু রোগিদের অভিযোগ, কতিপয় চিকিৎসক তাদের নিজেদের পছন্দের ক্লিনিকে পরীক্ষার জন্য পাঠান। তবে বেশ কিছু ওষুধপত্র রোগিরা বিনামূল্যে পেয়ে আসছেন। কিন্তু এ বছরের জুন মাসের পর থেকে প্যাথলজিক্যাল পরীক্ষা-নিরীক্ষার জরুরি কিছু মেডিসিন ঠিকাদার সরবরাহ না করায় রোগিরা বঞ্চিত হচ্ছেন চিকিৎসা সেবা থেকে। হাসপাতালের বাথরুম-টয়লেট পরিচ্ছন্নতা নিয়ে রোগিদের অভিযোগ রয়েছে। কতিপয় নার্স-আয়া, ক্লিনারদের বিরুদ্ধে রোগিদের সঙ্গে খারাপ ব্যবহারের কথা শোনা গেছে।
রোগিদের খাবারের মান নিয়ে উঠেছে এন্তার অভিযোগ। মহিলা ওয়ার্ডে ভর্তি হওয়া রোগি পারভিন জানান, চারদিন আগে সে ভর্তি হয়েছেন। কিছু ওষুধপত্র হাসপাতাল থেকে পাচ্ছেন। বাইরে থেকে কিনতেও হয়েছে। জানালেন, সকালে রুটি আর একটি কলা দেওয়া হয়েছে। রাতে ও দুপুরে দেওয়া হয়েছে সেদ্ধ একটি করে ডিম আলুর ঝোলসহ রান্না করা। এমটাই চলে অধিকাংশ দিন। তবে দুপুরে বয়লার মুরগি রান্নার কথা জানালেন বাবুর্চি। আবাসিক মেডিকেল অফিসার জেএইচ খান লেলিন জানান, খাবারের মান নিয়ে ঠিকাদারকে বহুবার সতর্ক করা হয়েছে। আবারও ব্যবস্থা নেওয়ার কথা জানালেন। তিনি জানালেন, কলাপাড়া উপজেলা ছাড়াও পাশের আমতলী, তালতলী ও রাঙ্গাবালী উপজেলার অসংখ্য রোগি এই হাসপাতালে প্রতিনিয়ত চিকিৎসা সেবা নিচ্ছেন। চিকিৎসক সংকট দূর হওয়া প্রয়োজন বলে জানালেন তিনি।
হাসপাতালের আরেক বড় সমস্যা তিন ফেইজ বিদ্যুৎ সংযোগ না থাকা। সিঙ্গেল ফেইজ সংযোগ থাকায় লোডশেডিংএর কবলে পড়তে হয়। জেনারেটর থাকলেও সবসময় জালানি সংকুলান দেওয়া সম্ভব হয়ে ওঠে না। আর্থিক সংকট রয়েছে। আর বিদ্যুৎ সমস্যার কারণে ভ্যাকসিন মান নিয়ন্ত্রণ করে যথাযথভাবে সংরক্ষণ করা অসম্ভব হয়ে ওঠে।

আরও খবর

Ad for sale 225 x 270 Position (2)
Position (2)
Ad for sale 225 x 270 Position (3)
Position (3)
🔝