প্রকাশ : বুধবার, ৫ মে , ২০২১, ১০:৪৯:০১ পিএম
দশ লাখ টাকা যৌতুক দাবিতে নির্যাতন চালিয়ে গৃহবধূকে ঘরছাড়া করার ঘটনায় থানায় মামলা করে বিপাকে পড়েছেন ঝিকরগাছার গৃহবধূ জান্নাতুন নাহার মোহনা। স্বামীসহ স্বামী পরিবারের ৩ জনকে আসামি করে করা মামলাটি তুলে নিতে নেশাখোর মাদক ব্যবসায়ী স্বামী চড়াও হয়ে অপতৎপরতা চালাচ্ছে বলে ভুক্তভোগী স্ত্রীর অভিযোগ। এ ব্যাপারে তিনি দ্রুত পুলিশের হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন। মামলা সূত্রে তথ্য মিলেছে, চলতি বছরের ফেব্রুয়ারি মাসে ঝিকরগাছার বারবাকপুরের মোজাম্মেল হোসেনের মেয়ে জান্নাতুন নাহার মোহনার বিয়ে হয় একই উপজেলার মল্লিকপুর গ্রামের হাফিজুর রহমানের ছেলে রায়হানের সাথে। মোহনার স্বামী শ^শুর এখন যশোরের শেখহাটি আদর্শপাড়ায় বাড়ি করে বসবাস করছেন। বসবাসের এক পর্যায়ে স্বামী রায়হান, শ^শুর হাফিজুর রহমান ও শাশুড়ি রাবিয়া বেগম যৌতুক চেয়ে গৃহবধূ মোহনার উপর নির্যাতন শুরু করেন। মেয়ের সংসারে শান্তির প্রশ্নে বাবা মোজাম্মেল হোসেন ব্যবসার জন্য নগদ ১ লাখ ৭৫ হাজার টাকা, ১ লাখ টাকার সাংসারিক মালামাল, ১ লাখ ৭০ হাজার টাকার স্বর্ণালংকার মিলিয়ে সর্বমোট নগদ ও মালামালসহ মোট ৫ লাখ টাকার একটি হিসেব দেন জামাইয়ের পরিবারকে। এরপরও তারা নির্যাতন অব্যাহত রাখে। এক পর্যায়ে মোহনাকে মারপিট করে বাড়ি থেকে বের করে দেন। মোহনা উপায় না পেয়ে আহত অবস্থায় পিত্রালয়ে আসেন। বাবা মা মেয়ের চিকিৎসা করিয়ে ঘটনার ব্যাপারে জানতে জামাই ও শ^শুরকে বাড়িতে ডাকেন। ১৪ মার্চ স্বামী শ^শুর ও শাশুড়ি মোহনার পিত্রালয়ে এসে মারপিট ও নির্যাতনের কথা শুনতে না চেয়ে আবার ৫ লাখ টাকা যৌতুক দাবি করেন। যৌতুক দিতে অপারগতা প্রকাশ করায় পিত্রালয়ে ফেলেই মোহনাকে আবারো মারপিট করে স্বামী ও শ^শুর। এ সময় গুরুতর জখম হন মোহনা। শেষমেশ তিনি থানার শ্মরনাপন্ন হন। ২৬ এপ্রিল তিনি থানায় মামলা দাখিল করেন, যার নাম্বার ২১। মামলার পর পুলিশ আসামি আটকে অভিযান শুরু করলে তারা ফুঁসে উঠে নানামুখি হুমকি দেয়া শুরু করে।এ ব্যাপারে ভুক্তভোগী গৃহবধূ মোহনা ৫ মে দৈনিক গ্রামের কাগজ দপ্তরে এসে অভিযোগ করেছেন, মামলা করে এখন চাপে পড়েছেন তিনি ও তার পরিবারের সদস্যরা। তার নেশাখোর মাদক ব্যবসায়ী স্বামী তার পিত্রালয়ে চড়াও হয়ে মামলা তুলে নিতে চাপ দিচ্ছে। বিএনপি-জামায়াত রাজনীতির সাথে জড়িত নেশাখোর নির্যাতনকারী স্বামী রায়হান প্রাণে মারার হুমকি দিচ্ছে। মামলা রেকর্ড হলেও সে আটক না হওয়ায় এমন সাহস দেখাচ্ছে। শ^শুর হাফিজুর রহমান মৃত্তিকা অফিসের একজন ড্রাইভার হলেও এখন বিশাল অর্থ সম্পদের মালিক বনে গেছেন। ওই টাকা ছড়িয়ে তিনি তদন্ত কর্মকর্তাকে ম্যানেজ করছেন। এ ব্যাপারে তিনি দ্রুত জেলা প্রশাসক ও পুলিশ সুপারের হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন।