শিরোনাম |
অনলাইন প্ল্যাটফর্ম ব্যবহার করে যারা দেশে ব্যবসা করছেন, তাদের জন্য নয় দফা নির্দেশনা দিয়েছে হাই কোর্ট। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে আলোচিত নারী উদ্যোক্তা রোবাইয়াত ফাতেমা তনির মালিকাধীন শোরুম ‘সানভিস বাই তনি’ খুলে দেওয়ার যে নির্দেশনা হাই কোর্ট গতবছর দিয়েছিল, তার পূর্ণাঙ্গ রায়ে এসব নির্দেশনা এসেছে। রায়ে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে আইন অনুসারে যথাযথ পর্যবেক্ষণের জন্য প্রতি মাসে অন্তত একবার তানির ব্যবসা প্রতিষ্ঠান পরিদর্শন করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
নির্দেশনাগুলো হচ্ছে সকলকে বাংলাদেশের প্রচলিত আইন মেনে চলতে হবে। অনলাইন মালিক এবং ভোক্তাদের মধ্যে সম্পর্ক বজায় রাখতে হবে। অনলাইন ব্যবসা পরিচালনায় আইন লঙ্ঘনের ক্ষেত্রে ক্ষতিগ্রস্ত পক্ষ আইনের সমান সুরক্ষা লাভের অধিকারী হবে। প্রতিটি নাগরিকের যে-কোনো বৈধ ব্যবসা পরিচালনার অধিকার থাকবে এবং আইনের যথাযথ প্রক্রিয়া ছাড়া তার ব্যবসা বন্ধ করা যাবে না। ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ বিভাগের উচিত সকল অনলাইন ব্যবসায়ী/মালিক/সদস্যকে নিবন্ধনের আওতায় আনার জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া এবং তাদের অনলাইন ব্যবসা পরিচালনার অনুমোদন দেওয়া। এটা নিশ্চিত করতে হবে যে, কেউ কোনো অনলাইন প্ল্যাটফর্মে তাদের অননুমোদিত ব্যবসা চালাতে, এমনকি শুরু করতেও পারবে না। কোনো খুচরা বিক্রেতা বিদেশি আসল পণ্যের নকল তৈরি করতে না পারে এবং নকল পণ্য আসল হিসেবে বিক্রি করতে অনলাইন প্ল্যাটফর্ম ব্যবহার না করে, তা নিশ্চিত করা অপরিহার্য। এই আইনি পরিকল্পনায় নিশ্চিত করতে হবে যে, সকল ধরনের অনলাইন ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠান তাদের প্রশাসক, মালিক এবং ভোক্তাদের ব্যক্তিগত জাতীয় পরিচয়পত্র দিয়ে যাচাই করা উচিত। বিটিআরসির মত সংশ্লিষ্ট সরকারি নিয়ন্ত্রক কর্তৃপক্ষকে অনলাইন ই-কমার্স প্ল্যাটফর্মগুলোর সঙ্গে সহযোগিতা করে অনলাইন ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠানগুলির তথ্য সংরক্ষণ করতে হবে। সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে নির্দেশ দেওয়া হচ্ছে যে, তারা অনলাইন গ্রাহকদের সচেতন করে তুলবে যেন তারা অনলাইন ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে প্রতারণার শিকার না হন। গ্রাহকদের অনুমোদন/নিবন্ধন ছাড়া অনলাইন দোকান বা অনলাইন উদ্যোগ বা অনলাইন সরবরাহকারীদের কাছ থেকে কোনো পণ্য কেনা উচিত নয়। ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ বিভাগের উচিত প্রতারণা করা অনলাইন ব্যবসায়ীদের তাদের অপরাধের জন্য বিচার করার জন্য ভোক্তা অধিকার সুরক্ষা আইন, ২০০৯-এ প্রয়োজনীয় আইনের বিধান সন্নিবেশ করানো।
জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর ২০২৪ সালের ১৪ মে প্রতারণার অভিযোগে গুলশানে ‘সানভিস বাই তনি’ শোরুমটি বন্ধ করে দেয়। দেশে তৈরি পোশাক পাকিস্তানি বলে বেশি দামে বিক্রির অভিযোগ ছিল তনির বিরুদ্ধে। এরপর তনির পক্ষে হাই কোর্টে রিট আবেদন করেন সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী সৈয়দ খালেকুজ্জামান। জাতীয় ভোক্তা-অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের বিরুদ্ধে ‘বেআইনিভাবে হয়রানি’ করার অভিযোগ আনা হয় সেখানে। সেই রিট মামলার শুনানি করে গত বছরের ১০ জুন রায় দেয় বিচারপতি মোস্তফা জামান ইসলাম ও বিচারপতি এস এম মাসুদ হোসেন দোলনের হাই কোর্ট বেঞ্চ। সেই রায়ে তনির ‘সানভিস বাই তনি’র বন্ধ শোরুম খুলে দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়। তবে ওই শোরুমে পাকিস্তানি পোশাক বিক্রি না করার আদেশ দেওয়া হয়।