শিরোনাম |
❒ সেই সুন্দরী নারী এখনো লাপাত্তা, বেরিয়ে আসছে চাঞ্চল্যকর তথ্য
যশোরে ব্যবসায়ীর তিন কোটি টাকা আত্মাতের মামলার প্রধান আসামি আওয়ামী লীগ নেতা বাহাউদ্দিন নাসিম, সালমান এফ রহমান ও তৌফিক এলাহীর ঘনিষ্ঠজন সেই ফারজানা ইয়াসমিন নীলা এখনো লাপাত্তা। সুন্দরী এ নারীর বিষয়ে বেরিয়ে আসছে নানা চাঞ্চল্যকর তথ্য। দৈহিক সুন্দর্যকে ব্যবহার করে কোটি কোটি টাকা আত্মসাতের অভিযোগ রয়েছে ওই নীলার বিরুদ্ধে। এদিকে রোববার এ মামলায় আটক তার মেয়ে নন্দিতা মেহজাবিন কথা, ছেলে অনন্ত আরমান কাব্য এবং সহযোগী মোহাম্মদ উল্লাহ বাবলুর রোববার জামিন ধরা হলে তার শুনানী পেছানো হয়েছে। তবে, প্রতারক নিলাকে ধরতে ডিবির একাধিক টিম কাজ করছে।
সূত্র জানায়, সুন্দরী ফারজানা ইয়াসমিন নীলা আওয়ামীলীগ সরকারের আমলে দাপটে নারী ছিলেন। দুবাইসহ বিভিন্ন দেশে ছিলো অবাধ যাতায়াত। অভিযোগ রয়েছে অবৈধ ভিওআইপি ব্যবসা ছিলো তার অন্যতম হাতিয়ার। ঢাকার বারিধারায় ডিপ্লোমেটিক জোনের ৬৬ নাম্বার হাউজে গড়ে তুলেছিলেন নীলাঞ্জনা অর্গানিক হাউজ নামের আলিসান অফিস। সেখানে যাতায়াত ছিলো, শুধুই আওয়ামীলীগ না, মন্ত্রী, সচিব ও ব্যাংকের শীর্ষ পর্যায়ের কর্মকর্তাদের। অভিযোগ রয়েছে ওই প্রতিষ্ঠানে ছিলো তার জাল টাকার ব্যবসাও। এছাড়া বিভিন্ন মানুষকে টাকা নিয়ে এফডিআর করার নামে টাকা হাতিয়ে নিতেন। প্রথমে তিনি নানা ধরনের প্রলোভন দেখাতেন এরপর টাকা নিয়ে মক্কেলদের সাথে আর যোগাযোগ রাখতেন না। এমনকি দিতেন নানা ধরনের হুমকি ধামকিও। এছাড়া ব্যাংকের বিএফটি এন বা আরটিজিএস ফর্ম নকল করে মানুষকে দিতেন । নিজেকে ইমপোর্টান দাবি করে ক্লাইন্টদের দেখাতেন অন্যের গোডাউন। মানুষকে এলসি দেয়ার কথা বলে মারজিনের ৩০% থেকে ৪০% টাকা আত্মসাতের অভিযোগ রয়েছে ওই নীলার বিরুদ্ধে । এছাড়া ব্যাংক থেকে লোন নেয়ার নামে প্রতারণার একাধিক অভিযোগ রয়েছে সুন্দরী নীলার বিরুদ্ধে। এসব বিষয় অনুসন্ধানে যশোরের ডিবি পুলিশের একাধিক টিম মাঠে রয়েছে।
ডিবি সূত্র জানায়, ব্যবসায়িক কাজে প্রয়োজন জানিয়ে ফারজানা ইয়াসমিন নিলার নেতৃত্বাধীন চক্র যশোরের অভয়নগর উপজেলার ব্যবসায়ী শাহ আলম হোসেনের কাছ থেকে ২০২০ সালের ০৪ আগস্ট ৩ কোটি টাকা নেয়। বিনিময়ে প্রতি মাসে ১০ শতাংশ মুনাফা দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দেয় তারা। কিন্তু সেটাকা ফেরত না দিয়ে নানা তালবাহানা করেন নিলা। এমনকি ওই টাকা ফেরত দেবেনা বলেও হুংকার দেন। তার প্রেক্ষিতে গত ২৪ জুন অভয়নগরের শিল্পশহর নওয়াপাড়ার মৃত শাহ আশরাফের ছেলে ব্যবসায়ী শাহ আলম হোসেন বাদী হয়ে যশোর কোতোয়ালি থানায় চারজনের বিরুদ্ধে মামলা করেন। বৃহস্পতিবার (২৬ জুন) দিনব্যাপী ঢাকার বনানী এলাকায় অভিযান চালিয়ে তাদের গ্রেপ্তার করা হয়। পরে তাদের যশোর আদালতে সোপর্দ করা হয় একই সাথে পাঁচদিনের রিমান্ডের আবেদন জানানো হয়।
সূত্র আরও জানায়, আটকের পর উঠে আসে যশোর উপশহরের আনিছুর রহমানের কাছ থেকে ১০ কোটি টাকা, ঢাকার হালিমের কাছ থেকে ২৫ লাখ এবং কুষ্টিয়ার সাজেদুল ইসলাম রাজিবের কাছ থেকে ১৪ কোটি টাকা আত্মসাৎ করেছে নীলা চক্র। এছাড়া বিদেশে লোক পাঠানোর কথা বলে শতাধিক মানুষের কাছ থেকে কোটি কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়েছে চক্রটি।
আদালত সূত্র জানায়, ৩ জুলাই এ মামলার রিমান্ড শুনানীর দিন ধার্য রয়েছে। এরমাঝে ২৯ জুন জামিনের আবেদন জানানো হলে বিচারক সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট জুবাইদা রওশন আরা আগামি ৩ জুলাই জামিন ও রিমান্ড শুনানির দিন ধার্য করেন।
এ বিষয়ে মামলার তদন্ত কর্মকর্তা ডিবির এসআই কামাল হোসেন বলেন, নীলার বিরুদ্ধে একাধিক মামলা মামলা ও ওয়ারেন্ট রয়েছে। এছাড়া অনেকেই তাদের সাথে যোগাযোগ করছেন যারা প্রতারণার স্বিকার হয়েছেন নীলার কাছ থেকে। তিনি বলেন, নীলা বিভিন্ন সময় আওয়ামীলীগের নেতাসহ শীর্ষ পর্যায়ের ব্যক্তিদের সাথে দুবাই অবস্থান করতেন সেসব তথ্যও রয়েছে। তিনি আরও বলেন এ মামলার চার আসামির মধ্যে তিনজনকেই আটক করা হয়েছে। তবে, ধুরান্তর নীলাকে ধরতে পুলিশের একাধিক টিম কাজ করছে।