Published : Monday, 8 March, 2021 at 10:20 PM, Count : 243

স্বল্পোন্নত দেশের তালিকা থেকে গত ২৬ ফেব্রুয়ারি উন্নয়নশীল দেশে উত্তরণে জাতিসংঘের চূড়ান্ত সুপারিশ পায় বাংলাদেশ। পরদিন সংবাদ সম্মেলনে দেশবাসীকে এই সুখবর জানান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। বাংলাদেশের এই সাফল্যের প্রসঙ্গ টেনে ওয়াল স্ট্রিট জার্নালের নিবন্ধে বলা হয়েছে, গত এক দশকে প্রতিবেশী ভারত ও পাকিস্তানের তুলনায় রপ্তানি আয়ে অভাবনীয় উন্নতি দেখিয়েছে বাংলাদেশ। বিকাশমান তৈরি পোশাক শিল্প খাতের ওপর ভর করে এই সময় বাংলাদেশের রপ্তানি আয় ডলারের হিসাবে ৮০ শতাংশ বেড়েছে। অন্যদিকে একই সময়ে ভারত ও পাকিস্তানের রপ্তানি কমেছে।
‘বাংলাদেশ ইজ বিকামিং সাউথ এশিয়াস ইকোনমিক বুল কেইস’ শিরোনামে ওয়াল স্ট্রিট জার্নালের হংকংভিত্তিক আর্থিক বাজার বিশ্লেষক মাইক বার্ডের লেখা ওই নিবন্ধে বাংলাদেশের এই অগ্রযাত্রাকে দক্ষিণ কোরিয়া, চীন ও ভিয়েতনামের সঙ্গে তুলনা করা হয়েছে। বার্ড লিখেছেন, বাংলাদেশের উন্নয়নের এই সাফল্যের মডেলের সঙ্গে দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার এসব উদীয়মান অর্থনীতির সাফল্যের বিভিন্ন পর্যায়ের সঙ্গে মিল রয়েছে। উন্নয়নশীল দেশের সুপারিশ অর্জনের পেছনে এদেশের বিশাল তরুণ জনগোষ্ঠী, মজুরির ক্ষেত্রে ধারাবাহিক প্রতিযোগিতামূলক সুবিধা এবং দক্ষিণ এশিয়ার অন্যান্য দেশের তুলনায় নারী-শ্রমগোষ্ঠীর দৃঢ় ও বর্ধনশীল অবস্থানকে তুলে ধরা হয়েছে ওই নিবন্ধে। তবে ভিয়েতনাম বা কম্বোডিয়ার তুলানায় বাংলাদেশ যে এখনও যথেষ্ট পিছিয়ে, সে তথ্যও উল্লেখ করা হয়েছে। গত এক দশকে বাংলাদেশের তুলনায় এ দুই দেশ রপ্তানি থেকে যথাক্রমে তিনগুণ ও দ্বিগুণ আয় করেছে। এছাড়া তৈরি পোশাক শিল্প খাতের ওপর অতিনির্ভরতা এবং হার্ভার্ডের করা ‘ইকনোমিক কমপ্লেক্সিটি’ সূচকে বাংলাদেশের পিছিয়ে থাকার বিষয়টিও বাংলাদেশের জন্য চ্যালেঞ্জ হিসেবে দেখানো হয়েছে নিবন্ধে। এসব ছাপিয়ে উন্নয়নশীল দেশের কাতারে উন্নীত হওয়ার সাফল্য বাংলাদেশের জন্য ভবিষ্যতে আরও সাফল্য অর্জনের ইঙ্গিত বহন করছে বলেই মন্তব্য করেছে ওয়াল স্ট্রিট জার্নাল।
বাংলাদেশ এমন একটি সময়ে স্বল্পোন্নত দেশ থেকে উত্তরণের জন্য চূড়ান্ত সুপারিশ পেয়েছে, যখন জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকী এবং স্বাধীনতার ৫০ বছর পূর্তি উদযাপন করছে জাতি। স্বাধীনতার স্বপ্নকে, জাতির পিতার স্বপ্নকে বাস্তবে রূপ দেয়ার এই মহার্ঘক্ষণে আমরা এদেশের শ্রমজীবী মেহনতি মানুষের প্রতি কৃতজ্ঞ। স্বাধীনতা যুদ্ধে নেতৃত্বদানকারী দল বাংলাদেশের রাষ্ট্র ক্ষমতায় থেকে এই অর্জনের গতিকে ত্বরান্বিত করেছে বলে আমরা এই সরকারের নিকটও কৃতজ্ঞ। বাংলাদেশকে এখন আর কেউ দরিদ্র রাষ্ট্র বলে হেয় করতে পারবে না বহির্বিশ্বে।