Published : Thursday, 23 June, 2022 at 9:41 PM, Count : 148

যশোরের আশপাশ এলাকায় চিংড়িতে অপদ্রব্য পুশ করা বন্ধ হচ্ছে না। যশোর হয়ে দেশের বিভিন্ন এলাকায় যাওয়ার সময় একের পর এক র্যাবের হাতে জব্দ হচ্ছে জেলি পুশ করা চিংড়ি। যা মানব দেহের জন্য মারাত্মক ক্ষতিকর। সর্বশেষ, বুধবার রাতে র্যাবের হাতে জেলি পুশ করা চিংড়ি জব্দ হয়েছে। এর আগে গত ২০ মে দু’ মেট্রিকটন ও ৩ জুন এক ট্রাক জেলি পুশ করা চিংড়ি জব্দ করে র্যাব। ধারাবাহিকভাবে চিংড়িতে জেলি পুশ করায় যশোরসহ আশপাশ এলাকার চিংড়ি ব্যবসায় ধস নামতে পারে বলে সংশ্লিষ্টরা মনে করছেন। বিশেষ করে অপদ্রব্য পুশ করা চিংড়ি বিদেশে পাঠানো ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে পড়বে। ফলে, এখনই কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ করতে হবে। তা না হলে খুলনা,সাতক্ষীরা ও যশোরাঞ্চলে চিংড়ি চাষ হুমকির মুখে পড়বে।
বুধবার রাতে যশোরের রাজারহাট এলাকায় অভিযান চালিয়ে একটি মাছের ট্রাক থেকে জেলি পুশ করা চিংড়ি জব্দ করে র্যাব। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন র্যাব-৬ যশোরের কোম্পানি কমান্ডার নাজিউর রহমান। ওইসময় সদর উপজেলা নির্বাহী অফিসার অনুপ দাশ ও জেলা মৎস্য কর্মকর্তা ফিরোজ আহাম্মেদ উপস্থিত ছিলেন। তাদের উপস্থিতিতে অপদ্রব্য পুশ করা চিংড়ি ধ্বংস করা হয়। একইসাথে জেলি পুশ করা চিংড়ির মালিক যশোরের মণিরামপুর উপজেলার কপালিয়া গ্রামের নুরুজ্জামানের ছেলে হোসাইন সরদারকে ৩০ হাজার টাকা জরিমানা করে ভ্রাম্যমাণ আদালত।
র্যাব যশোরের কোম্পানি কমান্ডার লেঃ নাজিউর রহমান জানান, গোপন সংবাদের ভিত্তিতে তারা জানতে পারেন একটি ট্রাকে জেলি পুশ করা চিংড়ি মণিরামপুর হয়ে যশোরের দিকে আসছে। খবর পেয়ে তাৎক্ষণিক তারা রাজারহাট এলাকায় অবস্থান নেন। এক পর্যায়ে ট্রাক ভর্তি মাছ (ঢাকা মেট্রো-ড-১৪-৭৯৫৭) ঘটনাস্থলে পৌঁছালে র্যাব তল্লাশি চালায়। তখন ওই ট্রাকের মধ্যে চারটি কর্কসিটে থাকা চিংড়িতে জেলি পুশ করার প্রমাণ পাওয়া যায়।
এ বিষয়ে জানা যায়, মূলত সাতক্ষীরা, খুলনা, বাগেরহাটসহ আশপাশের কয়েকটি এলাকায় জেলি পুশ করা চিংড়ি বিক্রির সিন্ডিকেট গড়ে উঠেছে। এই জেলি সাধারণত দু’ ধরনের হয়ে থাকে। একটি হচ্ছে পলিমার জেলি, অপরটি সিলিকা জেল। যা সিরিঞ্জের মাধ্যমে পুশ করা হয়। জেলি যুক্ত চিংড়ি রান্নার পরও কেমিক্যাল থেকে যায়।
এর আগে গত ২০ মে র্যাব সদস্যরা যশোরের বাহাদুরপুর এলাকায় অভিযান চালিয়ে তিনটি ট্রাকে থাকা দুই মেট্রিকটন সিলিকন জেল পুশ করা চিংড়ি উদ্ধার করে। এ সময় ২ লাখ ৫০ হাজার টাকা জরিমানা আদায় করা হয়।
গত ৩ জুন যশোর-ঝিকরগাছা মহাসড়কে অভিযান চালিয়ে র্যাব ট্রাকসহ এই চিংড়ি জব্দ করে। এ ঘটনায় ৫০ হাজার টাকা করে জরিমানা করা হয়।
এ বিষয়ে যশোর জেলা মৎস্য কর্মকর্তা ফিরোজ আহাম্মেদ বলেন, যশোরে জেলি পুশ করা হয় না। খুলনা, সাতক্ষীরা ও বাগেরহাট এলাকায় চিংড়ি উৎপাদন হয়। সেখানেই পুশ করা হয় নানা ধরনের অপদ্রব্য। যশোর হয়ে যাতে অপদ্রব্য মিশ্রিত চিংড়ি দেশের কোথাও যেতে না পারে সেদিকে কঠোর নজরদারি রয়েছে। গত একমাসে তিনদফায় জেলি পুশ করা চিংড়ি ধ্বংস করা হয়েছে। এই অভিযান অব্যাহত থাকবে।