gramerkagoj
সোমবার ● ২৯ এপ্রিল ২০২৪ ১৫ বৈশাখ ১৪৩১
gramerkagoj

❒ চাঁচড়া ইউনিয়নে চোরচক্রের তৎপরতা

মাঠ ও পুকুর থেকে শতাধিক স্যালোমেশিন ও মটর চুরি
প্রকাশ : শুক্রবার, ২৯ মার্চ , ২০২৪, ০৯:৫৪:০০ পিএম , আপডেট : রবিবার, ২৮ এপ্রিল , ২০২৪, ০৪:১৫:১৮ পিএম
মোঃ মিজানুর রহমান:
GK_2024-03-29_6606e4728c421.jpg

সংঘবদ্ধ চোর চক্রের অত্যাচারে যশোরের শহরতলির চাঁচড়া ইউনিয়নের ভাতুড়িয়া, নারায়নপুর, মনসাঁতলা ও সাড়াপোল অঞ্চলের মৎস্য চাষী ও কৃষকরা অতিষ্ট হয়ে পড়েছে। গত এক বছরে সংঘবদ্ধ চোরেরা গ্রামের পুকুর ও মাঠ থেকে চুরি করে নিয়ে গেছে শতাধিক স্যালোমেশিন ও পানি তোলা মটর। যার মূল্য ৩০ থেকে ৩৫ লাখ টাকা। এছাড়াও পুকুরের চারাপোনা মাছও থাকছে না পুকুরে।
গত ২২ মার্চ শুক্রবার বিকেলে ভুক্তভোগী গ্রামবাসী চাঁচড়া ভাতুড়িয়া বাজারের মনু মিস্ত্রির দোকান থেকে ৪টি চোরাই মটর বিক্রির সময় দুইজনকে হাতে নাতে আটক করেন। পরে শহরের চাঁচড়া পুলিশ ফাড়ির এস আই আব্দুল মালেকের কাছে চোরাই মটরসহ আটক চোরদের সোপর্দ করেন। আটককৃতরা হচ্ছে ভাতুড়িয়া নারায়নপুর গ্রামের মেহেদি ও শিশির। পরে মিয়ারাজ নামে একজন ভুক্তভোগী থানায় মামলা দিলে পুলিশ আটককৃতদের কোটে চালান দেন। আটককৃতরা বর্তমানে কারাগারে আটক রয়েছে।
২৭ মার্চ বুধবার দুপুরে গ্রামের কাগজের তথ্যানুসন্ধানী টিম ভাতুড়িয়া-মনসাঁতলা, কালাবাঘা এলাকায় গেলে ভুক্তভোগী গ্রামবাসী এগিয়ে আসেন এবং গ্রামের কাগজকে বলেন, সংঘবদ্ধ চোর চক্র রাঁতের বেলা কৃষি জমি থেকে স্যালোমেশিন ও পুকুর পাড় থেকে মটর চুরি করে নিয়ে যাচ্ছে। এক বছরে শতাধিক স্যালোমেশিন ও মটর চুরি হয়েছে। বর্তমানে কৃষক ও মৎস্য চাষিরা চরম বিপাকে রয়েছে। স্যালোমেশিন না থাকায় চাষীরা কৃষি জমিতে পানি দিতে পারছেন না। মৎস্য চাষীরা পারছেন না পুকুরে পানি দিতে। এই কারনে ভুক্তভোগীরা রয়েছেন চরম হতাশায়। পানির অভাবে ফসল উৎপাদন এবং চারাপোনা মাছ উৎপাদনে চলতি মৌসুমে চরম লোকসান গুনতে হবে তাদের। এমন আশঙ্কার কথা জানান গ্রামের সাধারণ মানুষ। অধিকাংশ চাষী জমি বরগা নিয়ে চাষ করেন। অন্যদিকে বিভিন্ন এনজিও থেকে সুদে লোন তুলে পুকুর লীজ নেন এবং চারাপোনা মাছ উৎপাদন করে থাকেন মৎস্য চাষীরা। কিন্তু সংঘবদ্ধ চোরচক্রের চুরি তৎপরতায় হাপিয়ে উঠেছেন কৃষক ও মৎস্য চাষীরা।
তথ্যনুসন্ধানে গ্রামবাসী এ প্রতিনিধিকে জানান, সংঘবদ্ধ গ্রুপটি ভাতুড়িয়া নারায়নপুর গ্রামের স্থানীয় বাসিন্দা। এদের রয়েছে দশ থেকে ১২ জনের একটি দল। শুধু স্যালোমেশিন আর মটর নয়, রাতের আঁধারে মাছও চুরি করে নিয়ে যাচ্ছে পুকুর থেকে। চলতি মৌসুমে কৃষক ও মৎস্য চাষীদের দুই থেকে তিন কোটি টাকা লোকসান গুনতে হবে বলেও আশঙ্কা করছেন। গ্রামবাসী এ প্রতিনিধিকে বলেন, এই চক্রের মূলহোতা নারায়নপুর গ্রামের ইশরাজুল ও মেহেরাজ। তাদের মধ্যে ইশরাজুল ২টি হত্যা মামলা ও মেহেরাজ মৎস্য চাষী মোস্তফা কামাল হত্যা মামলার আসামি। অপরদিকে এসব কাজে তাদের আত্মীয় রফিকুলও জড়িত। রফিকুল সংঘবদ্ধ চক্রের সেকেন্ড ইন কমান্ড হিসেবে কাজ করে।
মৎস্য চাষী ও কৃষক খোকন, মিয়ারাজ, সমিরন বর্মন, রবিন, তপন, দিলিপ, সেলিম, মধু, মঙ্গলসহ গ্রামের অসংখ্য মানুষ এ তথ্য নিশ্চিত করেন গ্রামের কাগজকে। ভুক্তভোগীরা আটক চোরদের রিমান্ডের দাবি জানিয়ে বলেছেন, এদের জিজ্ঞাসাবাদে বেরিয়ে আসবে সংঘবদ্ধ চক্রের পর্দার আড়ালে লুকিয়ে থাকা গডফাদারদের অজানা তথ্য এবং এসব চোরাই মালামাল ক্রেতাদের নাম ও ঠিকানা। উদ্ধার হবে চুরি যাওয়া স্যালোমেশিন ও পানি তোলা মটর। চাঁচড়া ফাঁড়ির এস আই আব্দুল মালেকও মটর চুরির ঘটনা নিশ্চিত করেছেন।

 

আরও খবর

🔝