gramerkagoj
মঙ্গলবার ● ৩০ এপ্রিল ২০২৪ ১৬ বৈশাখ ১৪৩১
gramerkagoj

❒ ঈদ ও নববর্ষের পাঁচ দিনের ছুটিতে বন্দরে সরকারের আয় ৩ কোটি টাকা

৩২ হাজার পাসপোর্টধারীর ভারতে যাতায়াত
প্রকাশ : মঙ্গলবার, ১৬ এপ্রিল , ২০২৪, ১০:০৮:০০ পিএম , আপডেট : সোমবার, ২৯ এপ্রিল , ২০২৪, ০৫:০৪:৩৭ পিএম
কাগজ সংবাদ:
GK_2024-04-16_661ea2b273c69.JPG

ঈদুল ফিতর ও পহেলা বৈশাখের টানা পাঁচ দিনের ছুটিতে ভারতে যাতায়াত করেছেন ৩২ হাজার বাংলাদেশি পাসপোর্ট যাত্রী। এর থেকে সরকারের ভ্রমণ কর বাবদ আয় হয়েছে তিন কোটির বেশি টাকা। এসব মানুষ চিকিৎসা, ব্যবসা, দর্শনীয় স্থান ভ্রমণ ও স্বজনদের সঙ্গে ঈদ করতে ভারতে গিয়েছিলেন। যদিও পাসপোর্টধারীরা ভারতে যাতায়াতের সময় চেকপোস্টের দু’পাশেই কাস্টমস ও ইমিগ্রেশনে ব্যাপক দুর্ভোগের শিকার হয়েছেন বলে অভিযোগ করেছেন।
জানা যায়, এবার ঈদুল ফিতর ও পহেলা বৈশাখ উপলক্ষে ১০ এপ্রিল থেকে ১৪ এপ্রিল পর্যন্ত ছুটি ঘোষণা করে সরকার। এতে বুধবার থেকে রবিবার পর্যন্ত টানা পাঁচ দিন বন্ধ ছিল দেশের সরকারি প্রতিষ্ঠানগুলো। বেসরকারি অনেক প্রতিষ্ঠানও সরকারি ছুটির সঙ্গে তাল মিলিয়ে বন্ধ রেখেছিল। এতে লম্বা ছুটি পেয়ে চিকিৎসা, ব্যবসা, দর্শনীয় স্থান ভ্রমণ ও স্বজনদের সঙ্গে ঈদ করতে অনেকে গিয়েছিলেন ভারত। আবার অনেকে ভারত থেকে ফিরে আসছেন। এতে করে স্বাভাবিক সময়ের চেয়ে বন্দরে যাত্রীদের চাপ বেড়েছে। তাদের নিরাপত্তায় কাজ করছে বিভিন্ন প্রশাসনিক দফতরের নিরাপত্তাকর্মীরা।
খুলনার সাব্বির হোসেন জানান, তিনি একটি প্রতিষ্ঠানে চাকরি করেন। ঈদের ছুটিতে চিকিৎসার জন্য ভারত গিয়েছিলেন। যাওয়ার দিন বেনাপোল-পেট্রোপোল নো-ম্যানসল্যান্ডে লম্বা লাইনে যে ভিড় তাতে ইমিগ্রেশন সারতে প্রায় ৫ ঘণ্টা সময় দাঁড়িয়ে থাকতে হয়েছিল। ভরতের পেট্রাপোল ইমিগ্রেশনে ডেস্ক কর্মকর্তা কম থাকায় যাত্রীদের দুর্ভোগ পোহাতে হয়েছে।
ঢাকার সরকারি চাকরিজীবী আলাউদ্দিন বলেন, এবার টানা পাঁচ দিনের ছুটি পেয়ে বেড়ানোর জন্য পরিবারের সঙ্গে ভারতে গিয়েছিলাম। ছুটি শেষ হওয়ায় দেশে ফিরতে হয়েছে। তবে মঙ্গলবার (১৬ এপ্রিল) ফিরে আসার সময় বেনাপোলের বিপরীতে পেট্রাপোল ইমিগ্রেশনে সীমাহীন দুর্ভোগের শিকার হতে হয়েছে। ডেস্কের পরিমাণ বেশি থাকলেও অফিসার বসেন মাত্র তিন জন। কাজও করেন ধীরগতিতে। বাকি সব ডেস্ক খালি ছিল।
এদিকে, ভারতফেরত যাত্রীরা অভিযোগ করেন, দূরপাল্লার বাসে আসন-সংকটের কথা বলে বেশি ভাড়া আদায় করছে পরিবহন কাউন্টারগুলো। সাধারণ সময় ঢাকার ভাড়া পরিবহনভেদে জনপ্রতি ননএসি ৫৫০-৭৫০ টাকা ও এসি ১০০০-১২০০ টাকা হলেও এখন চাইছে ননএসি ৮০০ টাকা ও এসি ১৫০০-২০০০ টাকা। ফেরার পথে পকেটে টাকা কম থাকায় কিছুটা অসুবিধা হচ্ছে যাত্রীদের।
বেনাপোল আমদানি-রফতানি সমিতির সভাপতি মহসিন মিলন বলেন, যোগাযোগ ব্যবস্থা সহজ হওয়ায় প্রতিবছর বেনাপোল বন্দর দিয়ে ভারত-বাংলাদেশের মধ্যে প্রায় ২০ লাখ পাসপোর্টধারী যাত্রী যাতায়াত করেন। ভ্রমণকর বাবদ বাংলাদেশ সরকারের প্রায় ১৫০ কোটি টাকা ও ভিসা ফি বাবদ ভারত সরকারের ১৪০ কোটি টাকা আয় হয়। এছাড়া ৫দিনে ৩২ হাজার ২৮৩ যাত্রী ভারতে যাতায়াত করেছেন। তাদের কাছ থেকে সরকারের ভ্রমণ কর বাবদ আয় হয়েছে ৩ কোটি ২২ লাখ ৮৩ হাজার টাকা। সে হিসেবে বেনাপোল বন্দরে সেবার মান বাড়েনি।
বেনাপোল ইমিগ্রেশন পুলিশের উপপরিদর্শক (এসআই) শফি আহমেদ বলেন, ১০ এপ্রিল থেকে ১৪ এপ্রিল পাঁচ দিনে বেনাপোল বন্দর দিয়ে ৩২ হাজার ২৮৩ জন যাত্রী যাতায়াত করেছেন। যা অন্য সময়ে পাঁচ থেকে ছয় হাজারের মধ্যে থাকে। এবার রেকর্ডসংখ্যক যাত্রী যাতায়াত করেছেন। এর মধ্যে ১৩ এপ্রিল থেকে ১৬ এপ্রিল সকাল ১০টা পর্যন্ত প্রায় ১২ হাজার যাত্রী দেশে ফিরেছেন। ঈদ ও নববর্ষ উপলক্ষে দীর্ঘ ছুটি থাকায় তারা ভ্রমণে ও চিকিৎসার জন্য ভারতে যান। যাত্রীদের নির্বিঘ্নে দ্রুত পাসপোর্টের কার্যক্রম শেষ করতে ডেস্ক অফিসারদের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
এ ব্যাপারে ভারত-বাংলাদেশ চেম্বার অব কমার্সের পরিচালক মতিয়ার রহমান বলেন, ভারতের পেট্রাপোল অংশে বাংলাদেশি পাসপোর্টধারী যাত্রীদের দুর্ভোগ কমাতে সোমবার তিনি পেট্রাপোল ইমিগ্রেশন ওসি গৌতম কুমারের সাথে আলোচনা করেছেন। তিনি এদেশের পাসপোর্ট যাত্রীদের সকল সমস্যা সমাধানের আশ^াস দিয়েছেন।
বেনাপোল বন্দরের পরিচালক (ট্রাফিক) রেজাউল করিম বলেন, ঈদের ছুটি শেষ হওয়ায় ভারতফেরত পাসপোর্টধারী যাত্রীদের চাপ বেড়েছে। তবে দ্রুত যাতে তারা বন্দরে পাসপোর্টের কার্যক্রম শেষ করতে পারেন সেজন্য সার্বিক সহযোগিতা করা হচ্ছে।

আরও খবর

🔝