gramerkagoj
মঙ্গলবার ● ৭ মে ২০২৪ ২৪ বৈশাখ ১৪৩১
gramerkagoj

❒ নাশকতার তথ্য দিলে ২০ হাজার থেকে ১ লাখ টাকা পর্যন্ত পুরস্কার

নির্ভয়ে ভোট দেয়ার পরিবেশ দেবে পুলিশ

❒ নির্বাচনী নিরাপত্তা সভা শেষে আইজিপির ব্রিফিং

প্রকাশ : বুধবার, ৩ জানুয়ারি , ২০২৪, ১২:০১:০০ এ এম , আপডেট : মঙ্গলবার, ৭ মে , ২০২৪, ০১:০০:৫৬ পিএম
দেওয়ান মোর্শেদ আলম:
GK_2024-01-02_659434ed04063.jpg

সারাদেশের ভোট কেন্দ্রগুলোতে নির্ভয়ে নির্বিঘ্নে ভোটাধিকার প্রয়োগ ও অবাধ সুষ্ঠু নির্বাচনের পরিবেশ তৈরি করেছে পুলিশ। ৭ জানুয়ারি নির্বাচন ও তার আগে পরে মানুষের কঠোর নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে সকল প্রস্ততি সম্পন্ন করা হয়েছে। ধর্মীয় সংখ্যালঘুদের উদ্বেগ উৎকণ্ঠার এবার কোনো কারণ নেই। নাশকতাকারীদের কঠোর হস্তে দমন করতে পুলিশের সব ইউনিটকে নির্দেশনা দেয়া হয়েছে। শুধু তাই নয়, নির্বাচন বানচাল করতে মহল বিশেষ নাশকতার আশ্রয় নিয়ে পারে শঙ্কায় নিরাপত্তা জোরদার করা হয়েছে সর্বত্র। নির্বাচন ইস্যূতে নাশকতা সংক্রান্ত সুনির্দিষ্ট যেকোনো তথ্য যে কেউ পুলিশকে দিতে পারবেন। এজন্য তথ্য দাতার পরিচয় গোপন রাখাসহ তাকে ২০ হাজার টাকা থেকে এক লাখ টাকা পর্যন্ত পুরস্কার দেয়া হবে। আসন্ন নির্বাচন অনুষ্ঠান ঘিরে যে কোনো ধরণের বিশৃঙ্খলা ও নাশকতার উপর কঠোর নজরদারি করা হচ্ছে। ভোটার, ভোট কেন্দ্র, সংশ্লিষ্ট এলাকার নিরাপত্তা ও নির্বাচনী প্রচারনার দিনগুলোতে শান্তিপূর্ণ পরিবেশ বজায় রাখতে মাঠে রয়েছে পুলিশ।
২ জানুয়ারি খুলনা রেঞ্জের আওতাধীন ১০ জেলার এসপিদের সাথে খুলনা বিভাগীয় আইনশৃঙ্খলা বিষয়ক নির্বাচনী নিরাপত্তা সভা শেষে সাংবাদিকদের সাথে ব্রিফিংকালে এসব কথা বলেছেন বাংলাদেশ পুলিশের মহা পরিদর্শক (আইজিপি) চৌধুরী আব্দুল্লাহ আল মামুন।
এদিন বিকেলে যশোর পুলিশ সুপারের কার্যালয়ের সামনে আয়োজন করা ব্রিফিংয়ে আইজিপি আরো বলেন, কঠোর ব্যবস্থা নেয়া হবে সাম্প্র্রদায়িক দাঙ্গা সৃষ্টিকারীদের বিরুদ্ধেও। অবাধ সুষ্ঠু নিরপেক্ষ নির্বাচনের সার্বিক নিরাপত্তায় রয়েছে পুলিশ। যেকোনো অনাকাঙ্খিত ঘটনা রুখে দিতে বাংলাদেশ পুলিশ প্রস্তুত। যশোরসহ বাংলাদেশের সব অঞ্চলের ঝুঁকিপূর্ণ অধিক-ঝুঁকিপূর্ণ কেন্দ্রগুলোর প্রতি বিশেষ নজরদারি করছে পুলিশ। প্রতিনিয়ত ঝুঁকিপূর্ণ কেন্দ্রগুলোর তথ্য আপডেট করা হচ্ছে। বিভিন্ন প্রার্থীর দেয়া তালিকা ছাড়াও গোয়েন্দা তৎপরতার মাধ্যমে ঝুঁকিপূর্ণ কেন্দ্রের তালিকা করা হয়েছে। ৭ জানুয়ারি যাতে সব শ্রেণি পেশার মানুষ অবাধে এবং নির্ভয়ে ভোট দিতে পারেন সে ব্যবস্থা নিশ্চিত করা হবে। বিশেষ করে নারী ও বয়স্ক নাগরিকদের ভোটাধিকার নিশ্চিত করার পরিবেশ করা হয়েছে। একারণে পুলিশের বিভিন্ন ইউনিট স্তরে স্তরে পেট্রলিং করছে। নির্বাচন কমিশনের নির্দেশনা অনুযায়ী নিরাপত্তা কর্মপরিকল্পনা করা হয়েছে। এখন পর্যন্ত নির্বাচনী নিরাপত্তায় পুলিশের ৮০ শতাংশ প্রস্তুতি সম্পন্ন হয়েছে। দেড়শ’ বছরের পুরোনো প্রতিষ্ঠান বাংলাদেশ পুলিশ। প্রতি ৫ বছর পর পর জাতীয় নির্বাচনসহ স্থানীয় নানা নির্বাচনে সফলভাবে নিরাপত্তার দায়িত্ব পালন করে আসছে।
এবারের নির্বাচনেও কোথাও কোনো অনাকাঙ্খিত ঘটনা নাশকতা অপতৎপরতা চালালে কারো ছাড় নেই। বিভিন্ন গোয়েন্দা সংস্থা, বিজিবি, আনসার, র‌্যাব পুলিশকে সহায়তা করছে, নানা তথ্যও দিচ্ছে। নির্বাচনী দায়িত্ব পালনের জন্য সংসদীয় এলাকার কেন্দ্রগুলো ও আশেপাশের জায়গায় রয়েছে মোবাইল ও পেট্রলিং টিম।
ব্রিফিংয়ের সময় উপস্থিত ছিলেন খুলনা রেঞ্জের ডিআইজি মঈনুল হক বিপিএম পিপিএম বার, যশোরের পুলিশ সুপার প্রলয় কুমার জোয়ারদার পিপিএম বিপিএম বারসহ ১০ জেলার এসপি ও উর্ধ্বতন পুলিশ কর্মকর্তাগণ।
ব্রিফিংয়ের আগে যশোর পুলিশ সুপারের কনফারেন্স কক্ষে ডিআইজিসহ ১০ জেলার এসপিদের নিয়ে নির্বাচনে নিরাপত্তা ও আইন শৃঙ্খলা বিষয়ক সভা করেন আইজিপি। জেলার সার্বিক নিরাপত্তা ও নির্বাচন কেন্দ্রিক নিরাপত্তা ও মনিটরিংয়ের জন্য স্থাপন করা সিসি ক্যামেরা পর্যবেক্ষণ করেন আইজিপি।
জেলা পুলিশের সূত্র জানিয়েছে, এসপিদের নিয়ে নিরাপত্তা ও আইনশৃঙ্খলা বিষয়ক সভায় নির্দেশনা দিয়েছেন আইজিপি। জানিয়েছেন ভোট দিতে বাধা দিলে তথ্য পেলেই অভিযুক্তের বিরুদ্ধে তাৎক্ষণিকভাবে কঠোর ব্যবস্থা নিতে হবে। দেশের ৩০০ আসনের নির্বাচনী এলাকার জনগণকে উৎসবমুখরভাবে ভোট দেয়ার পরিবেশ তৈরি করতে হবে পুলিশকে।
যশোরের ৬টি আসনের প্রশ্নে আইজিপি জেলাব্যাপি প্রয়োজনীয় কঠোর নিরাপত্তা ব্যবস্থা নিতে বলেছেন। নির্বাচনী সহিংসতায় উত্তপ্ত পরিস্থিতি, প্রার্থী ও দলের পক্ষ ও বিপক্ষ নিয়ে অনাকাঙ্খিত ঘটনা উত্তরণে তাৎক্ষনিক ব্যবস্থা নেয়ার উপর জোর দেন। মাঠ পর্যায়ে সিনিয়র অফিসারগন নিয়মিত টহল থাকবেন। ৬টি সংসদীয় এলাকার সংসদ নির্বাচনে প্রার্থী, ভোটার, প্রিজাইডিং অফিসার ও রিটার্নিং অফিসারসহ প্রত্যেককে নিরাপত্তা দিতে হবে পুলিশকে।
প্রধান নির্বাচন কমিশনার হাবিবুল আউয়াল ও নির্বাচন কমিশনার আহসান হাবিব খান যশোরে সফর করে যশোর জেলা পুলিশসহ নির্বাচন সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের যে দিক নির্দেশনা দিয়ে গেছেন তা বাস্তবায়ন করার তাগিদ দেয়া হয়। দলমত নির্বিশেষে নিরপেক্ষভাবে অবাধ সুষ্ঠু নির্বাচন অনুষ্ঠান সফল করার লক্ষে কাজ করতে যশোর পুলিশকে নির্দেশনা দেন আইজিপি।
নির্বাচনে জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট, নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট, বিজিবি, আনসার, র‌্যাব সদস্যদের সাথে সমন্বয় করতে বলেছেন। তিনি বলেন মাঠে অন্য বাহিনী থাকলেও নিরাপত্তার মূল দায়িত্বে থাকবে মূলত পুলিশ।

আরও খবর

🔝