শিরোনাম |
যশোর রেলস্টেশনের উর্ধ্বতন উপসহকারী প্রকৌশলী অফিসের কর্মচারী মামুন হাওলাদার একটি হত্যা মামলার আসামি হয়েও বহাল তবিয়তে চাকরি করছেন। উর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের ম্যানেজ করে মামুন হাওলাদার সাময়িক বরখাস্ত না হয়ে বহাল তবিয়তে চাকরি করছেন বলে রেলওয়ের একাধিক সূত্র থেকে গ্রামের কাগজকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
অভিযুক্ত মামুন হাওলাদার এ কথা স্বীকার করে এ প্রতিনিধিকে বলেন, তিনি বর্তমানে জামিনে আছেন এবং মামলাটি আদালতে বিচারাধীন রয়েছে।
সূত্র জানায়, মামুন হাওলাদার একা নন তার স্ত্রী মনি বেগমও একই হত্যা মামলার আসামি। রেলওয়ের একাধিক সূত্র থেকে জানা যায় মামুন হাওলাদারের বাড়ি পিরোজপুর জেলার জিয়া নগর থানা এলাকায়। সূত্রগুলো বলছে, কয়েক মাস আগে মামুন হাওলাদার ডিউটি ফাঁকি দিয়ে তার স্ত্রীকে নিয়ে গ্রামের বাড়িতে যান। এরপর তার স্ত্রীর পরকীয়া প্রেমিককে হত্যা করে লাশ মাটিতে পুঁতে রেখে ফের যশোর চলে আসেন। তিনি কাগজ কলমে প্রমান করেন ঘটনার সময় যশোরে কর্তব্যরত ছিলেন। পুলিশ লাশ উদ্ধারের পর সন্ত্রাসীদের মাধ্যমে জানতে পারেন মামুন হাওলাদার ও তার স্ত্রী এই হত্যার কাজে জড়িত। পরে তাদের বিরুদ্ধে হত্যা মামলা হলে পুলিশ তাদেরকে গ্রেফতার করে জেল হাজতে প্রেরণ করে।
তথ্যনুসন্ধানে জানা যায়, মামুন হাওলাদার ঘটনার পরপরই উর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের ম্যানেজ করে প্রত্যয়ন পত্র নেন যে তিনি ঘটনার সময় যশোরে অবস্থান করছিলেন। এ কারনে পুলিশ মামলা থেকে তাদের স্বামী-স্ত্রীকে অব্যাহতি প্রদান করে। কিন্তু বাদী পক্ষ আদালতে না-রাজি দিলে আদালত থেকে ফের মামলাটি গোয়েন্দা পুলিশ দ্বারা তদন্তের আদেশ দেন। পরবর্তীতে তদন্ত শেষে গোয়েন্দা পুলিশ জানতে পারেন, মামুন হাওলাদার ও তার স্ত্রীসহ স্থানীয় একটি সন্ত্রাসী গ্রুপ হত্যাকান্ডের সাথে জড়িত। এরপর গোয়েন্দা পুলিশ তাদেরকে অভিযুক্ত করে আদালতে চার্জশিট দাখিল করে। বর্তমানে এই মামলা আদালতে বিচারের শেষ প্রান্তে।
মামুন হাওলাদার গ্রামের কাগজকে তার ব্যবহৃত মোবাইল ফোনে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন। একই সাথে জানতে চাওয়া হয় হত্যা মামলার চার্জশিটভুক্ত আসামি হয়ে কিভাবে তিনি বহাল তবিয়তে চাকরি করছেন। এর কোন সদুত্তর দিতে পারেননি মামুন হাওলাদার।
রেলওয়ে কর্মকর্তা-কর্মচারীরা বলেন, চাকরি বিধি অনুযায়ী কোন সরকারি কর্মচারী-কর্মকর্তা ফৌজদারি মামলায় অভিযুক্ত হলে তাৎক্ষনিকভাবে তাকে সাসপেন্ডের আওতায় পড়তে হবে এবং মামলা নিষ্পত্তি না হওয়া পর্যন্ত তিনি সাময়িক বরখাস্তের আওতায় থাকবেন।
কথা হয় যশোর সিনিয়র জেলা ও দায়রা জজ আদালতের পিপি অ্যাডভোকেট ইদ্রিস আলীর সাথে। কোন সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারী হত্যা মামলার মতো গুরুতর মামলায় অভিযুক্ত হলে কর্মস্থলে বহাল থাকতে পারেন কিনা প্রশ্ন করা হলে তিনি বলেন, সরকারি চাকুরি বিধি অনুযায়ী কেউ দায়িত্ব পালন করতে পারবে না। অভিযুক্ত সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীকে সাময়িক বরখাস্ত করার আইনি বিধান রয়েছে।