শিরোনাম |
নতুন রাজনৈতিক দলগুলোর নিবন্ধন প্রক্রিয়ায় ব্যাপক সাড়া মিলেছে নির্বাচন কমিশনে (ইসি)। চলতি বছরের ১০ মার্চ নিবন্ধনের আবেদন আহ্বান করে ইসি, যেখানে প্রথম দফায় ২০ এপ্রিল পর্যন্ত ৬৫টি দল আবেদন করে। পরবর্তীতে জাতীয় নাগরিক পার্টিসহ (এনসিপি) কয়েকটি দলের অনুরোধে আবেদনের সময়সীমা দুই মাস বাড়ানো হয়। এই বাড়তি সময়ের শেষ হয় ২২ জুন, আর শেষ দুই মাসে আরও ৮২টি দল আবেদন করে।
ফলে নিবন্ধনের জন্য সর্বমোট আবেদন জমা পড়ে ১৪৭টি রাজনৈতিক দলের। নির্বাচন কমিশনের নিবন্ধন পেলে এসব দল ভবিষ্যতের জাতীয় ও স্থানীয় নির্বাচনে নিজস্ব প্রতীক নিয়ে অংশ নিতে পারবে। তবে বিশ্লেষকদের মতে, অল্প কয়েকটি দল ছাড়া অধিকাংশ দল জনপরিচিত নয় বা কার্যকরভাবে মাঠে সক্রিয় নয়।
আরও পড়ুন...
ভারতে যাওয়ার সময় আ.লীগ নেতা যোশেফ আটক
রাকসু তফসিলসহ ৯ দফা দাবিতে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভ
গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশ অনুযায়ী, নিবন্ধন পেতে দলগুলোকে কঠোর কিছু শর্ত পূরণ করতে হয়। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো: একটি সক্রিয় কেন্দ্রীয় কার্যালয় এবং পূর্ণাঙ্গ কেন্দ্রীয় কমিটি থাকা, দেশের অন্তত এক-তৃতীয়াংশ প্রশাসনিক জেলায় কার্যকর দলীয় অফিস থাকতে হবে, কমপক্ষে ১০০টি উপজেলা বা মহানগর থানায় কার্যকর কার্যালয় থাকা, প্রতিটি অফিস এলাকায় কমপক্ষে ২০০ জন ভোটার সদস্য হিসেবে তালিকাভুক্ত থাকতে হবে।
এর বাইরে নিবন্ধনের জন্য দলের গঠনতন্ত্রে সুনির্দিষ্ট কিছু বিষয়ে বিধান রয়েছে। যেমন- কেন্দ্রীয় কমিটিসহ সব কমিটির সদস্য নির্বাচিত করা, সব পর্যায়ের কমিটিতে অন্তত ৩৩ শতাংশ সদস্যপদ নারীদের জন্য নির্ধারিত রাখা এবং পর্যায়ক্রমে ২০৩০ সালের মধ্যে এ লক্ষ্যমাত্রা অর্জন করা। শিক্ষক-শিক্ষার্থী বা শ্রমিক ও অন্য কোনো পেশার সদস্যদের সমন্বয়ে অঙ্গ বা সহযোগী সংগঠন না থাকা ইত্যাদি।
নতুন রাজনৈতিক দল হিসেবে নিবন্ধনের জন্য আবেদনপত্রের সঙ্গে নিচের ১০টি তথ্য ও নথি দিতে হবে। নিবন্ধন ফি হিসেবে দিতে হবে ৫ হাজার টাকা, যা অফেরতযোগ্য। দলীয় প্যাডে দরখাস্তের সঙ্গে দলের গঠনতন্ত্র, নির্বাচনী ইশতেহার (যদি থাকে), দলের বিধিমালা (যদি থাকে), দলের লোগো ও দলীয় পতাকার ছবি, দলের কেন্দ্রীয় কমিটির সব সদস্যের নামের তালিকা, ব্যাংক অ্যাকাউন্ট ও সর্বশেষ স্থিতি, তহবিলের উৎস, দল নিবন্ধনের আবেদনকারীর ক্ষমতাপত্র, নিবন্ধন ফি বাবদ অফেরতযোগ্য ট্রেজারি চালানের কপি এবং নিবন্ধনের তিনটি শর্তের মধ্যে যে কোনো একটি পূরণের প্রমাণ জমা দিতে হবে।
নিবন্ধনের জন্য রাজনৈতিক দলগুলোর এই ব্যাপক সাড়া বাংলাদেশের রাজনৈতিক অঙ্গনে নতুন একটি গতি সঞ্চার করতে পারে। তবে ইসি কতগুলো দলকে নিবন্ধন দেবে, এবং কতগুলো দল কার্যকরভাবে শর্ত পূরণে সক্ষম, সেটাই এখন দেখার বিষয়।